‘মানবিক বিবেচনায় রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া হয়েছে’


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মানবিক দিক বিবেচনা করে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালংয়ে নিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে এক জনসভায় তিনি এ কথা বলেন। এ সময় মিয়ানমারকে তাদের নাগরিকদের ফেরত নেওয়ার আহ্বানও জানান প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যখন আমাদের ওপর হামলা করেছিল, সে সময় আমরা ঘরবাড়ি ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলাম। এক সময় হানাদার বাহিনীরা আমাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়েছিল এবং গণহারে হত্যা করেছিল। ঠিক একইভাবে মিয়ানমার সরকার রাখাইন রাজ্যে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের ওপর দমন, নিপীড়ন শুরু করেছে। সেখানে তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এ কারণে লাখ লাখ রোহিঙ্গা আমাদের দেশে আশ্রয় নিয়েছে। আমরা তাদেরকে সাময়িক সময়ের জন্য আশ্রয় দিয়েছি। আমরা মিয়ানমার সরকারকে অনুরোধ করছি, দমন ও নিপীড়ন বন্ধ করে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নেওয়া হোক।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের খাদ্য দেওয়া হচ্ছে। আমি রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে আহ্বান জানাচ্ছি। তবে প্রতিবেশী দেশ হিসেবে আমাদের যা করার দরকার আমরা সেটি করব।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারে যেভাবে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে তাতে কি তাদের বিবেককে নাড়া দেয় না? একজনের ভুলে এভাবে লাখ লাখ মানুষ ঘরহারা হচ্ছে। আমরা শান্তি চাই।
তিনি বলেন, আমরা ১৬ কোটি মানুষের দেশ। সবার খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছি। সেখানে আরো ২/৫/৭ লাখ মানুষকেও খেতে দিতে পারব।
এ সময় তিনি স্থানীয়দের উদ্দেশ্যে বলেন, এখন যারা যুবক তারা হয়তো মুক্তিযুদ্ধ দেখেননি। কিন্তু আমরা দেখেছি। তাই রোহিঙ্গাদের যেন কোনো কষ্ট না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
তিনি প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়ে বলেন, আমি জেনেছি যারা আশ্রয় নিতে এসেছেন তাদের অনেকেই অসুস্থ। তাদের দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হোক।
এ সময় রোহিঙ্গাদের যেন কোনো কষ্ট না হয় এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যেন ভালো থাকে সেজন্য প্রশাসনকে সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, বেসরকারি সংস্থা বা অন্য কোনো সংগঠন রোহিঙ্গাদের ত্রাণ বা সাহায্য সহযোগিতা করতে চাইলে তা জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে করতে হবে।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের সুযোগ নিয়ে কেউ যেন কোনো ধরনের বাণিজ্য করতে না পারে সে ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।
জনসভায় ভাষণ শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন। এরপর প্রধানমন্ত্রীর কক্সবাজারে স্থানীয় প্রশাসনের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৫ আগস্ট থেকে মিয়ানমারে রাখাইন প্রদেশে সেনাবাহিনী দমন-নিপীড়ন শুরু করলে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশ প্রবেশ করে। যার সংখ্যা বর্তমানে তিন লাখের বেশি।

এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন