রংপুরের পীরগঞ্জে গ্রাম্য সালিশে গৃহবধুর ইজ্জতের মূল্য ৪৯ হাজার টাকা
রংপুরের পীরগঞ্জে গ্রাম্য সালিশে পুলিশের উপস্থিতিতে এক গৃহবধুর ইজ্জতের মূল্য ৪৯ হাজার টাকা নিধার্রণ করে ফঁাকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। রোববার (২৩ জুলাই) দিনগত গভীর রাতে উপজেলার মদনখালী ইউনিয়নের হাসারপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ভূক্তভোগী পরিবার সূত্র জানায়, হাসারপাড়া গ্রামের হতদরিদ্র ভ্যান চালক আশরাফুল ইসলামের কন্যা’র প্রায় দেড় বছর পূর্বে পাশ্ববর্তী বড়আলমপুর গ্রামের বাচ্চা মিয়ার পুত্র সুজন মিয়ার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের বছর না পেরুতেই পারিবারিক কলহের জেরে ঐ গৃহবধু বাবা আশরাফুলের বাড়িতে ফিরে আসে এবং স্থানীয় এক ক্যাপ নির্মাণ প্রতিষ্ঠানে কাজ নেয়।
ওই গৃহবধু তার কর্মস্থলে যাতায়াতের সময় লোলুপ দৃষ্টি পড়ে একই গ্রামের (হাসারপাড়া) প্রভাবশালী আবুল কাশেম মিয়ার পুত্র এক সন্তানের জনক মাহাবুব মিয়ার। মাহাবুব সুকৌশলে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ওই গৃহবুধুর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। প্রায় ৭মাস ধরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তার নিজ বাড়িসহ বিভিন্ন স্থানে দৌহিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। সম্প্রতি ওই গৃহবধু মাহবুবকে বিয়ের করার চাপ দিলে মাহবুব বিয়ে করতে টালবাহনা করতে থাকে। এক পর্যায়ে ঘটনাটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে গত ২৩ জুলাই দুপুরে ওই গৃহবধুসহ তার বাবা আশরাফুল ও মা সাহেরন নেছা পীরগঞ্জ থানায় উপস্থিত হয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগের ভিত্তিতে এসআই জামিউল তদন্ত করতে যান এবং উভয় পক্ষকে মিমাংসার প্রস্তাব দেন। এরই প্রেক্ষিতে ঐদিনগত গভীর রাতে স্থানীয় তাজমল হোসেনের বাড়িতে এসআই জামিউলসহ স্থানীয় মাতব্বর আব্দুর রহিম, মনোয়ার ও আফজাল হোসেন নির্যাতিত পরিবারের সঙ্গে মিমাংসা বৈঠকে বসেন। বৈঠকে ওই গৃহবধুর ইজ্জতের মূল্য ৫০হাজার টাকা নির্ধারণ করে অভিযুক্ত মাহাবুবকে মামলায় না জড়ানোর শর্তে ফঁাকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর গ্রহণ করা হয় এবং নির্যাতিত পরিবারের হাতে ৪৯ হাজার টাকা তুলে দেন এসআই জামিউল। মিমাংসা বৈঠকে এসআই জামিউল উপস্থিত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অভিযুক্ত মাহাবুব মিয়ার বাবা আব্দুল কাশেম মিয়া, গৃহবধুসহ তার বড়ভাই শাহিনুর, মা সাহেরন বিবি, মাতব্বর রহিম মিয়া (ভিডিও সংরক্ষিত)। যদিও ওই বৈঠকের শুরু থেকেই মিমাংসার বিরোধীতা করে আসছিলেন গৃহবধুর বড়ভাই শাহিনুর ইসলাম।
এ বিষয়ে এসআই জামিউলের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি অভিযোগ ও মিমাংসা বৈঠকে উপস্থিত থাকার কথা অস্বীকার করেন। এ ব্যাপারে পীরগঞ্জ থানার অফিসার্স ইনচার্জ সরেস চন্দ্র জানায়, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করা হলেও বাদী মামলা করতে অস্বীকৃতি জানানোয় মামলা হয়নি। বাদী এখনও ইচ্ছা করলে মামলা করতে পারেন। মিমাংসার বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন