সব এজেন্সির জন্য উন্মুক্ত হচ্ছে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার
মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বাংলাদেশের সব এজেন্সির জন্য উন্মুক্ত করতে শিগগিরই আলোচনায় বসছে সে দেশের সরকার। এ আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন আধুনিক মালয়েশিয়ার স্বপ্নদ্রষ্টা ও প্রধানমন্ত্রী ডা. মাহাথির মোহাম্মদ। একই সঙ্গে দুদেশের ব্যবসায়ীদের কাজ করতে গঠন হচ্ছে পলিসিমুক্ত স্বাধীন কমিটি।
মঙ্গলবার স্থানীয় সময় দুপুর ১২টায় সংসদ ভবনে প্রধানমন্ত্রী মাহাথিরের সভাপতিত্বে এ সংক্রান্ত সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পলিসিমুক্ত স্বাধীন কমিটির মাধ্যমে বিদেশি শ্রমিকব্যবস্থা পরিচালিত হবে। সার্ভিস নীতিমালা ও বৈদেশিক কর্মীদের জন্য একটি স্বাধীন কমিটি গঠন করা হবে। কমিটিতে সরকারি শীর্ষ কর্মকর্তা, সাবেক বিচারক ও সচিবরা থাকবেন। তারা শ্রমবাজারের তথ্য বিশ্লেষণ করবেন।
তিনি আরও বলেন, বিদেশি শ্রমিকদের সমস্যা আমাদেরও সমস্যা। মালয়েশিয়ায় লাখ লাখ শ্রমিক আসেন। অনেকেই অনুমতি নিয়ে আসেন না। এ কারণে বিদেশীকর্মীদের পরিচালনার জন্য আমাদের একটি কমিটি গঠন করা দরকার। ওই কমিটির দায়িত্ব হবে সুষ্ঠুভাবে শ্রমিক পরিচালনা করা এবং তারা বিষয়টি তদারকিও করবে।
মাহাথির বলেন, বাংলাদেশের ১০টি এজেন্সির মাধ্যমে এদেশে শ্রমিক আসে। এজেন্সিগুলো শ্রমিকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে। এ কারণে বাংলাদেশিরা হতাশার মধ্যে দিন কাটান। এ অবস্থা চলতে দেয়া যায় না। কারণ এতে মালয়েশিয়ার সুনামও ক্ষুণ্ন হয়। এ কারণে এখনই উদ্যোগ নিতে হবে যাতে এ দেশে এসে বিদেশি শ্রমিকরা সঠিকভাবে চলতে পারেন, কোনো প্রকার হয়রানির শিকার না হন।
চলমান শ্রমবাজার নিয়ন্ত্রণে ১০ এজেন্সির দুর্নীতির বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দশ এজেন্সিসহ আরও যারা সংশ্লিষ্ট রয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী ওয়ান আজিজা ইসমাইল ও মানবসম্পদমন্ত্রী এম কুলাসেগারা প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সাল থেকে মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানোর ক্ষেত্রে নতুন পদ্ধতি চালু হয়। ওই সময় দেশটিতে অভিবাসন শ্রমিক পাঠাতে বাংলাদেশের ১০টি এজেন্সিকে মালয়েশিয়া সরকার নির্ধারণ করে। এর আগে যেকোনো রিক্রুটিং এজেন্সি মালয়েশিয়ায় লোক পাঠাতে পারতো।
অভিযোগ আছে, ওই ১০ এজেন্সির মধ্যে কয়েকটি এজেন্ট বাংলাদেশিকর্মী ও মালয়েশিয়ায় নিয়োগ দেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে মধ্যস্বত্বভোগী হয়ে শুধু টাকা আয় করতে বাংলাদেশিদের পাঠাতে শুরু করে। মালয়েশিয়া যেতে প্রত্যেক বাংলাদেশির কাছ থেকে ২০ হাজার রিঙ্গিত (বাংলাদেশি চার লাখ ১৯ হাজার টাকা) আদায় করা হয়। অথচ রিক্রুইটিং এজেন্টদের মাথাপিছু খরচ হয় দুই হাজারের কম রিঙ্গিত (বাংলাদেশি ৪২ হাজার ১৮১ টাকা)। অর্থাৎ সংঘবদ্ধ ওই চক্রটি গত দুই বছরে প্রায় এক লাখের বেশি বাংলাদেশিকর্মীকে মালয়েশিয়ায় পাঠিয়ে প্রায় চার হাজার ২১৮ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন