আগামী প্রজন্মকে স্কাউটিংয়ের মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করতে হবে : রাষ্ট্রপতি

আগামী প্রজন্মকে স্কাউটিংয়ের মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করতে স্কাউট নেতৃবৃন্দসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) রাষ্ট্রপতি রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বাংলাদেশ স্কাউটস এর জাতীয় কাউন্সিলের ৫১তম বার্ষিক সাধারণ সভায় এ আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রপতি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘তোমরা ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে স্কাউট আদর্শের প্রতিফলন ঘটাবে এবং দেশের উন্নয়নে আত্মনিয়োগ করবে’। তিনি বলেন, তার প্রত্যাশা হচ্ছে- স্কাউটরা কঠোর পরিশ্রম ও অনুশীলনের মাধ্যমে ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে স্কাউট আদর্শের প্রতিফলন ঘটাবে এবং দেশের যেকোনো প্রয়োজনে একজন প্রকৃত দেশপ্রেমিক ও স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে আত্মনিয়োগ করবে। তিনি নিরক্ষরতা, দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ গঠনে স্কাউটদের বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখারও আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রপতি স্কাউটদের স্বেচ্ছাসেবী কাজের প্রশংসা করে বলেন, স্কাউটরা সৃষ্টিকর্তা ও দেশের প্রতি কর্তব্য পালনের পাশাপাশি সামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড, বৃক্ষরোপণ, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, জলবায়ুর উষ্ণতা রোধে জনসচেতনতা তৈরি, বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, ভবনধস ও অগ্নিকান্ডের ঘটনায় উদ্ধার কাজসহ জাতীয় দুর্যোগে সবার আগে এগিয়ে আসে। বাংলাদেশে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসের সকল উদ্যোগে বাংলাদেশ স্কাউটসের সদস্যরা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে স্থানীয় জনসাধারণের সঙ্গে উদ্ধার, ত্রাণ ও পুনর্বাসন কাজে অংশ নিয়ে, দেশে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় যে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে, সেজন্য তিনি বাংলাদেশ স্কাউটসকে ধন্যবাদ জানান। তাদের এ সেবাধর্মী কার্যক্রম ভবিষ্যতে আরো বিস্তৃতি লাভ করবে বলেও রাষ্ট্রপতি হামিদ আশা প্রকাশ করেন। রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে, বিশেষ করে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ও জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব আজ বিশ্বব্যাপী ভিন্ন বাস্তবতা তৈরি করেছে।

রাষ্ট্রপতি বিশ্বব্যাপী স্কাউটস আন্দোলন সম্পর্কে বলেন, লেখাপড়ার পাশাপাশি সামাজিক বিভিন্ন কর্মকান্ডে নিজেদেরকে সম্পৃক্ত করার মানসিকতা তৈরিতে স্কাউটিং এর ভূমিকা অনন্য। তিনি বলেন, ‘আমাদের স্কাউটরা নিয়মিত সমাজ সেবামূলক কাজের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা ও আর্তমানবতার সেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে।’ তিনি মনে করেন, ‘স্কাউটিংই পারে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আধুনিক, প্রগতিশীল, সৃজনশীল করে গড়ে তুলতে’।

এসময় উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্যবৃন্দ, বাংলাদেশ স্কাউটস এর সভাপতি মোঃ আবুল কালাম আজাদ, প্রধান জাতীয় কমিশনার ড. মোঃ মোজাম্মেল হক খান, জাতীয় কমিশনার (প্রোগ্রাম) মোঃ আতিকুজ্জামান এবং নির্বাহী পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্বে) উনু চিং এবং সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিবৃন্দ অনেকের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।

২০২২ সালে ৬২৬ জন স্কাউট অ্যাওয়ার্ড (প্রেসিডেন্ট’স স্কাউট অ্যাওয়ার্ড), বাংলাদেশ স্কাউটসের সর্বোচ্চ অ্যাওয়ার্ড ‘রৌপ্য ব্যাঘ্র’ এবং দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অ্যাওয়ার্ড ‘রৌপ্য ইলিশ’ অ্যাওয়ার্ডে অর্জনকারী সকলকে এবং তাদের লিডার ও অভিভাবকদেরও অভিনন্দন জানান চীফ স্কাউট আবদুল হামিদ।