স্কুলের ফটকে ধানের শীষের পোস্টার, তাই শিক্ষক গ্রেপ্তার
রাজধানীর উত্তর বাড্ডার একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের মালিক ও শিক্ষক আবদুল মান্নান। তাঁর স্কুলটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হবে। গত বৃহস্পতিবার বাড্ডা থানার পুলিশ স্কুলটির ফটকে ধানের শীষের প্রার্থীর একটি পোস্টার ঝুলতে দেখে। এরপর মান্নানকে আটক করে পুলিশ। তাঁকে গত অক্টোবর মাসে দায়ের করা বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয় মান্নানকে। আইনজীবী আদালতে মান্নানকে নির্দোষ দাবি করে জামিনের আবেদন করেন। আদালত জামিন নাকচ করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আদালত চত্বরে মান্নানের স্ত্রী রুনা লায়লা বলেন, তাঁর স্বামী কোনো দল করেন না, কোনো মামলাও নেই। বৃহস্পতিবার দুপুরে বাড্ডা থানার পুলিশ এসে স্কুলের ফটকে বিভিন্ন প্রতীকের সঙ্গে ধানের শীষের একটি পোস্টার দেখতে পায়। এই অপরাধেই পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে গায়েবি মামলায় জড়িয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মো. মাসুদুর রহমান বলেন, নিয়মিত ফৌজদারি মামলা ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আসামিদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। কোনো নিরপরাধ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না।
আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ঢাকা মহানগর পুলিশ বিভিন্ন মামলায় ১৭৪ জনকে গতকাল আদালতে হাজির করেছে। এঁদের ৬৮ জনকে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় করা বিশেষ ক্ষমতা আইন, বিস্ফোরক আইন, ভাঙচুর ও পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়েছে। বাকিদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগে মামলা করেছে।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিউমার্কেট থানার পুলিশ কামরাঙ্গীরচরের বাসা থেকে আটক করে ভাঙচুরের মামলায় গ্রেপ্তার দেখায় তাঁতী দলের নেতা বাবু মিয়াকে। গতকাল আদালত প্রাঙ্গণে তাঁকে দেখতে এসেছিল পাঁচ ছেলেমেয়ে। বাবার দেখা পেয়ে তারা কাঁদছিল। এ সময় সন্তানদের মাথায় হাত বুলিয়ে দেন বাবু মিয়া। তাঁর মেয়ে লাভলী আক্তার বলে, সরকারি দলের লোকদের চাপে নীলক্ষেতে বইয়ের ব্যবসা গুটিয়ে ফেলতে বাধ্য হন তার বাবা। কারাগার থেকে জামিনে বেরিয়ে আসার পাঁচ মাসের মাথায় পুলিশ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আবার তার বাবাকে গ্রেপ্তার করে। গতকাল আদালতে হাজির করা হয় কল্যাণপুর থেকে গ্রেপ্তার করা সবজি বিক্রেতা বাবুল মিয়াকে (৩৫)। তাঁকে দারুস সালাম থানায় করা বিস্ফোরক আইনের একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ।
আদালত প্রাঙ্গণে গতকাল দুপুরে কাঁদছিলেন বাবুল মিয়ার স্ত্রী সাহিদা বেগম। তিনি বলেন, তাঁর স্বামী ভ্যানে করে কাঁচামাল বিক্রি করেন। অভাবের সংসার তাঁদের। দল করার সময় কোথায় তাঁর স্বামীর।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন