আমরা দুঃসময়ে পতিত হয়েছি : ওবায়দুল কাদের

সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণার রায় প্রকাশের পর উদ্ভুত পরিস্থিতিতে নেতা-কর্মীদেরকে সতর্ক করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। পরিস্থিতিকে দুঃসময় বলে বর্ণনা করে তিনি বলেছেন, ষড়যন্ত্র চলছে। বিএনপির সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করছে।

শুক্রবার বিকালে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।

বিচারক অপসারণ ক্ষমতা সংসদে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হয়েছে গত ১ আগস্ট। এই রায়ে ষোড়শ সংশোধনী ছাড়াও সংসদ ও শাসন ব্যবস্থা সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করা হয়েছে। এসব মন্তব্যে আওয়ামী লীগ ও সরকার যতটা রকম ক্ষুব্ধ, ততটাউ উৎফুল্ল বিএনপি। এই রায়ের পর সরকারকে পদত্যাগের আহ্বানও জানিয়েছেন বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আবার আমরা দুঃসময়ে পতিত হয়েছি। চক্রান্তের মুখে পড়েছি। ষড়যন্ত্র চলছে। বাংলাদেশের উন্নয়ন ও শেখ হাসিনার অর্জনকে পণ্ড করার জন্য।’

নেতা-কর্মীদেরকে সতর্ক করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আজ আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। এই অপশক্তিকে প্রতিরোধ করতে হবে। দেশের জনগণকে সাথে এদের ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে হবে। সেই লক্ষ্যে আমাদের মানসিক, রাজনৈতিক এবং সাংগঠনিকভাবে প্রস্তুত হতে হবে এ অপশক্তিকে প্রতিরোধ করতে।’

বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘একটি দল বিষধর সাপের মত সুযোগ পেলেই ছোবল মারে।’

তবে বিএনপির উদ্দেশ্য কখনও সফল হওয়ার নয় মন্তব্য করে কাদের বলেন, ‘তারা জনগণকে পাশে পায় না। আবার গর্তে ঢুকে যায়। ইস্যুর পর ইস্যু খুঁজে। সবই ইস্যুই তাদের মাঠে মারা যায়। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় এদের রাজনীতি পথে সংকটের দীর্ঘ ছায়া পড়ে। তাই এরা সন্ত্রস্ত্র।’

‘আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়কে কেন্দ্র করে গর্ত থেকে উঠে লাফালাফি শুরু করে দিয়েছে’ বলেও মন্তব্য করেন কাদের। তিনি বলেন, ‘ভাব দেখে মনে হয় তারা ক্ষমতার সিংহ দরজার কাছাকাছি চলে এসেছে।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপির শাসনামল মানেই হলো সারি সারি লাশ। লুটপাটের হাওয়া ভবনের অপর নাম হচ্ছে বিএনপি। তারা আবার ক্ষমতায় আসলে দেশ ভয়ঙ্কর অমানিশায় পতিত হবে।’

আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রশংসাও করেন কাদের। বলেন, ‘আমি জেনে খুব খুশি হয়েছি যে স্বেচ্ছাসেবক লীগে টাকা দিয়ে কোন পদ দেয়া হয় না। এটা যারা করে তারা দলের, নিজের এবং দেশের ক্ষতি করে। আমি তোমাদের অনুরোধ করবো যোগ্য কর্মীদের মূল্যায়ন করতে।’

‘দলভারী করার জন্য খারাপ লোকদের এ পার্টিতে জায়গা দেবে না। খারাপ লোকদের নিয়ে দল ভারীর কারার আমাদের দরকার নেই’- সংগঠনের নেতৃত্বে থাকা নেতাদেরকে বলেও ওবায়দুল কাদের।

বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে হলে তাকে অনুসরণ করে তার মত হতে হবে বলেও মনে করেন ওবায়দুল কাদের। বলেন, ‘আগস্ট মাসে আমরা বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করি। শোক করি, চোখের পানি ফেলি। কিন্তু আমাদের আজ মনে রাখতে হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজ কোন শোকের নাম নয়, তিনি আজ চেতনার নাম এক শক্তির নাম। এ দিনে আমরা শপথ নিব বঙ্গবন্ধুর চেতনায় মানুষের মত মানুষ হব। তাঁর মতো কর্মী হব। কর্মী থেকে নেতা হব। লড়াই করবো সংগ্রাম করব। ভোগ করবো না, ত্যাগ করব।’

স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা মোহাম্মদ আবু কাওছারের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ দেবনাথের সঞ্চলনায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, সংসদ সদস্য শেখ ফজলে নুর তাপস প্রমুখ।