মাজার লুট : র‌্যাব কর্মকর্তাসহ ৭ জনের বিচার শুরু

চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার তালসরা দরবার শরিফের টাকা লুটের ঘটনায় করা মামলায় সাবেক র‌্যাব কর্মকর্তাসহ ৭ জনের বিচার শুরু হয়েছে।

এই মামলার অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে আগামী ২৩ অক্টােবর। মঙ্গলবার চট্টগ্রামের পঞ্চম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ নুরে আলম ভুঁইয়ার আদালতে অভিযোগপত্রভুক্ত সাত আসামির সবার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হয়।

অভিযুক্তরা হলেন- র‌্যাব-৭ এর তৎকালীন অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (চাকরিচ্যুত) জুলফিকার আলী মজুমদার, ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট (বাধ্যতামূলক ছুটিতে) শেখ মাহমুদুল হাসান, র‌্যাব-৭ এর সাবেক ডিএডি আবুল বাশার, এসআই তরুণ কুমার বসু, র‌্যাবের তিন সোর্স দিদারুল আলম ওরফে দিদার, আনোয়ার মিয়া ও মানব বড়ুয়া।

বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি আ ক ম সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আদালত সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ২৩ অক্টোবর দিন ধার্য করেছে।

এদিকে, বাদীপক্ষের আইনজীবী সাহাবুদ্দিন আহমে বলেন, আসামিরা মামলা থেকে অব্যাহতির আবেদন করেছিলেন। আদালত তা নামঞ্জুর করে দণ্ডবিধির ৩৯৫ ও ৩৯৭ ধারায় (দস্যুতা ও ডাকাতি) অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, মঙ্গলবার অভিযোগ গঠনের সময় জামিনে থাকা সাত আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। দরবারের অর্থ লুটের অভিযোগের পর র‌্যাব সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল।

পিপি সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, এটি একটি চাঞ্চল্যকর মামলা। এলিট ফোর্স র‌্যাবের উপর জাতি কত আশা করে। অথচ এরা দরবার শরিফে ঢুকে সেখানকার লোকজনকে আটকে রেখে দরবার ও মসজিদ সংস্কারের জন্য মানুষের দেয়া দুই কোটি টাকা লুণ্ঠন করে।

২০১১ সালের ৪ নভেম্বর রাতে তালসরা দরবারে তল্লাশির নামে ২ কোটি ৭ হাজার টাকা লুটের অভিযোগে ২০১২ সালের ১৩ মার্চ আনোয়ারা থানায় র‌্যাব সদস্যসহ ১২ জনেরর বিরুদ্ধে মামলা হয়।

দরবারের পীরের গাড়িচালক মো. ইদ্রিসের করা মামলার অভিযোগে বলা হয়, জুলফিকার মজুমদারের নেতৃত্বে র‌্যাবের একটি দল অভিযান চালিয়ে দরবার শরিফে রাখা আলমারি ভেঙে দুই কোটি সাত হাজার টাকা নিয়ে যায়।

ওই দিন দরবার শরিফ থেকে মিয়ানমারের পাঁচ নাগরিককে র‌্যাব সদস্যরা আটক করে। তাদের থানায় হস্তান্তর করা হলেও টাকার বিষয়ে কোনো কিছুই উল্লেখ করেনি র‌্যাব।

এ ঘটনা পরে জানাজানির পর র‌্যাব সদর দফতর থেকে করা তদন্ত কমিটির প্রাথমিক তদন্তে টাকা লুটের ঘটনায় র‌্যাব সদস্যদের জড়িত থাকার বিষয়টি ধরা পড়ে।

পরে ২০১২ সালের মে মাসের প্রথম সপ্তাহে ঢাকার মগবাজার থেকে গ্রেফতার হন জুলফিকার। তবে ২১ জুন উচ্চ আদালত থেকে তিনি জামিন নিয়ে মুক্ত হন।

এরপর ২০১২ সালের ২৬ জুলাই জুলফিকারসহ সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন আনোয়ারা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আবদুস সামাদ।

২০১২ সালেই মামলা বাতিল চেয়ে হাই কোর্টে আবেদন করেন জুলফিকার ও মাহমুদুল হাসান। ২০১৫ সালের ১১ মার্চ জুলফিকারের করা রুল আবেদনটি হাই কোর্টে বাতিল হয়ে যায়।

সর্বশেষ গত বছরের ১৮ অগাস্ট মাহমুদুল হাসানের পক্ষে আবেদনটি না চালানোর কথা জানানো হলে সেটিও বাতিল করে দেয় হাই কোর্ট।