আলী জিন্নাহ’র ঘুম কেড়েছিলেন দার্জিলিংয়ের এক রূপসী!
শৈলশহর দার্জিলিং সাক্ষী এক ঐতিহাসিক প্রেমের। যে প্রেম ভবিষ্যৎ পাকিস্তানের জাতির পিতাকে পরিপূর্ণ করেছিল। নিঝুম, নিস্তব্ধ হিমেল বাতাসে ঘেরা শহরের রাস্তায় এক অসাধারণ রূপসীর দীঘল চোখ পাগল করে দিয়েছিল রাশভারি ব্যারিস্টারকে। এ এমনই এক রূপকথা। যে কাব্য ছড়িয়ে আছে দার্জিলিং শহরের আনাচে কানাচে। ১৯১৭ সালের সেই ভালবাসার শতবর্ষ পূর্ণ হল।
মুহাম্মদ আলী জিন্না ও রতনবাই পেটিটের ভালবাসার সাক্ষী দার্জিলিং। দূরে হিম শীতল কাঞ্চনজঙ্ঘা আর পাইনের সারি। জনহীন জলাপাহাড়, ঠাণ্ডায় থমকে থাকা পাহাড়ি বাঁক সর্বত্রই তাদের দুজনের কথা। বলাই বাহুল্য, দার্জিলিং যেন মিশে গিয়েছে আধুনিক পাকিস্তানের জনকের জীবনে।
প্রথম স্ত্রী এমিবাইয়ের প্রয়াণের পর নিঃসঙ্গ হয়ে গিয়েছিলেন মুহাম্মদ আলী জিন্না।
এমনই অবস্থায় দার্জিলিং সফর তার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল। ১৯১৭ সালে শৈলশহরে এসেছিলেন তিনি। আইনের জটিল প্যাঁচে অভ্যস্ত জিন্না সাহেব এখানে পড়লেন প্রেমের গভীর সাগরে।
ঘটনা এরকম। মুম্বাইর বিখ্যাত পার্সি ব্যবসায়ী স্যার দিনশো পেটিটের সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল জিন্না সাহেবের। আর দিনশো পেটিটের প্রিয় স্থান দার্জিলিং শহর। স্ত্রী বিয়োগের পর হতাশ জিন্নাকে এই দার্জিলিং শহরেই আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন স্যার দিনশো। মুম্বাইর গরম থেকে শীতল দার্জিলিংয়ে এসে মোহিত হয়ে গিয়েছিলেন জিন্না সাহেব। তাকে আরও মোহিত করে দিয়েছিল স্যার দিনশোর কন্যা রতনবাই পেটিট।
স্যার দিনশো অতিথির আতিথেয়তার কোথাও কোন কার্পণ্য করেননি। চল্লিশ বছরের জিন্নাকে স্বাগত জানিয়েছিলেন আধুনিকা রতনবাই পেটিট। মোহিত জিন্না পরে স্যার দিনশোকে বলেন, আপনার কন্যার কি বিধর্মে আপত্তি আছে? আপনার এ বিষয়ে মতামত কী?
সুচতুর ব্যারিস্টার জিন্নার প্রশ্নে ক্ষুরধার ব্যবসায়ী পর্যন্ত চমকে যান পরে স্যার দিনশো বলেন, বিয়ে একটি সামাজিক বিধান তাই একটি সমাজের সাথে অপর সমাজের গ্রহণযোগ্যতাও বিবেচনা করতে হবে।
ততদিনে রতনবাই পেটিটও জিন্নার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছেন। অগত্যা তারা দুজনেই পরিবারের অমতে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। ধর্ম পরিবর্তন করে পার্সি থেকে ইসলাম গ্রহণ করেন রতনবাই।
বিয়েটা হয়েছিল ১৯১৮ সালে। জিন্না সহধর্মিনী হয়েছিলেন রতনবাই। বাকিটা ইতিহাস। যে ইতিহাসে মিশে আছে দার্জিলিং শহর আর তার স্নিগ্ধ জীবন। ১৯২৯ সালে মাত্র ২৯ বছর বয়সে প্রয়াত হন রতনবাই। দার্জিলিং শহর থেকে প্রেমের ধারা মিশে গিয়েছিল আরব সাগর তীরের মুম্বাই শহরে।
সুত্রঃ কলকাতা ২৪
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন