যশোরের মণিরামপুরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাবার হোটেলে কাভার্ডভ্যান, নিহত-৫

যশোর-সাতক্ষীরা সড়কের মণিরামপুর বেগারীতলা নামক বাজারে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় বাবা ছেলেসহ ৫ জন নিহত হয়েছে।

শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) সকাল ৭টার দিকে ওই বাজারে আবু তালেবের খাবারের হোটেলে নাস্তা খাওয়ার সময় তাদের মৃত্যু হয়। এ সময় হোটেল মালিক আবু তালেব গুরুতর আহত হয়। ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ জনতা প্রায় ৩ ঘন্টা সড়কে যানচলাচল বন্ধ করে দেয়।

পুলিশ ও স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানাযায়, ঘটনার দিন সকাল ৭টার দিকে যশোর থেকে সাতক্ষীরাগামী ঢাকা মেট্রো- ট-২০-১৭৫১ নম্বরধারী একটি কাভার্ডভ্যান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ওই খাবারের হোটেলের ভেতরে ঢুকে যায়। এ সময় হোটেলের ভিতরে থাকা ও খাবার খাওয়া অবস্থায় স্থানীয় টুনিয়াঘরা গ্রামের হাবিবুর রহমান পঁচা (৫৫) তার ছেলে তৌহিদুর রহমান (৮), শামসুর রহমান (৬২) ও তার পুতাছেলে তহিদুল ইসলাম (২৫) এবং জয়পুর গ্রামের জিয়াউর রহমান (৩৫) ঘটনাস্থলেই নিহত হয়।

মণিরামপুর ফায়ার সার্ভিস স্টেশন অফিসার প্রনব বিশ্বাস জানান, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের সাথে নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে কাভার্ডভ্যানের চাকায় পিষ্ট হওয়া দুইজন ও হোটেলের ভিতর পড়ে থাকা তিনজন মোট পাঁচ জনের মরাদেহ উদ্ধার করা হয়। এ সময় হোটেল মালিক আবু তালেবকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।

ঘটনার পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কবীর হোসেন পলাশ, সহকারী ভূমি কমিশনার আলী হাসান এবং থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ মনিরুজ্জামান ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং যান চলাচল স্বাভাবিক করেন।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক জানান- পাঁচজনের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনার পর এলাকার জনগণের চাপে যশোর-সাতক্ষীরা সড়কে প্রায় ৩ ঘন্টা যানচলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। পরে প্রশাসনের লোকজন পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণ করে যান চলাচলা স্বাভাবিক করে।

চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক বলেন- ঘাতক কাভার্ড ভ্যানটা ৫ জনের জীবন কেড়ে নিয়েছে। ভ্যানের ধাক্কায় ৬ থেকে ৮টা দোকান ভেঙে অন্তত ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। আমরা এলাকাবাসি চালকের উপযুক্ত শাস্তি চাই।

মণিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ মনিরুজ্জামান বলেন- কাভার্ড ভ্যানটি জব্দ করা হলেও চালক ও হেলপার পালিয়ে গেছে। লাশগুলো উদ্ধার করে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

তবে, মর্মান্তিক এ সড়ক দুর্ঘটনায় এলাকায় পিতা-পুত্রসহ পাঁচজনের অকাল মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্বজনদের বুকফাটা আহাজারিতে এলাকার আকাশ বাতাশ ভারি হয়ে উঠেছে।