উপ-মন্ত্রী শামীমের ব্যতিক্রমধর্মী উদ্যোগ: নড়িয়া-সখিপুরের প্রতিটি ইউনিয়নে উন্নয়ন সভা চালু

পানি সম্পদ উপ-মন্ত্রী ও আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীম এমপি তাঁর নির্বাচনী এলাকা শরীয়তপুর-২ (নড়িয়া-সখিপুর)’র প্রতিটি ইউনিয়ন উন্নয়ন সভার নামে একটি ব্যতিক্রমধর্মী সভা চালু করেছেন।

যে সভায় তিনি নিজে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সদস্য এবং স্থানীয় নানান শ্রেণী মানুষের কাছ থেকে সমস্যার ও সম্ভাবনা কথা শোনেন। পাশাপাশি সমস্যা নিরসনের ব্যবস্থা নেন। এ খবরে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।

নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ রাশেদউজ্জামান ও ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, শরীয়তপুর-২ নির্বাচনী এলাকা নড়িয়া ও সখিপুর থানা নিয়ে গঠিত। এর মধ্যে নড়িয়া উপজেলা ১ টি পৌরসভা ও ১৪টি ইউনিয়ন এবং ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর থানায় ৯টি ইউনিয়ন রয়েছে। “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত আমার গ্রাম, আমার শহর-গ্রাম হবে শহর” এই শ্লোগানকে সামনে রেখে ঐ ইউনিয়নগুলোতে সরকারি বরাদ্ধ, উন্নয়ন ও সম্ভাবনা এবং সমস্যা নিরসনের লক্ষ্যে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও পানি সম্পদ উপ-মন্ত্রী এক বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছেন। প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে উন্নয়ন সভা চালু করেছেন। সেখানে উপ-মন্ত্রী নিজে উপস্থিত থাকছেন। পাশাপাশি ইউএনও, এসিল্যান্ড, ওসি, উপজেলা প্রকৌশলী, পিআইও, কৃষি কর্মকর্তা, মৎস কর্মকর্তা, প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তাসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত থাকছেন। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে ইউপি সদস্য ও স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক, সাংবাদিক, আইনজীবী, কৃষক, ব্যবসায়ী, নারী উদ্যোক্তা, শিক্ষার্থী, অভিভাবক, আলেম-ওলামা, মন্দিরের পুরোহিতসহ নানান শ্রেনী পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করছেন।

এসময় সরকার থেকে প্রদত্ত বিভিন্ন সরকারি সুযোগ সুবিধা ও বরাদ্ধ এবং উন্নয়ন জনগণকে সরাসরি জানানো হচ্ছে। যেমন-বয়স্ক ভাতা, বিধাব ভাতা, টিসিবি’র পণ্য, জন্ম নিবন্ধন ঠিকভাবে পাচ্ছে কিনা তারও খোঁজখবর নিচ্ছেন। এছাড়াও এলাকায় ইভটিজিং এবং বাল্যবিবাহ বন্ধ ও মাদক প্রতিরোধে জিরো ট্রলারেন্সের কথা জানিয়ে দেয়া হচ্ছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, কমিউনিটি ক্লিনিকের সেবা ও সড়কের অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি এলাকার সম্ভাবনায় বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা করা হয়। কেউ নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কিনা তাও জানা যাচ্ছে। কারণ, একেক ইউনিয়নের সম্ভাবনা ও সমস্যা বিভিন্ন ধরনের। তাই কার্যকরী ব্যবস্থা নিতেই উপমন্ত্রী এই উদ্যোগ বলে জানিয়েছেন তিনি।

গত ৪ নভেম্বর বৃহস্পতিবার নড়িয়া উপজেলার ভূমখাড়া ইউনিয়ন পরিষদে প্রথম এ উন্নয়ন সভা হয়। ইতিমধ্যেই ডিঙ্গামানিক, বিঝারী এ সভা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সকল ইউনিয়নে চলবে এই কার্যক্রম। এতে করে ব্যাপক প্রশংসিত হচ্ছেন পানি সম্পদ উপমন্ত্রী। তার লক্ষ্য সরকারের উন্নয়ন জনগণের দ্বারগোঁড়ায় পৌছে দেয়া এবং সুশাসন ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা ।

কৃষক আব্দুস সালাম বলেন, উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম আমাদের এলাকার জলাবদ্ধতার কথা শুনেছেন এবং তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশে দিয়েছেন। আমাদের কথাও তিনি নিজে শুনতে আসেন দেখে আমরা অত্যন্ত খুশি হয়েছি।

নারীনেত্রী মুক্তা রানী বলছেন, উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীমের ভাবনাই আমাদের নড়িয়া-সখিপুরের উন্নয়ন নিয়ে। এই উন্নয়ন সভার মাধ্যমে এলাকায় আরও উন্নয়ন ও শান্তি নিশ্চিত হবে বলে আমার বিশ্বাস।

ভূমখাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন বলেন, এধরনের সভা এই প্রথম। এ সভার মাধ্যমে প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষ তাদের আশা আকাঙ্খা, সমস্যার কথা উপমন্ত্রী সহ ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষের কাছে বলতে পারছেন। আমরা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা কে কি করছি সবাই জানতে পারছেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক মাল বলেন, এনামুল হক শামীম এমপি ও উপমন্ত্রী হওয়ার পরই এই এলাকায় শান্তির সুবাতাস বইছে। উন্নয়নের পাশাপাশি জবাবদিহিতা ও সুশাসন নিশ্চিত করতেই ইউনিয়ন পরিষদ উন্নয়ন সভা চালু করেছেন।

নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ রাশেদউজ্জামান ও ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, এই ধরনের সভা মূলত জেলা-উপজেলা পর্যায় হয়। এটি উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম এমপি’র একটি মডেল উদ্যোগ। এটি অনুকরনীয় ও অনুসরনীয়। এ ধরনের সভা বাংলাদেশের সকল ইউনিয়নে চালু করা যেতে পারে।