ইউক্রেন থেকে ফিরলেই বিয়ে করার কথা ছিল হাদিসুরের

রাশিয়ার চলমান সংকটের মধ্যে ইউক্রেনে আটকে পড়া বাংলাদেশি জাহাজ ‘এমভি বাংলার সমৃদ্ধিতে’ রকেট হামলায় আঘাতে ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান আরিফ নিহত হয়েছেন। তার গ্রামের বাড়ি বরগুনার বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নে চলছে শোকের মাতম।

বুধবার স্থানীয় সময় ভোর ৫টা ১০ মিনিটে ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরের ‘এমভি বাংলা সমৃদ্ধি’ জাহাজে রকেট হামলা হয়। এ ঘটনায় মারা যায় হাদিসুর। তিনি ওই জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত ছিলেন বলে জানা গেছে।

হাদিসুরের চাচা বেতাগী উপজেলা চেয়ারম্যান মাকসুদুর রহমান ফোরকান বলেন, আমার চাচাতো ভাই মাদরাসাশিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদারের ছেলে হাদিসুর। চার ভাই-বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। চট্টগ্রাম মেরিন একাডেমি থেকে লেখাপড়া করে বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার পদে যোগ দেন তিনি।

বুধবার রাত ১০টার পর ইউক্রেন থেকে ওই জাহাজে থাকা নাবিকরা হাদিসুর রহমানের বাড়িতে ফোন করে তার নিহতের খবর জানায়।

উপজেলা চেয়ারম্যান আরও বলেন, নিহত হাদিসুর রহমানের বয়স ৩৩। পারিবারিকভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, এবার বাড়ি ফিরলে তাকে বিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু তার আগেই সব শেষ হয়ে গেল। আমরা এখন দুশ্চিন্তায় আছি হাদিসুরের মরদেহ দেশে কীভাবে আনব। যুদ্ধের কারণে যেখান থেকে জাহাজই বের হতে পারছে না, সেখানে হাদিসুরের মরদেহ নিয়ে আসাটা আদৌ সম্ভব হবে কি না, তা নিয়েও উদ্বেগ বাড়ছে।

মাকসুদুর রহমান ফোরকান বলেন, সকালে জেলা প্রশাসকের কাছে যাব, মরদেহ দেশে আনার বিষয়ে সহযোগীতা চাইব।

হাদিসুর রহমানের মৃত্যুর খবর আসার পর পুরো এলাকায় শোক নেমে এসেছে- জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা আগে থেকেই বিচলিত ছিলাম। কারণ, হাদিসুর পাঁচ দিন আগে তার মাকে মোবাইলে জানিয়েছিল, যুদ্ধে আটকা পড়েছে। ফিরে আসতে পারবে কি না, তা নিয়ে সেও সন্দেহ প্রকাশ করেছিল। শেষ পর্যন্ত সেটাই সত্য হলো। হাদিসুর আমাদের ছেড়ে চলে গেল।