যেভাবে হামলা করা হয় ড. কামালের গাড়িবহরে
মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানিয়ে ফেরার পথে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামালের গাড়িবহরে অতর্কিত হামলা চালানো হয়েছে। শুক্রবার সকাল ১০টায় এ ঘটনা ঘটে।
হামলায় বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এ হামলার জন্য স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগকে দায়ী করেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতারা।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী জানান, বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানানো শেষে বের হওয়ার সময় অনেক মানুষের জটলা দেখতে পাই। আমি আগে নিরাপদে বের হয়ে গেলেও পেছনে ড. কামাল হোসেন ও আ স ম রবের গাড়ি হামলার শিকার হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, স্মৃতিসৌধের প্রধান ফটকে ড. কামাল হোসেনের গাড়ি রাখা ছিল। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি যখন গাড়িতে বসতে যাচ্ছেন, তখন আচমকা ওই গাড়ির গ্লাস ভাঙচুর করা হয়। ড. কামালের পেছন পেছন যারা হেঁটে আসছিলেন, তাদেরও মারধর করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, হামলার ছবি তুলতে গিয়ে কয়েকজন ফটো সাংবাদিকও আহত হন।
ঘটনাস্থলে ছিলেন এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সকাল সাড়ে ৯টার পর ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ঐক্যফ্রন্টের নেতারা শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন জাসদের আ স ম আবদুর রব, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, গণফোরাম নেতা ড. রেজা কিবরিয়া প্রমুখ।
গণফোরামের মিডিয়া কো-অর্ডিনেটর লতিফুল বারী হামীমের অভিযোগ, ড. কামাল, আ স ম রবসহ ঐক্যফ্রন্ট নেতারা বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বের হওয়ার সময় হামলার শিকার হন। ওই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আসলামুল হকের সমর্থকরা তাদের গাড়িবহরে হামলা চালায়।
তিনি জানান, হামলায় কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। কামাল হোসেনের গাড়ি আগে বের হয়। তার পেছনের গাড়িতেই ছিলেন আ স ম আবদুর রব। হামলার ঘটনায় আ স ম আবদুর রবের গাড়ির চালক আহত হয়েছেন।
গণফোরাম নেতা জগলুল হায়দারের গাড়িসহ আরও কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয় এ সময়।
হামলার জন্য আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীদের দায়ী করেন লতিফুল বারী। তিনি বলেন, হামলায় কামাল হোসেনের গাড়ি খুব বেশি ক্ষতিগ্রস্ত না হলেও বহরের পেছনে থাকা ঐক্যফ্রন্ট নেতা আ স ম আবদুর রব, জগলুল হায়দার আফ্রিক, ঢাকা-১৪ আসনে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী সিদ্দিক সাজুর গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ১০-১২ জন রক্তাক্ত জখম হয়েছেন।
হামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান।
শায়রুল কবির খান যুগান্তরকে জানান, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা আজ সকালে মিরপুরে বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে যান। তারা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো শেষে বের হওয়ার পর গাড়িতে ওঠা মাত্র অতর্কিত হামলা চালায় একদল যুবক।
তারা ইটপাটকেল ছোড়ে ও লাঠিসোটা নিযে হামলা করে। ঐক্যফ্রন্ট নেতাকর্মীদের কিলঘুষি ও লাথি মারতে থাকে। এতে বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বেশ কয়েকজন আহত হন।
হামলায় আহত ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদুল ইসলাম জানান, স্বেচ্ছাসেবক লীগ-ছাত্রলীগ-যুবলীগের ৫০-৬০ জন ছেলে হঠাৎ বিএনপিসহ জাতীয় নেতাদের গাড়িবহরে হামলা চালায়। এতে অন্তত ২০ জন আহত হন। অনেকের মাথা ফেটে গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা ঘটনার বিবরণে জানান, গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল সৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে প্রধান গেট দিয়ে বের হচ্ছিলেন। এ সময় তার গাড়িবহরে লাঠিসোটা নিয়ে অতর্কিত হামলা হয়। এ সময় পেছনে থাকা নেতাকর্মীরা কামালকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে তাদেরও বেধড়ক পেটানো হয়। এতে নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলে বেশ কয়েকটি প্রাইভেটকার ভাঙচুর করে হামলাকারীরা। এতে কয়েকজন মাথায়সহ রক্তাক্ত জখম হন। গুরুতর আহত কয়েকজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
দারুস সালাম থানার ওসি সেলিমুজ্জামান এ বিষয়ে বলেন, সামান্য হইচই শুনে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি সেখানে কেউ নেই। হামলার বিষয়ে কেউ আমাদের কাছে অভিযোগও করেনি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন