আরো বেড়েছে যমুনার পানি, ডুবছে নতুন নতুন এলাকা

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারী বর্ষণে সিরাজগঞ্জের যমুনা নদীর পানি আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই সঙ্গে বন্যার পানিতে ডুবছে জেলার নতুন নতুন এলাকা। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার পুঠিয়াবাড়ী, চরমালশাপাড়াসহ বাঁধ অভ্যন্তর ইতিমধ্যে বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। এছাড়া নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের বিভিন্ন্ ফসল ডুবে গেছে। জেলার নতুন নতুন এলাকার বাড়িঘরেও প্রবেশ করতে শুরু করেছে যমুনার পানি।
এছাড়া জেলার অভ্যন্তরীণ ফুলজোড়, করোতোয়া, ইছামতি, বড়ালসহ বিভিন্ন নদ-নদী ও খাল বিলেও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, যমুনা নদীর পানি বাড়ায় সিরাজগঞ্জের কাজিপুর, বেলকুচি, শাহজাদপুর, চৌহালী ও সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নিম্নাঞ্চল ডুবে গেছে। এতে পাট, বাদাম, তিল, কাউন, এবং বিভিন্ন প্রকার সবজিসহ ফসল ডুবে গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় কাজিপুর পয়েন্টে ২০ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে ওই এলাকায় বিপৎসীমার ২৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে যমুনার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। তবে গড়ে বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে যমুনার পানি প্রবাহিত হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম জানান, জেলার কোথাও কোনো ঝুঁকিপূর্ণ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নেই। তবে নদী তীরবর্তী কিছু কিছু এলাকায় ভাঙন অব্যাহত রয়েছে।
তিনি আরও জানান, ইতোমধ্যে ভাঙন এলাকাগুলোতে ৪০ হাজার জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। এছাড়া ভাঙনরোধে ৩০ হাজার জিও ব্যাগ প্রস্তুত রাখা হয়েছে এবং ৯৬ হাজার জিও ব্যাগের জন্য দরপত্র আহবান করা হয়েছে। বাঁধসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো নজরদারীতে আছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা আকতারুজ্জামান জানান, বন্যাদুর্গত বানভাসি মানুষের মাঝে বিতরণের জন্য ইতোমধ্যেই ৯১১ মেট্রিক টন চাল, নগদ ২০ লাখ টাকা এবং ৪ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ পাওয়া গেছে।
ত্রাণ বিতরণের জন্য স্ব স্ব এলাকার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছ ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা চাওয়া হয়েছে। এছাড়া চৌহালী উপজেলার ভাঙন কবলিত ২৭১ পরিবারের মধ্যে আগামী ২১ জুন শুকনো খাবার বিতরণ করা হবে বলেও তিনি জানান ।
জেলার এনায়েতপুর থানার খুকনি ইউনিয়নে যমুনার ভাঙনকবলিত ব্রাহ্মনগ্রামসহ ডানতীরের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন পানিসম্পদ সচিব কবীর বিন আনোয়ার। এ সময় তিনি বলেন, এনায়েতপুরে যমুনার ভাঙনরোধে ইতোমধ্যেই সাড়ে ৬০০ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে। ভাঙন ঠেকাতে জরুরী কাজ চলছে।