অষ্টম শ্রেণি পযর্ন্ত পড়াশোনা করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক!
অষ্টম শ্রেণি পযর্ন্ত পড়াশোনা করেছেন সুকুমার চন্দ্র শীল। কিন্তু নারী ও শিশুসহ যে কোনো রোগের চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। যেন দেশের নামকরা ডিগ্রিধারী চিকিৎসকরা তার কাছে ফেল! তবে এবার আর সেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের রেহাই হলো না। ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে গ্রেফতার হয়েছেন সুকুমার চন্দ্র শীল নামে ওই ভুয়া চিকিৎসক।
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ বাজারের বিদ্যুৎ অফিস সংলগ্ন চেম্বার থেকে মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ১ লাখ টাকা জরিমানা দিয়ে ছাড়া পান ওই ভুয়া চিকিৎসক।
গোয়ালন্দ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল মামুন এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আসিফ মাহমুদ এ অভিযান পরিচালনা করেন।
অভিযানে বিভিন্ন অনিয়ম ও ত্রুটির কারণে গোয়ালন্দ বাজারের বেবি মেডিকেল হলকে ২০ হাজার টাকা, হামিদ ফার্মেসিকে ২০ হাজার টাকা, আবেদীন ফার্মেসিকে ৫ হাজার টাকা, নাবিলা ফার্মেসিকে ৫ হাজার টাকা, ইসলামিয়া ফার্মেসিকে ৩ হাজার টাকা, হাসপাতাল গেটের আলাউদ্দিন ফার্মেসিকে ১০ হাজার টাকা, সজীব ফার্মেসিকে ৫ হাজার টাকা, রুমি ফার্মেসিকে ৫ হাজার টাকা, শাহজাহান ফার্মেসিকে ১০ হাজার টাকা এবং উজানচর মঙ্গলপুর এলাকার রাজ মেডিকেল হলকে ২০ হাজার টাকা ও নুরজাহান ফার্মেসিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
সূত্র জানায়, ভুয়া ডাক্তার সুকুমারের পড়ালেখা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত। কয়েক বছর স্থানীয় এক পল্লী চিকিৎসকের ফার্মেসিতে কাজ করে অভিজ্ঞতার বদৌলতে তিনি বনে গেছেন মস্ত বড় ডাক্তার! নারী-শিশুসহ যে কোনো রোগীর যে কোনো রোগের চিকিৎসা দেন তিনি।
উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন অ্যান্টিবায়োটিকসহ দামি ওষুধের কল্যাণে রোগীরা সাময়িক আরোগ্য পাওয়াতে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে তার নাম। নামকরা ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের ভিড় লেগেই থাকে তার চেম্বারে। কিন্তু ভুল রোগের ভুল ওষুধ প্রয়োগ ও উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন অ্যান্টিবায়োটিক দেয়ায় পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কারণে বিভিন্ন রোগীর নানাবিধ ক্ষতিরও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। অভিযোগ পেয়ে অভিযানে নামে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ও গোয়ালন্দ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমরা সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে স্বাস্থ্য অধিদফতর, ওষুধ প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সমন্বয়ে যৌথ অভিযান পরিচালনা করি। অভিযানে দেখা যায়, ফার্মেসিগুলোর লাইসেন্স ও ফার্মাসিষ্টের সনদ নেই। এ ছাড়া সরকারি ওষুধ, অনুমোদনহীন দেশি-বিদেশি ওষুধ তারা বিক্রি করছেন। কথিত ডাক্তারদের একাডেমিক সার্টিফিকেট নেই। নেই চিকিৎসা সম্পর্কিত যোগ্যতা ও রোগী দেখার কোনো সনদ। যে কারণে ওই ফার্মেসিগুলোকে জরিমানা করা হয়। এ ছাড়াও কথিত ডাক্তার সুকুমার চন্দ্র শীলকে আর্থিক দণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত সুকুমার চন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এসএসসি পর্যন্ত লেখাপড়া না করার কথা স্বীকার করেছেন। তবে তিনি দাবি করেন, ওষুধ ফার্মেসিতে কাজ করার সুবাদে তার অনেক অভিজ্ঞতা আছে। ম্যাজিস্ট্রেট রোগী দেখতে নিষেধ করে দিয়েছেন। ভাবছি নিজেদের কারো লাইসেন্সে ওষুধের ব্যবসা করব।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন