সিরাজগঞ্জের চৌহালীতে সোয়া ২কোটি টাকার ব্রীজ: মানুষের কোন কাজেই আসছে না
সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলায় ভুল নকশায় সোয়া দুই কোটি টাকা ব্যয়ে একটি ব্রীজ নির্মাণ করায় দুই বছর যাবত ব্রীজটি অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে। এ পরিস্থিতিতে ব্রীজটি সচল করতে আরও সাড়ে ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে সম্প্রসারণ ব্রীজ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ (এলজিইডি)।
চৌহালী উপজেলা এলজিইডি অফিস জানায়, সিরাজগঞ্জের চৌহালী ও টাঙ্গাইল জেলার মধ্যে সড়ক যোগাযোগ এবং চৌহালী উপজেলার বাঘুটিয়া ও উমারপুর ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষের চলাচলের সুবিধার্থে বিনাইন মরা নদীতে ব্রীজটি নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। সেই মোতাবেক বৃহত্তর পাবনা ও বগুড়া গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ২ কোটি ২৩ লাখ ৮১ হাজার ৭৫০ টাকা ব্যয় ধরা হয়।
৫২ মিটার দৈর্ঘ্যরে ব্রীজটি নির্মাণে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান র্যাব আরসি প্রাইভেট লিমিটেডের সাথে ২০১৭ সালের ৫ ডিসেম্বর চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি মোতাবেক ২০১৮ সালের ৪ ডিসেম্বরের মধ্যে ব্রীজটি নির্মাণের কথা থাকলেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে ব্রীজটির মূল অবকাঠামো নির্মাণ শেষ করে। কিন্তু দুই পাশের সংযোগ সড়ক আজও নির্মিত হয়নি।
বিনানই গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্বাস আলী ও শিক্ষক মিজানুর রহমান জানান, নদীর প্রস্থের তুলনায় ব্রীজটির দৈর্ঘ্য অনেক ছোট। এক বছরের প্রকল্প পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি। ব্রীজের দুই পাশে সংযোগ নির্মিত না হওয়ায় ব্রীজটি জনগণের কোন কাজে আসছে না।
বাঘুটিয়া গ্রামের কৃষক রহমত আলী, ইসহাক শেখ ও সুজাবত আলী বলেন, ব্রীজটি চলাচল উপযোগী হলে এ অঞ্চলের কৃষকরা উৎপাদিত ফসল পরিবহণ করে বড় বড় হাট বাজারে নিয়ে কাক্ষিত মূল্যে বিক্রি করতে পারবে। এতে আমরা অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হব।
চৌহালী উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম জানান, নদীর দৈর্ঘের চেয়ে ব্রীজটি ভুলবশত: ছোট আকারে নির্মাণ করা হয়েছিল। ব্রীজটির একপাশে আরো সম্প্রসারণ করা প্রয়োজন। বর্তমান অবস্থায় সংযোগ সড়ক নির্মাণ করলেও তা টিকসই হবে না। যে কারণে ব্রীজটি সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম জানান, বাজেট স্বল্পতার কারণে শুরুতে হয়তো ব্রীজটি ছোট আকারে নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে ব্রীজটি আরও ৫২ মিটার সম্প্রসারণ করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এজন্য প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। ইতোমধ্যেই এ প্রকল্পের টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। চলতি শুস্ক মৌসুমেই পুনরায় ব্রীজটির নির্মাণ কাজ শুরু হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন