ইবিতে ব্যাচ ডে উৎসবে দু’গ্রুপের মারামারি, আহত-৩
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের অবতরণিকা উৎসবে টি-শার্ট বিতরণ নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রায় তিনজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তাদেরকে তাৎক্ষণিক ইবি মেডিকেল কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়।
বৃহস্পতিবার (১৬ই মার্চ) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা মঞ্চে এ ঘটনা ঘটে। পরে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা মঞ্চে ২০২০ ২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ব্যাচ ডের “অবতরনিকা উৎসব” চলছিলো। উৎসবে টি-শার্ট বিতরণের দায়িত্বে ছিল ইতিহাসের সংস্কৃতি বিভাগের মুশফিকুর রহমান। তিনি সবাইকে টি-শার্টগুলো গুনে দিচ্ছিলেন। ব্যবস্থাপনা বিভাগের সিআর তাসিন ইসলাম রাহিন এলোমেলো ভাবে টি-শার্ট নিতে গেলে মুশফিক তাতে বাধা দেন। এ সময় তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। পরে দুপুরের দিকে এর জের ধরেই রাহিন ও একই বিভাগের শিক্ষার্থী রাব্বি ফকির ও ল এন্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের মোবারক হোসেন আশিকে নেতৃত্বে একই বিভাগের মাহমুদ ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের শরিফসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী একত্রিত হয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করে। এতে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী রানা আহমেদ অভি, মুশফিকুর রহমান ও সাব্বির রহমান শাওনসহ ৩ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। পরে অভিযুক্তরা ঘটনাস্থল দ্রুত ত্যাগ করেন। পরে আহতদের দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়। কর্তব্যরত ডাক্তার তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন।
আহত শিক্ষার্থী মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘অনুষ্ঠান চলাকালীন হুট করেও আমাদের উপর পরিকল্পিত অতর্কিত আক্রমণ করে। আমরা কিছু বুঝে উঠার আগেই তারা বাশ ও লাঠি দ্বারা আমাদের মারধর করে পালিয়ে । এই হামলা পুরোপুরি পূর্ব পরিকল্পিত। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ল’ এন্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী মোবারক হোসেন আশিক বলেন, মারামারির সময় আমি ফুটবল মাঠে ছিলাম। পরে ঝামেলা হতে দেখে সেখানে এগিয়ে যায়। সেখানে গেঞ্জি বিতরণ নিয়ে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থীদের সাথে ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থীদের ঝামেলা হয়। এ ঘটনায় আমি কোনোভাবেই জড়িত নই। কেনো আমার নাম জড়ালো আমি নিজেও বুঝতেছিনা।
বিষয়ে অভিযুক্ত ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী তাসিন ইসলাম রাহিন বলেন, আমাদের ব্যাচমেটদের মধ্যে বেশকিছু বিষয় নিয়ে কথা-কাটাকাটি হয়েছিল। এক পর্যায়ে হাতাহাতিও হয় তবে অতর্কিত হামলা বা তাদেরকে উদ্দেশ্য প্রণীত ভাবে আক্রমণ করা হয় নি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলের ডা. এস এম শাহেদ হাসান বলেন, আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।৬ এখন আপাতত পর্যবেক্ষণে রেখেছি। লাঠি দিয়ে মারার ফলে কয়েকজন ঘাড়ে ও মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়েছে। আপাতত ওদের বাসায় পাঠিয়ে দিয়েছি। পরবর্তীতে গুরুতর কিছু দেখলে আমি সদরে হাসপাতালে স্থানান্তর করে দিবো।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মুর্শিদ আলম বলেন, মারামারির ঘটনা শুনেই আমি দ্রুত হাসপাতালে এসেছি। আহতদের পর্যাপ্ত চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। ওদের লিখিত অভিযোগ দিয়েছো। লিখিত অভিযোগ অনুসারে তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগেও এ বর্ষের শিক্ষার্থীরা এই উৎসবকে কেন্দ্র করে নিজেদের মধ্যে গ্রুপিং করে মারামারির ঘটনা ঘটান। এতে অভিযুক্ত আশিক জড়িত ছিলেন বলে জানা যায়। এই ঘটনায় তাদের মধ্যে ছাত্রলীগ সমঝোতা করিয়ে দেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন