বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল আত্মপরিচয়ে একটি জাতি প্রতিষ্ঠা করা। ১৯৪৭ সালের পর থেকে যে পর্যায়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন তার প্রতিটিই ছিল একটি জাতি রাষ্ট্র তৈরি করার। রাষ্ট্রের লক্ষ্য নির্ধারণ না করতে পারলে সফল হওয়া যাবে না। বঙ্গবন্ধু সেটা শুরুতেই করতে পেরেছিলেন। এই রাষ্ট্রে সবাই অবাধ স্বাধীনতা ভোগ করবেন। এখানে কোনো ধর্ম বা জাত দিয়ে ভেদাভেদ করা যাবে না।

বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর সিরডাপে এ টি এম শামসুল হক মিলনায়তনে এক গোলটেবিল আলোচনায় এসব কথা বলেন বক্তারা। বঙ্গবন্ধুর ১০৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ‘তোমার আলোয় উজ্জ্বল বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই আলোচনার আয়োজন করে সম্প্রীতি বাংলাদেশ।

আলোচনায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকুল আরেফিন বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল আত্মপরিচয়ে একটি জাতি প্রতিষ্ঠা। ১৯৪৭ সালের পর থেকে যেই পর্যায়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন তার প্রতিটিই ছিল একটি জাতি রাষ্ট্র তৈরি করার। ভাষা, ৬ দফা প্রদান যার মাধ্যমে বাঙালিদের আস্থা অর্জন করতে পেরেছিলেন। তার প্রমাণ পাওয়া যায় নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা।

নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আলী শিকদার বলেন, মানুষের মহত্ত্ব আত্মস্থ করতে হয়। বঙ্গবন্ধু অল্প বয়স থেকেই এটি আত্মস্থ করেছিলেন। রাষ্ট্রের লক্ষ্য নির্ধারণ না করতে পারলে সফল হওয়া যাবে না। বঙ্গবন্ধু সেটা শুরুতেই করতে পেরেছিলেন। এই রাষ্ট্রে সবাই অবাধ স্বাধীনতা ভোগ করবেন। এখানে কোনো ধর্ম বা জাত দিয়ে ভেদাভেদ করা যাবে না। অথচ আজকে একটি গোষ্ঠী বলার চেষ্টা করছে কে মুসলিম, কে হিন্দু, কে খ্রিস্টান। সংবিধানে স্পষ্ট বলা আছে কেউ ভেদাভেদ করতে পারবে না। এটা সংবিধান বিরোধী।

সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, জীবন দর্শন, রাজনৈতিক দর্শনসহ বাঙালি জাতির সঙ্গে তার যে একাত্মতা উঠে এসেছে। বঙ্গবন্ধুর অর্জন ও কৃতিত্ব যারা বিশ্বাস করে না তাদের প্রতি আমাদের কঠিন কোনো কথা বলার দরকার নাই। তারা নর্দমার কীটের মতো। তাদের বিষয়ে আমাদের কিছু বলার নেই।

তিনি বলেন, জিন্নাহ পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর ভেবেছিলেন একটি জাতি রাষ্ট্র তৈরি হয়ে গেছে। অথচ তার মেয়েই তার এই ধারণার সঙ্গে একমত ছিলেন না। যার কারণে পরবর্তীতে আমরা দেখেছি বাঙালি জাতি একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছে। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সেই বাঙালি জাতি একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছে। যার কারণে আজ আমাদের জাতি হিসেবে এগিয়ে যাওয়া।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও সম্প্রীতি বাংলাদেশের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক ড. বিমান বড়ুয়া বলেন, পাকিস্তান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর ১৮ বার কারাগারে গিয়েছিলেন। দুবার গৃহবন্দি ছিলেন। তারপরও তার আদর্শ থেকে তাকে বিচ্যুত করতে পারেননি। একজন মানুষ হিসেবে তিনি সমগ্র মানবজাতিকে নিয়ে ভাবেন। তিনি বলেননি শুধু বাঙালিকে নিয়ে ভাবেন।

সম্প্রীতি বাংলাদেশের সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. রশীদ আসকারী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. অসীম সরকার, অধ্যাপক আহমেদ আবুল কালাম প্রমুখ।