এবার ক্যাটরিনার ‘বিকৃত’ ছবি ভাইরাল
একটি ভিডিও হঠাৎ করেই ইন্টারনেটে বেশ তোলপাড় তুলেছে। ভিডিওটি ভারতীয় অভিনেত্রী রাশ্মিকা মান্দানার বলা হলেও, আসলে এটি একটি ফেক ভিডিও। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স দিয়ে তৈরি এই ভিডিওটি বেশ চমকে দিয়েছে সবাইকে। তাই ভিডিওটি ভাইরাল হতেও বেশি সময় লাগেনি।
তবে মূল ভিডিওটি জারা প্যাটেল নামের এক নারীর, যার সামাজিক মাধ্যমে বেশ বড় রকমের ফ্যান ফলোয়িং রয়েছে। তিনি একজন ব্রিটিশ ইনফ্লুয়েন্সার। তবে ভিডিওটি ফেইক হলেও বেশ আলোড়ন তৈরি করেছে ইন্টারনেটে। তারকা থেকে সাধারন মানুষ, সকলেই এই ‘ডিপফেক’ (অন্যের মুখবয়ব ব্যবহার করে তৈরি করা নকল ছবি/ভিডিও) প্রযুক্তির বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছেন।
রাশ্মিকার ভিডিও নিয়ে এখনো উত্তপ্ত সামাজিক মাধ্যম। তবে এরইমধ্যে ‘ডিপফেক’ প্রযুক্তির শিকার হলেন বলিউডের প্রভাবশালী অভিনেত্রী ক্যাটরিনা কাইফ!হ্যাঁ, এবার ক্যাটরিনা কাইফ ‘ডিপফেক’ প্রযুক্তির শিকার। আর সেটি তৈরি করা হয়েছে ‘টাইগার ৩’ সিনেমার দৃশ্য ব্যবহার করে। সিনেমাতে স্নানাগারের মধ্যে ক্যাটরিনার একটি লড়াইয়ের দৃশ্য রয়েছে।
তোয়ালে পরিহিত সেই দৃশ্যটি ইতোমধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছে দর্শকদের মাঝে। সেই দৃশ্যকেই বিকৃত করা হয়েছে প্রযুক্তির মাধ্যমে। আর ক্যাটরিনার সেই বিকৃত ছবি দাবানলের মতো সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে।মুলত টাইগার ৩-এর ট্রেলারে দেখা গেছে এই দৃশ্য। যেখানে ক্যাটরিনা কাইফকে তোয়ালে পড়ে অন্য এক নারীর সঙ্গে ফাইট করতে দেখা গেছে।
ক্যাটরিনা সেই ছবি তার ইনস্টাগ্রামেও পোস্ট করেছিলেন। কিন্তু সেই ছবিটি এডিট করে ক্যাটরিনার পোশাকে পরিবর্তন আনা হয়েছে, যা ছবিটিকে অশ্লীল করে তুলেছে। যদিও কয়েক ঘন্টার মধ্যে সেই ছবিটি সোশ্যাল মিডিয়া থেকে মুছে ফেলা হয়েছে তবে ছবিটির স্ক্রিনশট ইতোমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে অনলেইনে যা ক্যাটরিনা ভক্তদের বেশ খেপিয়ে তুলেছে।
সাম্প্রতিক সময়ে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সকে কাজে লাগিয়ে ভুয়া ছবি, ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার প্রবণতা ক্রমে বেড়েই চলেছে। ‘ডিপফেক’ মুলত এমন প্রযুক্তি যার সাহায্যে কারও ছবি বা ভিডিও এমনভাবে এডিট করে দেওয়া যাতে আপাতদৃষ্টিতে আসল-নকলের পার্থক্য বোঝা কঠিন হয়ে যায়। এখন এর জন্য AI বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তারও সাহায্য নেওয়া হচ্ছে।
তাই এমন পরিস্থিতিতে ভারতের ইলেকট্রনিক্স ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রনালয়ের পক্ষ থেকে সোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোর জন্য নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। অনলাইনে এধরনের ‘ডিপফেক’ ভিডিও ভাইরাল হলে কী কী শাস্তি হতে পারে, তা জানিয়েছে মন্ত্রনালয়। তথ্যপ্রযুক্তি আইন ২০০০-এর ৬৬-ডি ধারায় স্পষ্ট বলা আছে, কম্পিউটার রিসোর্সকে কাজে লাগিয়ে যদি কেউ যোগাযোগের মাধ্যমকে ভুল ভাবে কাজে লাগানোর চেষ্টা করে, কিংবা কোনও ব্যক্তির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়, তাহলে তিন বছর পর্যন্ত জেল এবং ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর জানিয়েছেন, প্রত্যেক ভারতীয় যাতে সুরক্ষিত থাকে সেই লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার। নাগরিকদের অনলাইন নিরাপত্তা এবং তাদের বিশ্বাস অর্জন করাই মোদি সরকারের কাজ।
এদিকে, এখনও পর্যন্ত ভাইরাল হওয়া ছবির বিষয়ে মুখ খোলেননি ক্যাটরিনা কাইফ। এমনকি অভিনেত্রীর পক্ষ থেকেও কিছু জানানো হয়নি। তবে সামাজিক মাধ্যমে অভিনেত্রীর অনুরাগীরা জানাচ্ছেন তীব্র নিন্দা। অনেকে ক্যাটরিনাকেও আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন