৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সব অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন

আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সব অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জ্বালানি বিভাগ গঠিত অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন সংক্রান্ত টাস্কফোর্সের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এ জন্য তিতাসহ অন্য বিতরণ কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে কর্মপরিকল্পনা চাওয়া হয়েছিল। পরিকল্পনা অনুযায়ী এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

জানতে চাইলে টাস্কফোর্সের প্রধান জ্বালানি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. আবুল মনসুর বলেন, ‘আমরা ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সব অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ফেলতে পারবো বলে আশা করছি। সারাদেশে তিন লাখ ১৭ হাজার ২৭৫টি অবৈধ সংযোগ চিহ্নিত করেছিল বিতরণ কোম্পানিগুলো। এর মধ্যে ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত দুই লাখ ৫২ হাজার ৪৪৩টি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এ সময় ৩৪৪ কিলোমিটার অবৈধ গ্যাস সংযোগের পাইপ লাইন উচ্ছেদ করা হয়েছে। তবে এখনও এ ধরনের ২৬৩ কিলোমিটার পাইপ লাইন রয়ে গেছে; যা দিয়ে অবাধে গ্যাস চুরি হয়ে যাচ্ছে। এখনও ৬৩ হাজারের মতো অবৈধ গ্রাহক রয়ে গেছে।’

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার (১‌৭ ডিসেম্বর) টাস্কফোর্সের সভায় কোম্পানিগুলো তাদের পরিকল্পনা উপস্থাপন করে। জানা যায়, এখনও দেশে গ্যাসের বিতরণ পর্যায়ে ছয় ভাগেরমতো সিস্টেম লস রয়েছে। গ্যাস যেহেতু পাইপ লাইনে পরিবহন হয়, তাই এত বেশি পরিমাণ সিস্টেম লস হয়। কিন্তু এটি গ্রহণযোগ্য নয়। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন মাত্র ২ ভাগ সিস্টেম লস গ্রহণ করে। তাহলে বাকি ৪ ভাগ সিস্টেম লসের কী হবে। গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলো এই সিস্টেম লসকে কায়দা করে অন্য গ্রাহকের ওপর চাপিয়ে দেয়। এতে করে সামগ্রিকভাবে গ্যাসের বিলও বেশি আসে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সরকার এখন দেশীয় গ্যাসের সঙ্গে প্রতিদিন ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি আমদানি করছে। উচ্চ দরে এসব এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে। আমদানি খরচ তুলতে সরকার গ্যাসের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। কিন্তু গ্যাস চুরি হওয়ায় সরকারের পাশাপাশি বৈধ সংযোগধারীরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে। তাই অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছন্ন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবারের বৈঠকে বিতরণ কোম্পানি যে তথ্য তুলে ধরেছে তাতে বলা হচ্ছে, এখন যা অবৈধ সংযোগ রয়েছে তার পুরোটাই নারায়ণগঞ্জে। ফতুল্লা এলাকায় অবৈধ সংযোগ উচ্ছেদ করতে গিয়ে প্রায় ৬০০ জনের নামে মামলা করা হয়েছে। বৈঠকে অবৈধ সংযোগ বিছিন্ন করার ক্ষেত্রে নানামুখী চাপ উপেক্ষা করে কাজ করতে হয় বলে কর্মকর্তারা জানান।