ইসরায়েলি পার্লামেন্ট থেকে আরব এমপির পদত্যাগ

ইসরায়েলি পার্লামেন্ট থেকে পদত্যাগ করেছেন আরব বংশোদ্ভূত এক এমপি। ইসরায়েলের ঘোষণা দেওয়া নতুন এক বিতর্কিত আইনের কারণে পদত্যাগ করলেন তিনি। ইসরায়েলের পার্লামেন্টে বর্ণবাদী আইন পাস করার প্রতিবাদেই তিনি তার পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন। সরকারবিরোধী জায়োনিস্ট ইউনিয়ন পার্টির এমপি জুহেইর বহলুল গতকাল নিজের পদত্যাগের ঘোষণা দেন।

জুহেইর বহলুল নামের ৬৭ বছর বয়সী ওই রাজনীতিবিদ এই আইন প্রণয়নের কারনে সংসদকে বর্ণবাদী এবং ধ্বংসাত্মক হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। ইসরায়েল ঘোষিত এই নতুন আইনে আরবির উপরে হ্রিব্রু ভাষাকে সরকারি ভাষা হিসেবে নিয়ে আসা হয়েছে।

ইসরায়েল এর টিভি নেটওয়ার্ক রিশেতকে ওই এমপি বলেন, এই আইনের ফলে ইসরায়েলে আরব নাগরিকদের জন্য সমতার জায়গাটি আর থাকলো না। তার মতে, সম্প্রতি পার্লামেন্টে পাস হওয়া আইনে ইসরায়েলে বসবাসরত আরব নাগরিকদের সম অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। চলতি বছরের ১৯ জুলাই এই আইনটি পাশ হলে দেশটিতে বসবাস করা সংখ্যালঘু আরব নাগরিকদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়।

নেসেটে আরব সদস্যরা ওই আইনের বিলের কপি ছিড়ে ফেলে এবং এর বিরুদ্ধে চিৎকার করেছে। এর আগে বেশ কয়েকজনকে চেম্বার থেকে বের করে দেয়া হয়।

শনিবার বিরোধী দলীয় জিওনিস্ট ইউনিয়ন পার্টির ওই এমপি বলেন, আমি নেসেট থেকে পদত্যাগ করছি। আমার এই বিষয়ে প্রতিবাদ করা উচিত। আমি কি এই ধ্বংসাত্মক, বর্ণবাদী, চরমপন্থী সংসদকে বৈধতা দেবো? তাদের সমর্থন করবো? তিনি আরও বলেন, আমি আমার নাতিকে এটা বলতে পারবো না যে আমি নেসেটের সদস্য ছিলাম।

এই বিল পাশ হওয়ার পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহু এটাকে দেশের ইতিহাসের একটি যুগান্তকারী ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করে এর প্রশংসা করেন। তিনি আরো বলেন, ১২২ বছর পর ইহুদিবাদের প্রতিষ্ঠাতা হার্জেল এর স্বপ্ন পূরণ হলো। এই আইনের মাধ্যমে আমরা আমাদের অস্তিত্বের প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছি।

এই আইনকে ইসরায়েল রাষ্ট্রের ইহুদি জনগণের মৌলিক আইন অভিহিত করে তিনি বলেন, এই আইন প্রণয়ন একটি ইহুদি রাষ্ট্র হিসেবে ইসরায়েলের প্রথম এবং প্রধান দায়িত্ব।

তিনি আরো বলেন, এই আইন প্রণয়ন করা হলো কারণ ইসরায়েলের কিছু ইহুদি রাজনীতিবিদ দেশটির প্রতিষ্ঠাকালীন নীতি থেকে সরে আসছে। আর একটি ইহুদি রাষ্ট্র হিসেবে এই অবস্থা তাদের মাতৃভূমির জন্য একটা হুমকি।

কিন্তু ইসরায়েলে বসবাসরত ২০ শতাংশ আরব মুসলমান এই আইনকে ইসরায়েলের দ্বারা তাদের মর্যাদার জন্য হানিকর হিসেবে অভিহিত করেছেন।

আইন অনুযায়ী তাদের সমান অধিকার দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ইসরায়েলে বসবাসরত আরব মুসলিমরা অনেক দিন ধরেই তাদেরকে দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক হিসেবে বিবেচনা করার কারণে অভিযোগ করে আসছেন। তারা বলছেন যে নানারকম বৈষম্যের স্বীকার হতে হয় তাদরেকে। এছাড়া ইহুদিদের তুলনায় তাদের চরম মানবেতর জীবন যাপন করতে হয়।