শিশুদের জন্য মন্দির হচ্ছে ভারতে

ভারতে নানা হিন্দু দেবদেবীর মন্দির নির্মাণ নিয়ে বিতর্ক বহুদিনের। কিন্তু রাজস্থানে এবার সম্পূর্ণ অন্য ধরণের এক মন্দির তৈরি হতে চলেছে। সেখানে শিশুদের মূর্তি থাকবে, পুজাও হবে শিশুদেরই।

আদিবাসী অধ্যুষিত বাঁসওয়ারা জেলায় এমনই এক অভিনব মন্দির তৈরি করা হচ্ছে, যেখানে মূলমন্ত্র হবে শিশু সুরক্ষা আর শিশু অধিকার।

সোমবার রাজস্থানের শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন জানিয়েছে, মন্দির তৈরির প্রস্তাব রাজ্য সরকার অনুমোদন করেছে। দ্রুতই মন্দির তৈরির কাজ শুরু হবে।

কমিশনের চেয়ারপার্সন মানন চতুর্বেদী জানিয়েছেন, শিশু সুরক্ষার এ মন্দিরে পুজার জন্য আলাদা মন্ত্র লেখা হচ্ছে। হনুমান চলিশার ধাঁচে ‘বাল-চলিশা’ খোদাই করা থাকবে মন্দিরের দেওয়ালে, যেখানে শিশুদের অধিকার গুলো লেখা হবে।

সেই মন্ত্রে লেখা থাকবে কেন বাচ্চাদের পুষ্টিকর খাবার দেওয়া দরকার, কী কী স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা উচিত বাবা-মায়েদের এ ধরণের বিভিন্ন বিধান।

পুজার প্রসাদ হিসাবে দেওয়া হবে ছোট পুস্তিকা, যেখানে শিশুদের স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ সংবিধান স্বীকৃত অধিকারগুলো লেখা থাকবে। আর কোথাও যদি শিশুদের ওপর অত্যাচার হয় বা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয় সেগুলো জানানোর জন্য থাকবে একটি অভিযোগ বাক্স।

এই মন্দিরের পরিকল্পনা করেছেন বাঁসওয়ারার সংসদ সদস্য মানশঙ্কর নিনামা। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, পিছিয়ে পড়া আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকা বাঁসওয়ারা তো বটেই, সারা দেশেই শিশুদের নিয়ে সচেতনতার অভাব রয়েছে।

বাবা মায়েরা অনেক সময়ে রোজগারের জন্য বাধ্য হন শিশুদের অবহেলা করতে। ফলে তারা অপুষ্টিতে ভোগে। কিন্তু সামান্য উদ্যোগ নিলেই এসব দূর করা যায়। দরকার শুধু সচেতনতার।

নিনামা জানিয়েছেন, এ মন্দিরে হিন্দু দেব-দেবীদের সঙ্গেই শিশুদের মূর্তি থাকবে। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের শিশুদের ওই মূর্তিগুলোতে সেখানকার পরম্পরাগত পোশাক পরানো হবে।

শিশুদের একটা দলও তৈরি করা হবে যারা মন্দিরের বাইরে ঘরে ঘরে গিয়ে প্রচার করবে শিশু সুরক্ষা আর শিশু অধিকারের সারমর্ম।

ভারতে শিশু সুরক্ষা অধিকার বা শিশুদের শিক্ষার অধিকার সংবিধান স্বীকৃত। সেই হিসাবে সব রাজ্যেই শিশুদের সুরক্ষা কমিশনও তৈরি হয়েছে। কিন্তু এখনও নিয়মিত অপ্রাপ্তবয়স্ক শিশুদের বেআইনিভাবে নানা ঝুঁকিপূর্ণ কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।