অসহায় জনগোষ্ঠীর পাশে দাঁড়াতে ফুডপ্যান্ডার উদ্যোগ

কোভিড-১৯ মহামারি চলাকালীন দেশের নিম্ন আয়ের মানুষদের বিভিন্ন প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। তাদের বেকারত্ব, আয়ের সুযোগ হারানো, পানির সমস্যা, খাদ্যের নিরাপত্তাহীনতা এবং সঠিক স্বাস্থ্যসেবার অভাবসহ বিভিন্ন বাঁধা অতিক্রম করতে হয়েছে। সম্প্রতি কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ বৃদ্ধি এবং এ কারণে কঠোর নানা বিধিনিষিধ এসব সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। এ প্রেক্ষিতে, দেশজুড়ে অসহায় মানুষকে সহায়তা করতে ফুডপ্যান্ডা গত বছরের মতো এ বছরও টানা দ্বিতীয়বারের মতো ডোনেশন ক্যাম্পেইন শুরু করেছে। ‘ফুডপ্যান্ডা কেয়ারস’ শীর্ষক এই ক্যাম্পেইনটির জন্য ফুডপ্যান্ডা বিভিন্ন এনজিও’র (অলাভজনক সংস্থা) সাথে অংশীদারিত্ব করেছে এবং এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা ফুডপ্যান্ডা প্ল্যাটফর্মে থাকা এনজিওগুলোকে অর্থ সহায়তা প্রদান করতে পারবেন।

এমতাবস্থায়, সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের আর্থিক সহায়তা প্রদানে এবং তাদের সাহায্যের লক্ষ্যে ফুডপ্যান্ডা পাঁচটি এনজিওর সাথে অংশীদারিত্ব করেছে। এনজিওগুলো হচ্ছে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন, ইট’স হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশন (আইএইচএফ), ফুটস্টেপস বাংলাদেশ, জাগো ফাউন্ডেশন এবং বাংলাদেশ ক্যান্সার এইড ট্রাস্ট (বিএএনসিএটি)। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীকে আরও জোরদার করার লক্ষ্যে ফুডপ্যান্ডা আরও সংস্থার সাথে অংশীদারিত্ব করবে বলে আশাবাদী। এক্ষেত্রে, প্রতিষ্ঠানটি অন্যান্য সংস্থাকেও এগিয়ে আসতে এবং বর্তমান ও ভবিষ্যতে দেশের দুর্দশাগ্রস্ত জনগণকে সাহায্য করতে উৎসাহিত করছে। বর্তমান ডোনেশন ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে, ফুডপ্যান্ডা এবং তার অংশীদার এনজিওগুলো দুস্থদের মানুষদের মৌলিক সুযোগ-সুবিধাগুলো প্রদান করবে। এসব সুযোগ-সুবিধার মধ্যে রয়েছে: নিরাপদ খাবার পানি, সুরক্ষা পণ্য, প্রয়োজনীয় মুদিপণ্য ও খাদ্য সামগ্রী। এই উদ্যোগের মাধ্যমে দুর্দশাগ্রস্ত ব্যক্তি ও পরিবারদের চিকিৎসা সেবা, আর্থিক সহায়তা ও প্রয়োজনীয় ভাতা প্রদান করা হবে।

‘ফুডপ্যান্ডা কেয়ারস’- এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকদের সহজে ও স্বাচ্ছন্দ্য আর্থিক সহায়তা প্রদানে সহায়তা করবে। দেশজুড়ে ফুডপ্যান্ডা ব্যবহারকারীরা ফুডপ্যান্ডা মোবাইল অ্যাপ বা ওয়েবসাইট উভয়ের মাধ্যমেই অনলাইনের পেমেন্ট করে আর্থিক সহায়তা প্রদান করতে পারবেন এবং এর মাধ্যমে অসংখ্য মানুষ দ্রুত এবং ঝামেলাহীনভাবে প্রয়োজনীয় সহায়তা পাবেন। ব্যবহারকারীরা প্রত্যেক এনজিও প্রদত্ত অফার থেকে প্যাকেজ নির্বাচন করে ব্যবহারকারীরা নির্দিষ্ট আর্থিক সহায়তা প্রদান করতে পারবেন। তবে, এই মুহুর্তে কেবল ডিজিটাল পেমেন্টের মাধ্যমেই আর্থিক সহায়তা প্রদান করা যাবে।

এ উদ্যোগের ব্যাপারে ফুডপ্যান্ডা বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সহ-প্রতিষ্ঠাতা আম্বারিন রেজা বলেন, ‘দেশজুড়ে হাজার হাজার পরিবার চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছেন, যা বৈশ্বিক মহামারির কারণে আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। মানুষের সেবায় কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে আমরা মনে করি, আমাদের অসহায় এসব মানুষদের পাশে দাঁড়ানো উচিৎ। এ বিষয়টি বিবেচনা করে, আমরা এসব সংস্থার সাথে একত্রিত হয়ে পুনরায় ‘ফুডপ্যান্ডা কেয়ারস’ চালু করেছি। গত বছর রমজানের সময়, আমরা আমাদের গ্রাহকদের কাছ থেকে অভাবনীয় সাড়া পেয়েছি এবং তাদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ দেখেছি। তাই, এবার আবারও আমরা সবাইকে এগিয়ে আসার এবং ফুডপ্যান্ডা অ্যাপ বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আর্থিক সহায়তা প্রদান করে অসহায় মানুষদের সাহায্য করতে উৎসাহিত করছি। দুর্দশাপীড়িত নাগরিকদের সহায়তায় অন্যান্য সংস্থাকেও আমাদের সাথে যোগদানের আহ্বান জানাচ্ছি।’

বর্তমানে, ফুডপ্যান্ডার অংশীদার এনজিওগুলোর প্রত্যেকে বিস্তৃত পরিসরে চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে বিভিন্ন আর্থিক সহায়তার বিভিন্ন প্যাকেজ তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন, আইএইচএফ এবং জাগো ফাউন্ডেশন প্যাকেজের মাধ্যমে সারা দেশে বড়-ছোট বিভিন্ন পরিবারের জন্য খাবার ও মুদিপণ্য সরবরাহে আর্থিক সহায়তা গ্রহণ করবে। ফুটস্টেপস বাংলাদেশে আর্থিক সহায়তার মাধ্যমে বিভিন্ন সম্প্রদায়কে আগামী কয়েক বছর বিশুদ্ধ খাবার পানি পেতে সহায়তা করবে এবং বিএএনসিএটি আর্থিক সহায়তার মাধ্যমে ক্যান্সার আক্রান্ত ব্যক্তি এবং তাদের কাছের মানুষদের স্বাস্থ্যসেবা এবং ইফতারের খাবার ও স্পন্সরশিপ পেতে সহায়তা করবে।

ফুডপ্যান্ডার এ উদ্যোগটি পুরো রমজান মাসব্যাপী চলবে এবং ফুডপ্যান্ডা মোবাইল অ্যাপ এবং ওয়েবসাইট উভয়ের মাধ্যমেই যেকোন দিন যেকোন সময় আর্থিক সহায়তা প্রদান করা যাবে। ব্যবহারকারীরা ফুডপ্যান্ডার অংশীদার এনজিও বেছে নিয়ে তাদের পছন্দ অনুসারে প্যাকেজ নির্বাচন করে কয়েকটি ট্যাপের মাধ্যমে অনলাইনে আর্থিক সহায়তা প্রদান করতে পারবেন।