ঈদ উপহারের টাকা তুলতে গিয়ে জানলেন এসএমএস ভুয়া

দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনায় কর্মহীন নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ২ হাজার ৫০০ টাকার ঈদ উপহার ঘোষণা করে সরকার। মোবাইলে মেসেজের মাধ্যমে এ টাকা পৌঁছে দেয়ার কথা জানানো হয়। তবে এরইমধ্যে এ নিয়ে শুরু হয়েছে নানা প্রতারণা। নওগাঁর অনেক দরিদ্র মানুষের কাছে ভুয়া এসএমএস পাঠানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, দুটি মোবাইল নম্বর থেকে তাদের এসএমএস পাঠিয়ে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (০৬ মে) নওগাঁ সদর উপজেলার বলিহার ইউনিয়নের জালালপুর গ্রামের অনেকেই এসব এসএমএস পেয়েছেন বলে সাংবাদিকদের জানান।

দরিদ্র মানুষকে ঈদ উপহার দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনপ্রতি ২ হাজার ৫০০ টাকা নগদ অর্থ সহায়তা কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। ঈদ উপহার বিতরণ শুরু করে ডাক বিভাগের মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’। জিটুপি পদ্ধতিতে তালিকাভুক্ত প্রতিটি পরিবার ২ হাজার ৫০০ টাকা করে সহায়তা পাচ্ছে, যা ঈদের আগেই বিতরণ শেষ করা হবে বলে ‘নগদ’ জানিয়েছে।

এরই মধ্যে বলিহার ইউনিয়নের জালালপুর গ্রামের বাসিন্দাদের মোবাইলে (০১৭৮২৯৭৭৩৮৫, ১৮২৬৮৪১৮২৭) নম্বর দুটি থেকে ভুয়া এসএমএস করা হয়েছে। এসএমএসে লেখা আছে, ‘করোনা পরিস্থিতিতে বিভিন্ন পেশায় কাজ হারানো পরিবারকে সাময়িক অসুবিধা মোকাবিলার লক্ষ্যে গত বছরের মতো আপনার পরিবারের জন্য ২ হাজার ৫০০ টাকা সহায়তা প্রদান করা হলো।’

জালালপুর গ্রিল জামে মসজিদের খতিব এমদাদুল হক বলেন, বুধবার (০৫ মে) বেলা সাড়ে ১১টায় আমার মোবাইলে একটি এসএমএস আসে। এসএমএস খুলতেই দেখি ২ হাজার ৫০০ টাকার অর্থ সহায়তার কথা বলা হয়েছে। সন্ধ্যার পর টাকা তুলতে গিয়ে জানলাম এটি ভুয়া এসএমএস।

জালালপুর গ্রামের আরেক বাসিন্দা জানান, বুধবার বিকেলে এসএমএস এলে মেয়েকে দেখাই। মেয়ে বলে প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকার ঈদ উপহার এসেছে। আমি গরিব মানুষ এসএমএস পেয়ে অনেক খুশি হয়েছিলাম। টাকা তুলতে দোকানে গেলে বলা হয়, এই টাকা এখান থেকে তোলা সম্ভব নয়; নওগাঁ বাজারের শরিষাহাটির মোড় বিকাশ এজেন্টের কাছে থেকে তুলতে হবে। সেখানে টাকা তুলতে গিয়ে জানলাম এসএমএস ভুয়া।

এ বিষয়ে নওগাঁ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মির্জা ইমাম উদ্দিন বলেন, সরকারের নাম দিয়ে আর্থিক সহায়তা প্রদানের ভুয়া এসএমএস দেয়ার খবর পেয়েছি আমরা। এতে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। বিষয়টি নওগাঁ সদর মডেল থানার ওসিকে জানানো হয়েছে। যেসব মোবাইল নম্বর থেকে এসএমএস দেয়া হচ্ছে, সেগুলো ট্র্যাকিং করে অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনা হবে।

নওগাঁ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম জুয়েল বলেন, এ বিষয়ে এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। তবে বিষয়টি শুনেছি। এসব ভুয়া এসএমএস দিয়ে যারা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে তাদের চিহ্নিত করে দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় আনা হবে।