ইনজেকশনে যারা ভয় পান, তাদের জন্য নতুন প্রতিষেধক ব্যবস্থা

চামড়ার ওপর ছোট্ট একটুকরো স্টিকিং প্লাস্টার ব্যবহার করে এখন ফ্লু-র প্রতিষেধক টিকা নেওয়া যাবে। এতে কোন ব্যথা লাগবে না। এই অভিনব ফ্লু প্রতিষেধক মানুষের ওপর প্রাথমিতভাবে পরীক্ষা করে দেখা গেছে এটি নিরাপদ। খবর বিবিসির।

প্লাস্টারের আঠালো অংশটিতে আছে একশ’ ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র চুলের মত সূক্ষ্ম সূঁচ যা ত্বক ভেদ করে প্রতিষেধক শরীরের ভেতর পৌঁছে দেবে। মানুষ নিজেই এই প্লাস্টার শরীরে লাগিয়ে নিতে পারবে।

এতে করে আরও বেশি সংখ্যক মানুষ এখন ফ্লুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারবে, বিশেষ করে যেহেতু তাদের চিকিৎসকের দ্বারস্থ হতে হবে না এবং সূঁচ ফোটানোর ভয়ে যারা ফ্লুর প্রতিষেধক এখন নেন না তারাও বিনা ব্যথায়এই প্যাচ ব্যবহার করে ফ্লুর সংক্রমণ এড়াতে পারবেন।

সাধারণত ফ্লুর প্রতিষেধক ইনজেকশান এখন ফ্রিজে রাখতে হয়, এই প্যাচ প্লাস্টারে সেটার প্রয়োজন হবে না। ফলে ওষুধের দোকানে এই প্যাচ সহজে মজুত রাখা যাবে এবং দরকার হলে মানুষ এটা কিনে নিতে পারবেন। যারা পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন তারা বলেছেন ইনজেকশানের থেকে এটা তারা বেশি পছন্দ করেছেন।

বর্তমান প্রতিষেধক যতটা কার্যকর এই প্যাচ ঠিক একইরকম কার্যকর হবে। এটি উদ্ভাবন করেছে যৌথভাবে এমোরি বিশ্ববিদ্যালয় এবং জর্জিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি এবং এই গবেষণা প্রকল্পের অর্থায়ন করেছে আমেরিকার জাতীয় স্বাস্থ্য সংস্থা।

চামড়া ভেদ করে এই প্যাচের প্রতিষেধক ওষুধ পেশিতে প্রবেশ করে এবং ফ্লু প্রতিরোধের ক্ষমতা তৈরি করে। পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের কেউ কেউ বলেছেন তাদের চামড়ায় কিছু লালভাব ও চুলকানি হয়েছে, কিন্তু কয়েকদিনের মধ্যেই তা চলে গেছে।

গবেষকরা বলছেন এই প্লাস্টার ব্যবস্থার মাধ্যমে টিকা দেওয়া চালু করতে পারলে তা বিভিন্ন প্রতিষেধক টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে একটা বিপ্লব আনবে। তবে বাজারে এই প্লাস্টার প্যাচ ছাড়ার আগে আরও কিছু পরীক্ষানিরীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে।

গবেষকরা বলছেন এই প্যাচ যেহেতু ব্যবহার করা সহজ, এবং এগুলো নির্দিষ্ট কোন তাপমাত্রায় রাখার প্রয়োজন হয় না, এগুলো উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ব্যবহারের জন্য খুবই উপযোগী হবে।