২১ কোটি ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা হয়েছে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে দেশের মানুষের জন্য ২১ কোটি টিকার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। শনিবার (২৪ জুলাই) বিকেলে সাড়ে ৪টায় বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যভুক্ত প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালগুলোর সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন তিনি।
কোভিড-১৯ সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি প্রতিরোধ, অক্সিজেন সংকট, হাসপাতালের সুযোগ-সুবিধা ও শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের এই ভার্চ্যুয়াল মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
জাহিদ মালেক বলেন, এখন পর্যন্ত ১ কোটি ২০ লাখের মতো লোক ভ্যাকসিনেটেড হয়েছেন। আমরা যে বিভিন্ন ভ্যাকসিন অর্ডার করেছি এবং প্রতিশ্রুতি পেয়েছি তার সংখ্যা ২১ কোটি। এর মধ্যে চায়নার ৩ কোটি, ৩ কোটি অ্যাস্ট্রাজেনেকা, কোভ্যাক্সের ৭ কোটি, রাশিয়ার ১ কোটি, এবং জনসন অ্যান্ড জনসন কোম্পানির ৭ কোটি, যেটা আগামী বছরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। অর্থাৎ ২১ কোটি ভ্যাকসিনের আমরা ব্যবস্থা করেছি। এ ভ্যাকসিনগুলো দেওয়া হলে আমাদের দেশের ৮০ শতাংশ লোককে দেওয়া যাবে। ভ্যাকসিনগুলো আমরা যদি পাই, তাহলে বাংলাদেশ ভ্যাকসিনে কোনো দেশ থেকে আশা করি পিছিয়ে থাকবে না।
তিনি আরও বলেন, দেশে যত করোনা রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন তার ৯০ শতাংশ নন ভ্যাকসিনেটেড রোগী। ভ্যাকসিন না নেওয়ার কারণে তারা সংক্রমিত হয়েছেন। ঢাকার সরকারি হাসপাতালে যত রোগী ভর্তি হয়েছে তার ৭৫ শতাংশ গ্রামের লোক। এদের ৯০ ভাগ আবার বয়স্ক লোক। আমরা যদি তাদের ভ্যাকসিনের আওতায় আনতে পারি তাহলে আমাদের করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা এবং মৃত্যু কমে যাবে। বয়স্ক লোকেরা করোনায় আক্রান্ত হলে তাড়াতাড়ি অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং অনেক ক্ষেত্রে মারা যান। যারা অপেক্ষাকৃত যুবক তাদের ক্ষেত্রে তুলনামূলকভাবে এটা কম।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, মধ্যবয়স্ক যারা মৃত্যুবরণ করছেন তাদের মধ্যে মেয়েদের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। যারা বেশি বয়স্ক তাদের মধ্যে পুরুষ বেশি মারা যাচ্ছেন। সুতরাং আমাদের এই দিকটাও খেয়াল রাখতে হবে।
তিনি আরও বলেন, সংক্রমণ কেন বাড়ছে, এটা আমরা সবাই জানি। এখনও অনেকে করোনার স্বাস্থ্যবিধি মানেন না। এখনও অনেকে মাস্ক পরতে চান না, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে চান না। বেপরোয়াভাবে ঘুরে বেড়ান। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে মাস্ক পরা প্রয়োজন—এটা কেউ জানে না, এটা এখন কেউ বললে আমি মেনে নেবো না। এটা সবাই জানেন কিন্তু মানেন না, তাই আমরা আক্রান্ত বেশি হচ্ছি।
জাহিদ মালেক বলেন, স্বাস্থ্যসেবা ভেঙে পড়লে সমগ্র দেশ ভেঙে পড়বে। প্রধানমন্ত্রী এ কারণেই স্বাস্থ্যসেবাকে এত গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। স্বাস্থ্যসেবা ভালো থাকলে অন্যান্য বিষয়ও ভালো থাকবে। আমরা ভারত থেকে প্রতি সপ্তাহে ২০০ মেট্রিক টন লিকুইড অক্সিজেন আনার ব্যবস্থা করেছি। অর্থাৎ মাসে ৮০০ মেট্রিক টন লিকুইড আনার ব্যবস্থা করেছি। এর পাশাপাশি আমাদের যেগুলো তা তো আছেই। সরকার প্রায় ৪৩টা বড় সাইজের অক্সিজেন জেনারেটরের ব্যবস্থা করেছে। যেটা মিনিটে ৫০০ থেকে ৬০০ লিটার অক্সিজেন সাপ্লাই দিতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে আজ প্রায় ২৫০টি ভেন্টিলেটর পাচ্ছি। নিজেদের যা আছে তার পাশাপাশি আরও ৩৫০টি ভেন্টিলেটর ক্রয় করা হচ্ছে।
মতবিনিময় সভায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যভুক্ত প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালের প্রতিনিধিরা আলোচনায় অংশ নেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন