যুক্তরাষ্ট্রসহ তিন মিত্র দেশের নতুন নিষেধাজ্ঞা মিয়ানমার জান্তা সরকারের ওপর
যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশ কানাডা, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়া মিয়ানমারের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। সেনা অভ্যুত্থানের পর রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের দুই বছর পর দেশটির সামরিক শাসকদের ওপর চাপ প্রয়োগে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেন, নিষেধাজ্ঞাগুলো ছয় ব্যক্তি ও তিনটি প্রতিষ্ঠানের ওপর দেওয়া হয়েছে। এসব ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান জান্তা সরকারকে জ্বালানি খাতের প্রসার, বিমানবাহিনীর ঊর্ধ্বতন নেতৃত্ব তৈরিসহ রাজস্ব ও অস্ত্র সংগ্রহে সাহায্য করেছে। তিনি আরো জানান, দেশটির কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন, খনি কোম্পানি, জ্বালানিবিষয়ক কর্মকর্তা ও সাবেক-বর্তমান কয়েক জন সেনা কর্মকর্তার ওপর এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। তাছাড়া প্রথম বারের মতো মিয়ানমার অয়েল অ্যান্ড গ্যাস এন্টারপ্রাইজের (এমওজিই) কর্মকর্তাদের ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জান্তা সরকার যে নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তা গভীরভাবে ত্রুটিপূর্ণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমারে অবাধ, নিরেপক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে—এমন আকাঙ্ক্ষায় দৃঢ় অবস্থানে রয়েছে।
জানা যায়, মিয়ানমারের জান্তা সরকার এ বছরের আগস্ট মাসের মধ্যে দেশটিতে নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিন্তু নির্বাচনের জন্য যোগ্য হতে রাজনৈতিক দলগুলোর সামনে কঠোর সব শর্ত বেঁধে দেওয়া হয়েছে। সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—রাজনীতিতে বিপুলসংখ্যক সেনাসদস্য যুক্ত করা, যাতে ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ জান্তা সরকারের হাতেই থাকে এবং বিরোধীরা চাপের মধ্যে থাকে। যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্র দেশগুলোর দাবি, জান্তা সরকার যেসব নিয়ম বেঁধে দিয়েছে, তার সবই সাবেক ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্মতাদের নিয়ে গঠিত ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির পক্ষে গেছে। ২০১৫ ও ২০২০ সালের নির্বাচনে এই দলকে হারিয়েই ক্ষমতায় গিয়েছিল অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি)।
মিয়ানমারের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো থেকে জানা যায়, জান্তা সরকার এখন জরুরি শাসনের মেয়াদ বাড়াবে কি না, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করছে। এছাড়া সাধারণ নির্বাচনের প্রস্তুতির জন্য একটি অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে কি না, তা নিয়েও তাদের কথাবার্তা চলছে। আর নতুন নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে খুব অল্প সময়ের মধ্যে তাদের মন্তব্য পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক বাহিনী মিয়ানমারের নির্বাচিত সরকার উৎখাত করার সময় নোবেল বিজয়ী সু চি গ্রেফতার হন। সে সময় জান্তা সরকার ক্ষমতা দখল করলেও দেশটির সিংহভাগ জনগণ তা মেনে নেয়নি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন