আগামী বছরে স্পেনের সমান হবে বাংলাদেশ : অর্থমন্ত্রী
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, আগামী অর্থবছরে বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি হবে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ। আর সেই প্রবৃদ্ধিতে দশমিক ৯ শতাংশ অবদান রাখবে বাংলাদেশের অর্থনীতি। কানাডা অবদান রাখবে ১ শতাংশ। থাইল্যান্ড ও স্পেনের অবদানও হবে ১ শতাংশ করে।
আগামী ২০২৪ সাল পর্যন্ত বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিতে বাংলাদেশের এই অবদান অব্যাহত থাকবে বলে ব্লুমবার্গের গবেষণার বরাত দিয়ে শনিবার তিনি এসব কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, সেই তথ্যের ভিত্তিতেই আমি বলছি, প্রবৃদ্ধিতে আমরা কানাডার সমান। স্পেন-থাইল্যান্ডের সমান। আর এটা আমার কথা নয়; আইএমফের কথা। বিশ্ব ব্যাংকের কথা।
জানা গেছে, শনিবার রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আসন্ন বাজেট নিয়ে বৈঠক করেন অর্থমন্ত্রী।
বৈঠক শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আগামী ২০১৯-২০ অর্থবছরে বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অংশীদার হবে এমন প্রভাবশালী ২০টি দেশের মধ্যে একটি হচ্ছে বাংলাদেশ। গত ৬ মে ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক আউটলুকে আইএমএফ ২০২৪ সাল পর্যন্ত বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধির যে প্রক্ষেপণ করেছে তার আলোকে ব্লুমবার্গের করা বিশ্লেষণে এ তথ্য প্রকাশ পেয়েছে বলে জানান তিনি।
আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, শুধু তাই নয়, কয়েক দিন আগে ফিজিতে এডিবির বার্ষিক সম্মেলনেও বলা হয়েছে, চমকপ্রদ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী দেশ হচ্ছে বাংলাদেশ।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থাগুলোর প্রবৃদ্ধি নিয়ে সমালোচনার জবাবে তিনি বলেন, তাদের কাজ তারা করবে; আমার কাজ আমি করব। তবে তাদের হোমওয়ার্ক করে তথ্য দেয়া উচিৎ। আমি তথ্য নিয়ে কথা বলি। আমি মানে বাংলাদেশ…। আমি সঠিক তথ্যের ভিত্তিতেই কথা বলি।
অর্থমন্ত্রী বলেন, আমি কারো নাম বলছি না, তবে অনেকেই অনুমানের ভিত্তিতে কথা বলেন। আমি তাদের চ্যালেঞ্জ করে বলছি, আসেন গোলটেবিল আলোচনায় বসি। আমি বা বিবিএস যে তথ্য দিচ্ছে সেটা যে সঠিক তা প্রমাণ করে ছাড়ব।
তিনি বলেন, দুঃখ একটাই, বিশ্ব ব্যাংক-আইএমএফ-এডিবি আমাদের প্রশংসা করছে। আর আমাদের এখানকার কয়েকজন সেটা মেনে নিচ্ছে না বা মেনে নিতে পারছে না।
এ সব সংগঠনের কাজই সরকারের সমালোচনা করা। তারা বছরে কিছু প্রোগ্রাম করে আর সরকারের সমালোচনা করে। এটা তাদের বাৎসরিক রুটিন হয়ে গেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, জিডিপির তুলনায় আমাদের ট্যাক্স অনেক কম। ১০ থেকে এখন ৯ এ নেমে এসেছে। এটা অবশ্যই বাড়ানো দরকার। তবে এটাও মনে রাখতে হবে যে, ট্যাক্স-জিডিপি অনুপাত কম হলেই যে প্রবৃদ্ধি কমবে এটা ঠিক নয়। আমাদের অর্থনীতির প্রায় ৮০ শতাংশই ইনফরমাল ইকনোমি। এই ইনফরমাল ইকনোমি জিডিপিতে সবচেয়ে বড় অবদান রাখছে।
তিনি বলেন, গত কয়েক বছরে কর রাজস্ব ভালোই বেড়েছে। ২০০৯-১০ অর্থবছরে কর আদায়ের পরিমাণ ছিল ৬৩ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে সেটার লক্ষ্য ধরা আছে ২ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। হয়ত লক্ষ্যের পুরোটা আদায় হবে না। কিন্তু কাছাকাছি তো হবে। হিসাব করলে দেখা যাবে, এই কয় বছরে কর আদায়ের পরিমাণ চার গুণ বেড়েছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, আগামী অর্থবছর থেকেই নতুন ভ্যাট আইন কার্যকর করা হবে। এ বিষয়ে নির্ধারিত সময়ের আগেই রাজস্ব বোর্ডের প্রস্তুতি শেষ করতে হবে। ভ্যাট আইনের যেসব ধারায় ব্যবসায়ীরা আপত্তি জানিয়েছেন তা নিয়ে এনবিআরকে ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে সংলাপে বসে সমাধান করতে হবে। এ ক্ষেত্রে এনবিআরের কোনো দুর্বলতা মেনে নেওয়া হবে না।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন