ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিকম্প-সুনামি : নিরুপায় হয়ে মৃতদের গণকবর

ইন্দোনেশিয়ায় শুক্রবারের ভয়াবহ ভূমিকম্প ও সুনামিতে নিহতদের গণকবরে দাফন শুরু করেছে স্বেচ্ছাসেবক দল।

সোমবার পর্যন্ত সংগৃহীত তথ্য অনুসারে নিহতের সংখ্যা কমপক্ষে ৮৪৪ জন। ৭.৫ মাত্রার ভূমিকম্প ও পরবর্তী তীব্র সুনামিতে সুলাওয়েসি দ্বীপের পূর্বাঞ্চল পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে গেছে।

এই অবস্থায় এত বেশি সংখ্যক মৃতদেহ সৎকারে নিরুপায় হয়ে গণকবরের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

উদ্ধারকারীরা এখনো বেশি কিছু প্রত্যন্ত এলাকায় পৌঁছাতে পারেনি। তাই আশঙ্কা করা হচ্ছে মৃতের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে যাবে।

বিবিসি জানায়, ভূমিকম্প ও সুনামি আক্রান্ত বিভিন্ন এলাকায় ধ্বংসস্তুপের নিচে এখনো অনেক মানুষ আটকা পড়ে আছে। কিন্তু ভারী সরঞ্জামের অভাবে ধসে পড়া বড় বড় ভবনের ভেতর থেকে জীবিতদের বের করার চেষ্টা ব্যাহত হচ্ছে।

পালু শহরের শুধু একটি হোটেলের ধ্বংসস্তুপের নিচেই অন্তত অর্ধশত মানুষ চাপা পড়ে আছে বলে আশঙ্কা উদ্ধারকারীদের।

পালুর দক্ষিণে সিগিতে একটি ধসে পড়া চার্চে মাটি আর ধ্বংসাবশেষের ভেতরে ৩৪টি শিশুর মরদেহ পাওয়া গেছে। তারা একটি ‘বাইবেল ক্যাম্পে’ অংশ নিতে সেখানে গিয়েছিল বলে জানান ইন্দোনেশিয়া রেড ক্রস মুখপাত্র আউলিয়া আরিয়ানি।

শুক্রবার স্থানীয় সময় বিকেল থেকে ইন্দোনেশিয়ার সুলাওয়েসি দ্বীপের কেন্দ্রে অবস্থিত ডংগালা এলাকায় পর পর বেশ কয়েকটি ভূমিকম্প আঘাত হানে। এর মধ্যে সন্ধ্যা ৬টা ২ মিনিটে আঘাত করা ভূমিকম্পটি ছিল রিখটার স্কেলে ৭.৫ মাত্রার।

এর কিছুক্ষণের মধ্যেই দেশটিতে আঘাত হানে প্রলয়ঙ্করী এক সুনামি। ভূমিকম্পের পরপরই ওই এলাকায় সুনামি সতর্কতা জারি করে ইন্দোনেশিয়ার ভূ-তাত্ত্বিক সংস্থা। কিন্তু এক ঘণ্টার মধ্যেই সেই সতর্কতা তুলে নেয়া হয়। আর ওই সময় আঘাত করে তীব্র জলোচ্ছ্বাস।

জলোচ্ছ্বাসের বিশাল ঢেউয়ের তোড়ে খড়কুটোর মতো ভেসে যায় পালু শহর ও এর আশপাশের উপকূলীয় পুরো এলাকার ভবন, স্থাপনা। ০.৫ মিটার থেকে ৩ মিটার (১০ ফুট) পর্যন্ত উঁচু পানির দেয়াল খেলনা গাড়ির মতো ছুড়ে ফেলে দেয় ভারী ভারী যানবাহনকে।