এ দশাই থাকবে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে?

ঈদকে সামনে রেখে ঢাকা-টাঙ্গাইল বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে যানজটের আশঙ্কা করছেন এ রুটে চলাচলকারী যাত্রী, চালক ও পরিবহন সংশ্লিষ্টরা। এবার বন্যা মাথায় নিয়ে ঈদুল আজহা আসায় সংশ্লিষ্টদের মধ্যে এই আশঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে।

মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে এখনো রয়েছে অনেক ছোট-বড় গর্ত। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের বেধে দেওয়া ১০ দিন সময়ের মধ্যেও মহাসড়ক সংস্কারের কাজ শেষ করতে পারেনি সড়ক বিভাগ। গত ৯ আগস্ট যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আকস্মিকভাবে এই মহাসড়ক পরিদর্শনে এসে ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে সংস্কারের নির্দেশ দেন। কিন্তু ২৫ আগস্ট এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন হয়নি।

শুক্রবার দুপুরে টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নুর-ই-আলম জানান, গত ৯ আগস্ট মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় টাঙ্গাইল এসেছিলেন এবং তিনি আগামী ১০ দিনের মধ্যে মহাসড়ক চলাচল উপযোগী করার নির্দেশনা দিয়েছিলেন। কিন্তু আমরা ১০ দিনের মধ্যে সংস্কার কাজ শেষ করতে পারিনি। তবে গত ৩-৪ দিন আগেই আমাদের কাজ শেষ হয়ে গেছে। ঘরমুখো মানুষের স্বাচ্ছন্দে যাতায়াতের জন্য যতটুকু দরকার ততটুকু সংস্কার কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

এদিকে সরেজমিন পরিদর্শনে টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নুর-ই-আলমের কথার মিল পাওয়া যায়নি। শুক্রবার সকালেও মহাসড়কের টাঙ্গাইল থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে চলছে সংস্কার কাজ।

দেখা যায় টাঙ্গাইল শহর বাইপাস থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার সড়কে বিভিন্ন স্থানে সবচেয়ে বেহাল অবস্থা। রয়েছে মহাসড়কটির সদর উপজেলার বিক্রমহাটি ও রসুলপুর, কালিহাতী উপজেলার পৌলী, এলেঙ্গা এলাকায় বেহাল অবস্থা। এসব এলাকায় সংস্কারের কাজ করছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ।

এ নিয়ে বেশ কয়েকজন গাড়িচালক জানান, ঈদকে সামনে রেখে গরুবাহী ট্রাকসহ যানবাহন চলাচল বেড়ে গেছে। আর এর মধ্যে সংস্কার কাজের কারণে মাঝে-মধ্যেই যানজট সৃষ্টি হচ্ছে।

এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে নারায়ণগঞ্জ থেকে জামালপুরগামী বাসের চালক হুমায়ুন কবির জানান, রাস্তা সংস্কারের কারণে এখন যানজটে পড়তে হচ্ছে। আগামী দুই-একদিনের মধ্যে ঈদের কারণে যানবাহনের চাপ আরো বেড়ে যাবে। তখন এ যানজট আরো দেখা দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

পৌলী এলাকায় ট্রাক নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকজন চালক জানান, রাস্তা খারাপ থাকার কারণে নির্ধারিত সময়ে তারা গন্তব্যে পৌঁছতে পারছেন না। ঈদের সময় এ দুর্ভোগ আরো বেড়ে যাবে বলে মনে করেন তারা।

ঢাকা থেকে বগুড়াগামী কয়েকজন বাসযাত্রী জানান, এখনই যানজটের যে অবস্থা, যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে ঈদের আগে যাত্রীদের ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হবে।

রাজশাহীগামী দেশ ট্রাভেলস’র যাত্রী জাহাঙ্গীর আলম জানান, সংশ্লিষ্টদের আরো আগেই এ মহাসড়ক মেরামতের কাজ হাতে নেয়া উচিত ছিল।

টাঙ্গাইল জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মীর লুৎফর রহমান লালজু জানান, ঈদের সামনে যানবাহন চলাচল অনেক বেড়ে যায়। এবার রাস্তার যে অবস্থা তাতে যাত্রী সাধারণের ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মাহবুব আলম জানান, ঈদের আগে মানুষের যাতে যানজটে দুর্ভোগ পোহাতে না হয় সেজন্য পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করা হচ্ছে। যানজট নিরসনে জেলা পুলিশের সাড়ে ৭শ পুলিশ কাজ করবে বলেও জানান তিনি।