আর কত দিন মামা বাড়ি! এতিম সেলিমের ঠাঁই দরকার

২বছর বয়সে বাবাকে হারিয়েছে সেলিম। দেড় বছরের মাথায় মা শিরিনা খাতুন অন্যত্র বিয়ে করে চলে গেছেন স্বামীর বাড়ি। জন্মের তিন বছরের মাথায় পিতার ভিটেটুকুও বিলীন হয়েছে নদী গর্ভে। সেলিমের ভাই-বোন, চাচা-দাদা কেউ নেই। আশ্রয় নিয়েছে মামা বাড়িতে। সেই থেকে সেলিমের ঠিকানা মামা আশরাফ আলীর ঝুপড়ি ঘর। পোষাক কারখানার শ্রমিক আশরাফের স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে সোনামুখী পূর্বপাড়ার বাড়িতে এক ঘরে থাকা কষ্টকর। চাকুরির সুবাদে আশরাফ আলী থাকেন ঢাকায়। এক প্রকার অবজ্ঞা আর অবহেলায় বেড়ে ওঠা ১২ বছরের সেলিম এখন মামার সংসারেও বোঝা। গ্রামের স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী এই সেলিম এখন পেটের তাগিদে পাশের বাড়ির এক রং মিস্ত্রির সহযোগী হিসেবে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে।

সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার সোনামুখী পূর্বপাড়ায় মামাবাড়িতে বেড়ে ওঠা এতিম শিশু সেলিমের মাথা গোঁজার একটি ঠাঁই দরকার। ইতোমধ্যে কাজিপুর উপজেলা প্রশাসন সোনামুখী পূর্বপাড়ার খাসজমিতে সরকারীভাবে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণ করছেন। সেখানে প্রায় ১২-১৪টি পরিবারকে ঘর প্রদান করা হবে। এতিম সেলিমের মামাবাড়ির সাথেই এই ঘরগুলো নির্মিত হচ্ছে।

সোমবার (৪ এপ্রিল) বিকেলে সরেজমিন সোনামুখী পূর্বপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের কাজ দেখতে গেলে শিশু সেলিমকে নিয়ে প্রতিবেশিরা এগিয়ে আসেন। এসময় এতিম সেলিমের একটি ঘরের জন্যে এই প্রতিবেদককে তারা পত্রিকায় লিখতে অনুরোধ করেন।

বৃদ্ধ শুক্কুর আলী জানান, “ছেলেটি বাবার আদর পেলোনা, মা থেকেও নেই। এখন ধীরে ধীরে বড় হচ্ছে। মামার সংসারে আর কয়দিন! এতিম এই ছেলেটির একটি ঘর দরকার। সরকার এখানে একটি ঘর দিলে আমরা তার অভিভাবক হিসেবে দেখে রাখতে পারতাম।”
সোনামুখী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান আলী খান জানান, “অনাথ ছেলেটির জন্যে আমি ইউএনও কে সুপারিশ করবো। ওর একটি ঠাঁই দরকার।”

কাজিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদ হাসান সিদ্দিকী জানান, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে দেশব্যাপী অসহায় ছিন্নমূল মানুষদের বসবাসের ব্যবস্থা করে দিচ্ছে। খোঁজ নিয়ে আমরা সেলিমের বিষয়ে ব্যবস্থা নেবো।”