সিরাজগঞ্জের বেলকুচির আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে জনপ্রতিনিধিদের ক্ষোভ!

সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে পর পর বিক্ষিপ্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা প্রশাসনের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।

বুধবার (২২ মার্চ) দুপুরে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে হলরুমে মাসিক আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় জনপ্রতিনিধিরা তাদের বক্তব্যকালে বেলকুচি আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির অভিযোগ তুলে প্রশাসনের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনিসুর রহমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম সাজেদুল, পৌর মেয়র সাজ্জাদূল হক রেজা, বেলকুচি থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আসলাম হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আশানুর বিশ্বাস, বেলকুচি সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মীর্জা সোলায়মান হোসেন, বড়ধূল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আছির উদ্দিন মোল্লা, রাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোনিয়া সবুর আকন্দ, ধুকরিয়াবেড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন প্রমুখ।

সভায় রাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তার বক্তব্যে বলেন, গত ২১ মার্চ মঙ্গলবার রাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে সভাপতি প্রার্থী ছিলেন এমপি মমিন মন্ডল সমর্থিত উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিন হাসান রকি। রকি তার নিশ্চিত হার জেনে তার বাহিনী নিয়ে পুলিশ প্রশাসনের সামনে থেকে ভোট ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এসময় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি হিসাবে আমি ও আমার স্বামী তাদের বাঁধা দিলে আমাকে এবং আমার স্বামীকে ব্যাপক ভাবে শারীরিক প্রহার করেছে। ছাত্রলীগের সভাপতি রকি এটা করতে পেরেছে একমাত্র এমপি’র ছত্রছায়ায় থাকার জন্য।

বেলকুচি সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মির্জা সোলায়মান হোসেনের বক্তব্যে বলেন, এর আগেও এই ছাত্রলীগ দ্বারা আমাদের ভাঙ্গাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম ভূইয়া নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। গতকাল সোনিয়া চেয়ারম্যান হয়েছে। আগামীকাল আমাকে হতে হবে না এর নিশ্চয়তা দেবে কে? আমরা জনপ্রতিনিধিরা যদি এভাবে নির্যাতনের শিকার হই তাহলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কেমন করে দেব! এখানে তাহলে প্রশাসনের ভূমিকা কি?

বড়ধূল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আছির উদ্দিন মোল্লা বলেন, জনপ্রতিনিধিদের উপর হামলার বিষয়টি বেলকুচিতে নতুন কিছু নয়। কিন্তু এর কোন সঠিক সমাধান হয়নি আজও। তবে প্রশাসন যদি আমাদের উপর হামলার বিষয়টি না দেখে তবে এই উপজেলা ও পৌর সভায় আমরা যে কয়েকজন জনপ্রতিনিধি রয়েছি সকলেই একত্রিত হয়ে আমরা আমাদের উদ্যোগে এসব হামলার উচিৎ জবাব দেব।

পৌর মেয়র সাজ্জাদূল হক রেজা বলেন, গত ১৭ই মার্চ সকালে আলহাজ্ব সিদ্দিক উচ্চ বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নিয়ে উপজেলা পরিষদ চত্বরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে ফেরার পথে এমপি মহোদয়ের গুন্ডা বাহিনী আমার ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। এসময় ভয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা এলোপাতাড়ি ভাবে ছোটাছুটি করতে থাকে। এমপি যদি এরকম কর্মকান্ড করে সেও জনপ্রতিনিধি আমরাও জনপ্রতিনিধি। প্রশাসন যদি এভাবে নিরব ভূমিকা পালন করে তাহলে প্রয়োজনে আমরা আমাদের কর্মীদের সাথে নিয়ে এর কঠোর জবাব দেব।

এসময় থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আসলাম হোসেন বলেন, পুলিশ প্রশাসন কখনো কারও পক্ষ নিয়ে কাজ করে না। দু একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনার মানে এই নয় যে এ এলাকায় আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি হয়েছে। আমরা সব সময় চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি এ এলাকায় আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে।