এবার সাতক্ষীরায় প্রসূতির পেটে গর্ভফুল রেখেই সেলাই
দেশের বিভিন্ন স্থানে পেটে গজ রেখে সেলাইয়ের অভিযোগের পর এবার সাতক্ষীরায় প্রসূতির পেটে গর্ভফুল রেখেই সেলাই করার অভিযোগ উঠেছে। সিজারের মাধ্যমে সন্তান জন্ম দিতে এসে ভুল চিকিৎসায় এ প্রসূতির জীবন সংকটের মুখে।
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার নলতা শেরে বাংলা ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়গনস্টিক সেন্টারে কিছুদিন আগে ওই নারী সন্তান প্রসব করেন।
উপজেলার পূর্ব নলতা গ্রামের সিরাজুল ইসলাম জানান, তার স্ত্রী শরিফা খাতুনকে সন্তান প্রসবের জন্য ১৪-২০ নভেম্বর পর্যন্ত নলতার শেরে বাংলা ক্লিনিক ও ডায়গনস্টিক সেন্টারে ভর্তি ছিলেন।
ভর্তির সময় ক্লিনিক কর্তৃপক্ষকে তিন হাজার ৪০০ টাকা দেয়া হয়। সেখানে শরিফার সিজারের মাধ্যমে মেয়ে সন্তান প্রসব হয়। পরবর্র্তীতে শরিফা জ্বরসহ বিভিন্ন সমস্যায় মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়লে টাইফয়েড জ্বরের চিকিৎসা দেয়া হয়।
এ সময় তার কাছ থেকে ডাইসোফেন ইনজেকশান ও রোসিফিন ইনজেকশান কিনিয়ে নেয়া হলেও রোসিফিন ইনজেকশান ব্যবহার করেননি ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ।
তিনি আরও জানান, গত ২০ নভেম্বর ক্লিনিক থেকে ছাড়পত্র দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করানোর পরামর্শ দেয়া হয়। এ সময় ক্লিনিক থেকে সংশ্লিষ্ট ডাক্তারের পরিবর্তে ক্লিনিক মালিক গ্রাম্য ডাক্তার আবু সাঈদ ছাড়পত্রের সঙ্গে ব্যবস্থাপত্র লিখে দেন।
ক্লিনিকে ভর্তি থাকাকালীন খরচ হয় ১৫ হাজার টাকা। মারাত্মক অসুস্থ শরিফাকে বাড়িতে আনার পর টাকা জোগাড় করে ২৬ নভেম্বর সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সেখানে প্রথমে তার পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ডা. ফারহানার কাছে নিয়ে গেলে তিনি শরিফার পেটে গর্ভফুল রেখে সেলাই করার বিষয়টি জানান।
স্বামী সিরাজুল ইসলাম বলেন, ২৬ নভেম্বর সংশ্লিষ্ট গাইনি চিকিৎসক এহছেন আরা ও কানিজ ফাতেমা রোগীর অবস্থা দেখে বন্ড সই করে তাকে দ্বিতীয় বার অপারেশন করে গর্ভফুল বের করেন।
একপর্যায়ে পুনরায় পেট থেকে গর্ভফুল বের করার পর দীর্ঘদিন চিকিৎসা দেয়ার পর শরিফাকে গত ১২ ডিসেম্বর ছাড়পত্র দেয়া হয়। এ কয়দিনে সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়ে স্ত্রী শরিফার জন্য কমপক্ষে ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়ে যায়।
বিষয়টি নিয়ে গত ১৩ ডিসেম্বর ক্লিনিকের ব্যবস্থাপক আবু সাঈদের কাছে গেলে ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, দুঃখ প্রকাশ করা ছাড়া আমার কিছু করার নেই।
তবে অভিযোগের বিষয়ে শেরে বাংলা ক্লিনিক ও ডায়গনস্টিক সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু সাঈদ অপারেশনে কোনো ত্রুটি ছিল না বলে জানান।
তিনি বলেন, ১৯ নভেম্বর প্রসূতি শরিফার জ্বর আসে। ডা. আকছেদুর রহমানের পরামর্শ মতে ব্যবস্থাপত্র লিখে দেয়া হয়। পরবর্তীতে তাদেরকে না জানিয়ে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন