একজন তরুণ আদর্শবান পুলিশ অফিসারের গল্প
১৯৭১সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্নত্যাগের স্বীকৃতি হিসেবে ‘স্বাধীনতা পদকে’ভূষিত হওয়া বাংলাদেশ পুলিশের সততায়, বীরত্বপূর্ন কাজে, দক্ষতায়, কর্তব্যনিষ্ঠায় অবদান অনেক।
সত্যিকারের দায়িত্বশীল ও নিষ্ঠাবান পুলিশ আইন মেনে যেমন পেশাগত দায়িত্ব পালন করেন তেমনি তাদের অনেক সততার, নৈতিকতার, মানবিকতার গল্প আমাদের অজানা।
আমরা সিনেমাতে দেখে থাকি কোন এলাকার আইনশৃঙ্খলার অবনতি হলে সেই এলাকায় একজন সৎ, নির্ভিক, দক্ষ, সাহসী ও মানবিক পুলিশ অফিসার পাঠানো হয়। যিনি অন্যায়ের সঙ্গে আপোসহীন থাকার কারণে ওই এলাকার মানুষের কাছে জনপ্রিয় পুলিশ হিসেবে বিশেষ পরিচিতি পান।
সিনেমার মতো হুবহু না হলেও বাস্তবে বাংলাদেশ পুলিশে এ ধরনের অনেক কর্মকর্তাকে দেখা যায়। যারা খুব কম সংবাদের শিরোনাম হন।
যাদের কাছে সরকারি চাকরি মানে ক্ষমতার দাপট নয়, যাদের কাছে সরকারি চাকরি মানেই কর্তৃত্বের বড়াই নয়।
তাদের কাছে সরকারি চাকরি মানে পেশাগত দায়িত্ব।
২০১৩ সালের ১২ নভেম্বর নৌ পুলিশ প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শকের অধীনে ৭৪৭ জন কর্মী নিয়ে এটির যাত্রা শুরু হয়েছিল। ২০১০ সালের ২০ জুলাই ঢাকার মিরপুরে নৌ পুলিশের প্রথম ক্যাম্প প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১৯ সালের জুন মাসে নৌ পুলিশ রাজশাহী জেলায় কাযর্ক্রম শুরু করে।
মো: আরিফুর রহমান। বয়স ২৯ বছর। বয়সে তরুণ। কনস্টেবল নায়েক হইতে পরীক্ষায় মেধাক্রম সারা বাংলাদেশে ১০২ উত্তীর্ন হয়ে ২০২১ সালের ১ জুন ওনপ্রমোশনে নৌ পুলিশের ভেকেন্সিতে এ এস আই (নিরস্ত্র) হিসেবে পদন্নতিপ্রাপ্ত হন। ইতোপূর্বে নৌ পুলিশের হেডকোয়ার্টার, ঢাকা, ও স্বরূপকাঠি নৌ পুলিশ ফাঁড়িতে চাকুরি করেছেন।
বর্তমানে তিনি খুলনা অঞ্চলাধীন পিরোজপুর জেলার ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট নৌ পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত আছেন। নিজ দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সাধারণ মানুষেকে সাধ্য অনুযায়ী সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দেন। এলাকার বিভিন্ন ধরনের সামাজিক কার্যক্রমে অংশগ্রহন করেন। পুলিশের বিভিন্ন কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা, জেলা ডিপুডি মৎস্য কর্মকর্তা, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা, উপজেলা মেরিন ফিসারিজ কর্মকর্তার সাথে কচাঁ ও বলেশ্বর নদী পথের নিয়মিত অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমান জাটকা ও অবৈধ জাল জব্দ এবং তা পুড়িয়ে ধ্বংশ করার অভিযানে অংশ নেন। অবৈধ জাটকা মাদ্রাসার এতিমদের মধ্যে বিতরণ করেন। চোরাচালান, দস্যুতা, মৎস্য সম্পদ ও জেলেদের নিরাপত্তা, চাঁদাবাজিসহ সব ধরনের অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও নদীর সম্পদ রক্ষায় সর্বদা নিয়োজিত থাকেন। নামাজী ব্যক্তি হিসাবে এলাকায় তার সুনাম রয়েছে। ঘুষ দেয়া বা নেয়া বর্তমান সমাজে যেন এক অনিবার্য পরিণতির নাম। সেখানে তিনি বিনা ঘুষেই সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
পুলিশের চাকুরি নিয়েছেন কেন এমন প্রশ্নের জবাবে তরুণ পুলিশ অফিসার মো: আরিফুর রহমান বলেন, পুলিশে যোগদান করেছি মানুষের জন্য কিছু করার মানসিকতা নিয়ে। কেননা পুলিশে মানুষকে সাহায্য- সহযোগীতা করার সুযোগ বেশি থাকে। আর আমি যে ফাঁড়িতে আছি সেখানে আমি আমার স্যার ও অন্যান্য সকলের কাছ থেকে ভাল কাজ করার অনুপ্রেরণা পাই। মাদকের কুফলের ও ইভটিজিং-এর ব্যাপারে যুবকদের নিয়ে সময় পেলেই বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রচারণা চালাই। আমি যুব সমাজ যাতে নেশায় নষ্ট না হয় তাই আমি এলাকার ক্লাবে ও ব্যক্তি পর্যায় বিভিন্ন ধরনের খেলার সামগ্রী প্রদান করি।
আমাকে এ ব্যাপরে সবচেয়ে বেশি সহযোগীতা করেন এস আই (নিরস্ত্র) জাহাঙ্গীর আলম স্যার।
আমি কতটুকু সমাজকে বদলাতে পারবো জানিনা তবে যতদিন আছি ভালো কাজ করার চেষ্টা করবো’।
পাড়েরহাট বন্দরের কচাঁ ও বলেশ্বর নদী দিয়ে অসংখ্য নৌযান মংলা পোর্টে যাতায়াত করে, বন্দরের জেলেরা শুটকি উৎপাদন করেন। এ শুটকি বিদেশেও রপ্তানি হয়। তাই পাড়েরহাট ইউনিয়নের নৌ পুলিশ ফাঁড়ির গুরুত্ব অপরিসীম।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন