এক সংস্থার অধীনে যাচ্ছে রাজধানীর সব ড্রেন
বৃষ্টি মানেই রাজধানীতে জলাবদ্ধতা। রাজধানীর ড্রেনগুলো ময়লা আবর্জনায় ভর্তি হয়ে যাওয়ায় পানি নিষ্কাশন বিঘ্নিত হয়। ফলে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। ঢাকার উত্তর-দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, ঢাকা ওয়াসা, পানি উন্নয়ন বোর্ড, ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড ও রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ পানি নিষ্কাশনের সঙ্গে জড়িত।
পানি নিষ্কাশনের সঙ্গে নানাভাবে জড়িত এই ৬টি সংস্থা জলাবদ্ধতা বিষয়ে এতদিন ধরে একে অপরকে দোষারোপ করে আসছে। তবে সম্প্রতি জলাবদ্ধতা নিরসনে আইনের সংস্কার করা হচ্ছে। এর ফলে যেকোনো এক সংস্থার অধীনে চলে যাচ্ছে রাজধানীর সমস্ত ড্রেন।
ঢাকায় প্রায় ২৪০০ কিলোমিটার ড্রেন রয়েছে, যার মধ্যে দুই সিটি করপোরেশনের প্রায় দুই হাজার এবং ওয়াসার প্রায় ৪০০ কিলোমিটার। এছাড়া বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো), ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড এবং বিভিন্ন স্থানে রাজউকও ড্রেনের নানা কাজের সঙ্গে জড়িত। জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হলেই একে অপরের ওপর দায় চাপায় সংস্থাগুলো।
জলাবদ্ধতা সমস্যা নিরসনে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সম্প্রতি ৯ সদস্যদের একটি কমিটি গঠন করে। কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে ড্রেনের দায়িত্ব এক সংস্থার ওপর দেয়া হবে। জানা গেছে, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নাসরিন আখতারকে আহ্বায়ক করে গঠিত ওই কমিটিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী খান মোহাম্মদ বিল্লাল, উত্তরের মেজবাউল ইসলাম, ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাসকিন এ খান, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মাহবুব হোসেন রয়েছেন।
সূত্র মতে, রাজধানীর সব ড্রেনের দায়-দায়িত্ব পাবে একটি সংস্থা। ড্রেনের দায়িত্ব পাওয়ার সবচেয়ে বেশি সম্ভাবনা রয়েছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের। ডিএসসিসির প্রধান প্রকৌশলী ফরাজী শাহাবুদ্দিন আহমেদ বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে ওয়াসা নাকি সিটি করপোরেশন কাজ করবে কিংবা কে কতটুকু করবে, সে বিষয়টি নির্ধারণে আইন সংশোধন করা হবে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে আইন সংশোধনের একটি প্রস্তাব নেয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে একটি কমিটি রয়েছে। তাদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক যেকোনো এক সংস্থা কাজ করবে।
এই কমিটির এক সদস্য বলেন, কমিটিকে এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছিল কিন্তু বিষয়টি জটিল হওয়ায় কমিটি নির্দিষ্ট সময়ে এটি দিতে পারেনি। একটি সুপারিশ মালা তৈরি হয়েছে, তবে তা খসড়া। সে অনুযায়ী যেকোনো একটি সংস্থার উপর দায়িত্ব চলে যাবে। তাই কে দায়িত্ব পাবে সে বিষয়টি ডিসেম্বরের মধ্যেই চূড়ান্ত হতে পারে।
জলাবদ্ধতার কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজধানীর ড্রেনগুলো ময়লা দিয়ে ভর্তি হয়ে যাওয়ায় পানি নিষ্কাশন হতে পারে না। অনেক ক্ষেত্রে নালার মুখই আবর্জনায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। পানি নিষ্কাশনের প্রধানত দুটি পথ রয়েছে। প্রথমত ভূ-গর্ভে পানি শোষণ করে নেয়া এবং অন্যটি খাল বিল ও ড্রেন দিয়ে নদীতে চলে যাওয়া। রাজধানী ঢাকায় এই দুটি পথের একটিও কার্যকর নেই। যে কারণে জলাবদ্ধতা বাড়ছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন