আমার ও দেশের ওপর অনেক বালা মুসিবত : ইউনূস

অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এখন রমজানের দিন। আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করেন, বালা-মুসিবত থেকে আমরা যেন বাঁচতে পারি। আমাদের ওপর অনেক বালা-মুসিবত। ব্যক্তিগতভাবে আমার ওপর অনেক বালা-মুসিবত। আমার যারা সহকর্মী, তাদের ওপর অনেক বালা-মুসিবত। দেশের ওপর বালা-মুসিবত। এর থেকে মুক্তির জন্য দোয়া করুন।

গতকাল ঢাকার আদালত চত্বরে সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারী কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে করা মামলায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করেছেন আদালত। একই সঙ্গে তিনি আগামী ২ মে পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন। এর আগে দুপুর ১টার দিকে ড. মুহাম্মদ ইউনূস আদালতে হাজির হন।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, দেশে বালা-মুসিবত হচ্ছে। মানুষ যেভাবে বাঁচতে চায়, যেভাবে থাকতে চায়, সেভাবে থাকতে পারছে না। আইনের শাসন বলে যে জিনিস, সেটা আমরা কোথাও পাচ্ছি না। আপনারা (সাংবাদিক) রোজ সেটি লিখছেন। আপনাদের কাছ থেকেই তো আমরা শিখছি। তিনি বলেন, আমরা নিজ নিজ দিকে তাকাই। আমরা নিজ নিজ ভূমিকা পালন করতে পারছি কি না। আমরা যেটা করতে চাচ্ছিলাম, সেটা করতে পারছি কি না? সেটা না করতে পারলে কীভাবে আমরা প্রতিবাদ জানাব? কীভাবে আমরা কথা শোনাতে পারি? শোনাবার পথ আমরা বের করি। পথ আমাদের বের করতেই হবে। এটা ছাড়া কোনো উপায় নেই।

তিনি বলেন, সামনে ঈদ আসছে। আমরা যেন সত্যি সত্যি ঈদ উদ্?যাপন করতে পারি। তারপর পয়লা বৈশাখ। সব খুশি একসঙ্গে আসছে। দেশে বালা-মুসিবত। এসব বালা-মুসিবত অতিক্রম করতে না পারলে আমাদের মুক্তি নেই, রেহাই নেই। ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আমি নিজের বালা-মুসিবতের কথা বললাম। দেশের বালা-মুসিবতের কথা বললাম। পৃথিবীর বালা-মুসিবত আমাদের ঘিরে আছে। সেই বালা-মুসিবত থেকে আমাদের উদ্ধার করতে হবে।

 

অর্থ আত্মসাৎ মামলায় ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ : গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারী কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে করা মামলায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করেছেন আদালত। একই সঙ্গে মামলাটি বিচারের জন্য ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এ বদলির আদেশ দেওয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আস সামছ জগলুল হোসেন এ চার্জশিট গ্রহণ করে আগামী ২ মে মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করেন। এদিন দুপুর পৌনে ১টার দিকে আদালতে উপস্থিত হন ড. ইউনূসসহ অন্য আসমিরা। গত ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে ড. ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান। তিনি গত বছরের ৩০ মে গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ড. ইউনূসসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় প্রথমে আসামি ছিলেন ১৩ জন। চার্জশিটে নতুন একজন আসামি বেড়েছে। ড. ইউনূস বাদে চার্জশিটের অন্য আসামিরা হলেন- গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাজমুল ইসলাম, পরিচালক, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক পারভীন মাহমুদ, নাজনীন সুলতানা, মো. শাহজাহান, নূরজাহান বেগম, পরিচালক এস এম হাজ্জাতুল ইসলাম লতিফী, অ্যাডভোকেট মো. ইউসুফ আলী, অ্যাডভোকেট জাফরুল হাসান শরীফ, গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. কামরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ মাহমুদ হাসান, প্রতিনিধি মো. মাইনুল ইসলাম ও দফতর সম্পাদক কামরুল ইসলাম।