শেরপুর জেলা হাসপাতালে সিঁড়ি বেয়ে উঠতে গিয়ে ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বার মৃত্যু!
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2021/08/received_240800821262145_2.jpeg)
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2025/02/475351977_1256003665483861_2959209934144112011_n.jpg)
লিফট নষ্ট থাকায় শেরপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা হাসপাতালের সিঁড়ি বেয়ে ওঠা-নামা করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে রোজিনা(৩০) নামে ৭ মাসের এক অন্তঃসত্ত্বার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও কোভিড-১৯ নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। কর্তৃপক্ষ বলছে,রোজিনার শ্বাসকষ্টে মৃত্যু হয়েছে। ২৯ আগস্ট (রবিবার) দুপুর ১২টার দিকে ওই অন্তঃসত্ত্বা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।জানা গেছে, রোজিনা শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার নন্নী ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর গ্রামের সালামের স্ত্রী।
রোজিনার স্বজনরা জানান, গত ২৮আগষ্ট (শনিবার) সকালে রক্তক্ষরণজনিত সমস্যা নিয়ে শেরপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয় সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা রোজিনাকে। হাসপাতালের ২টি লিফটই নষ্ট থাকায় ভর্তির পর তাকে সিঁড়ি দিয়ে হাঁটিয়ে পাঁচতলার গাইনি ওয়ার্ডে নেওয়া হয়। কিছুক্ষণ পর কর্তব্যরত নার্স রোজিনার আলট্রাসনোগ্রাম ও রক্ত পরীক্ষার কথা বলেন। এজন্য আবারও তাকে পাঁচতলা থেকে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামিয়ে পার্শ্ববর্তী ক্লিনিকে নিতে হয়।
টেস্ট করা শেষে পুনরায় পাঁচতলায় সিঁড়ি বেয়ে ওঠার পর বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েন রোজিনা। পরদিন রবিবার আবারও তাকে করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দিতে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামতে হয়। এরপর সেখানে আরও অসুস্থ হয়ে রোজিনা মারা যান।
রোজিনার স্বামী সালাম বলেন, শনিবার সিঁড়ি বেয়ে পাঁচতলায় ওঠার পর তার স্ত্রী বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে। রবিবার সকালে নার্স তাকে দুটি ইনজেকশন কিনে আনতে বলেন। সে নিচে থেকে ইনজেকশন কিনে নার্সকে দেয়।পর তার স্ত্রীর করোনা রিপোর্ট ছাড়া কোনো সেবা দেওয়া হবে না বলে জানান কর্তব্যরত নার্সরা। এ সময় তার স্ত্রী বলে ওঠে, ‘পাঁচতলা সিঁড়ি ভেঙে নিচে গেলে আমি আর বাঁচবো না’।
সালাম আরও বলেন, স্ত্রীর করোনা নমুনা ওপরে গিয়ে নেওয়ার জন্য কর্তব্যরতদের অনুরোধ জানালেও তারা তা কানে তোলেননি। পরে ওইদিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে করোনা পরীক্ষার জন্য স্ত্রীকে নিচে নামায়। করোনার নমুনা দেয়ার পরই রোজিনার অবস্থার অবনতি হয়। নিচতলায় অক্সিজেন দেওয়ার চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি। কিছুক্ষণের মধ্যেই রোজিনা মারা যায়।
এ ঘটনায় কারও কোনো গাফিলতি ও অব্যবস্থাপনা থাকলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন নন্নী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান রিটন।
এদিকে, করোনার নমুনা পরীক্ষায় রোজিনার রিপোর্ট পজেটিভ এলেও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের মৃতের তালিকায় তার নাম এখনো দেখানো হয়নি।
এ বিষয়ে সিভিল সার্জন ডা. একেএম আনোয়ারুর রউফ বলেন, লিফট নষ্ট থাকায় হার্টের রোগী ও শ্বাসকষ্টের রোগীদের ওঠানামা করতে কষ্ট হয়েছে। লিফট নষ্ট থাকায় সাধারণ রোগী, নার্স ও চিকিৎসকদেরও ভোগান্তি হয়েছে। একটি লিফট আপাতত সচল করা গেছে। প্রসূতির মৃত্যুর বিষয়ে তিনি বলেন, ওই নারীর শ্বাসকষ্টে মৃত্যু হয়েছে। নমুনা পরীক্ষায় তার করোনা পজিটিভ এসেছে। ৩১আগষ্টের মৃতের তালিকায় তাকে উল্লেখ করা হবে।
এ বিষয়ে শেরপুর গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী বলেন, আমরা লোকবল নিয়োগের মাধ্যমে স্থায়ীভাবে এই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি। চলতি অর্থবছরেই এ সমস্যার সমাধান হবে আশা করছি।
এর আগে, গত ২৮ আগস্ট শেরপুর সদর হাসপাতালের লিফট বিকল থাকায় সিঁড়ি বেয়ে উঠতে গিয়ে সিঁড়িতেই সন্তান প্রসব করেন এক নারী। এটি শেরপুরে আলোচনার ঝড় তোলে।
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2024/12/469719549_122234398946008134_2936380767280646127_n.jpg)
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন