ঐতিহ্য হারাচ্ছে কুমিল্লার খাদি, প্রয়োজন পৃষ্ঠপোষকতা

খদ্দর শব্দটি থেকে খাদি। তবে খাদির আভিধানিক অর্থ কার্পাস তুলা থেকে হাতে কাটা সুতা দিয়ে হাতে বোনা কাপড়।

মহাত্মা গান্ধীর কারণে খদ্দর শব্দটি জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে এখনো সুনাম ও খ্যাতি অক্ষুণ্ন রাখার লড়াইয়ে রয়েছে কুমিল­ার খাদি। খাদির চাহিদা অনুযায়ী দ্রম্নত তাঁত চালানোর জন্য পায়ে চালিত প্যাডেলের নিচে মাটিতে গর্ত করা হতো। ওই খাদ থেকে কাপড় তৈরি হতো বলেই নাম হয় খাদি। কারও কারও মতে, গুজরাটি খদ্দর শব্দটি থেকে খাদি। তবে খাদির আভিধানিক অর্থ কার্পাস তুলা থেকে হাতে কাটা সুতা দিয়ে হাতে বোনা কাপড়।

ভারতীয় কংগ্রেস নেতা মহাত্মা গান্ধীর কারণে খদ্দর শব্দটি জনপ্রিয়তা পেয়েছে।

খাদির নাম নিয়ে যে মতভেদই থাকুক না কেন, একসময় স্বল্প আয়ের মানুষের পোশাক হিসেবে পরিচিত ছিল খাদি।

সময়ের পরিক্রমায় খাদি পরিণত হয়েছে বাঙালির অন্যতম ফ্যাশন প্রতীকে। শৈল্পিক ছোঁয়ায় কুমিলস্নার খাদি এখন দেশ-বিদেশে বেশ সমাদৃত। ইতোমধ্যে বাংলাদেশের সুপরিচিত খাদিকে ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতিও দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে দেশের চাহিদা প‚রণ করে খাদি কাপড় রপ্তানি হচ্ছে আমেরিকা, ইংল্যান্ড, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। তবে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে খ্যাতি অক্ষুণ্ন রেখে বিদেশের বাজারও দখল করা সম্ভব।

খাদির ইতিহাস:ব্রিটিশ ভারতে গান্ধীজির অসহযোগ আন্দোলনের সময়ে ঐতিহাসিক কারণে এ অঞ্চলে খাদি শিল্প দ্রম্নত বিস্তার লাভ এবং জনপ্রিয়তা লাভ করে। তখন খাদি সুতার জন্য ব্যবহার করা হতো রাঙামাটির তুলা। চান্দিনা, দেবিদ্বার, বুড়িচং ও কোতোয়ালি থানায় সে সময় বসবাস করত প্রচুর যুগী বা দেবনাথ পরিবার। বিদেশি বস্ত্র বর্জনে গান্ধীজির আহŸানে কুমিলস্নায় ব্যাপক সাড়া জাগে এবং খাদি বস্ত্র উৎপাদনও বেড়ে যায়। দেশের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়তে থাকে কুমিলস্নার খাদি বস্ত্র। সর্বমহলে সমাদৃত ও জনপ্রিয়তা অর্জন করে কুমিলস্না খাদি হিসেবে। গান্ধীজি প্রতিষ্ঠিত কুমিলস্না অভয়াশ্রম খাদি শিল্প প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

১৯২৬-২৭ সালের দিকে ৮ হাত লম্বা একটি খাদি ধুতি বিক্রি হতো মাত্র পাঁচ শিকে দামে। বাংলাদেশেও খাদি বুননের চল আমাদের আদিবাসী স¤প্রদায়ের মধ্যে ছিল। তবে স্বদেশি আন্দোলনের কারণে কুমিলস্নার অভয়াশ্রম, চট্টগ্রামের প্রবর্তক সংঘ এবং নোয়াখালীর গান্ধী আশ্রমে খাদি বোনা হতো। খাদি শিল্পের বিকাশে চান্দিনার শৈলেন গুহ ও তার ছেলে বিজন গুহ চান্দিনায় আখতার হামিদ খান প্রতিষ্ঠিত ‘দি খাদি কো-অপারেটিভ অ্যাসোসিয়েশন লিমিটেডের’ হাল ধরেন। খাদি শিল্পের একাল-সেকাল: প্রাচীনকাল থেকেই এ উপমহাদেশের হস্তচালিত তাঁত শিল্প জগদ্বিখ্যাত ছিল। ঢাকাই মসলিনের মতো বিখ্যাত ছিল কুমিলস্নার খাদি। তখন খাদি কাপড় বিদেশেও রপ্তানি হতো। এখনো রপ্তানি হয়, তবে যৎসামান্য। বর্তমানে খাদির বেডসিট, বস্নক করা থ্রিপিস, পৃষ্ঠা ১১ কলাম ৭ পাঞ্জাবি- প্রমুখ ক্রেতার দৃষ্টি আকর্ষণ করে।

বর্তমানে যে কাপড় খাদি নামে পরিচিত প্রথমে এটি অন্য নামে পরিচিত ছিল। খাদি কোনো কাপড়ের নাম নয়, সুতার নামও নয়। গর্ত বা খাদ থেকে যে কাপড় উৎপন্ন হতো তাকেই খাদি কাপড় বলা হতো। স্বদেশি আন্দোলনের সময় খাদি কাপড়ের চাহিদা অসম্ভবভাবে বেড়ে যায়। তখন মানুষ বিদেশি পণ্য বর্জন করে দেশীয় কাপড়ের প্রতি আকৃষ্ট হয়। বিশেষ করে মহাত্মা গান্ধীর অনুপ্রেরণায় কুমিলস্নার খাদির বাজার প্রসারিত হয়। চান্দিনায় মহাত্মা গান্ধীর স্মৃতিবিজড়িত একটি তাঁত এখনো রয়েছে।
এখন খাদি কাপড় তৈরি হয় তুলা এবং মেশিনে তৈরি সুতার মিশ্রণে।

কুমিল্লা সদর, চান্দিনার বেলাশ্বর, বারেরা, ডুমুরিয়া, মাধাইয়া, দেবিদ্বারের বড়কামতা, সাইতলা, মুরাদনগরের ঘোড়াশাল ও হোমনার রামকৃষ্ণপুরসহ বিভিন্ন গ্রামে সহস্রাধিক তাঁতি পরিবার এ শিল্প প্রসারে কাজ করে যাচ্ছে। সুতা ও রঙের উচ্চম‚ল্যসহ নানা প্রতিক‚ লতার মধ্যেও বর্তমানে অল্প কিছু তাঁতি কোনো রকম তাদের পেশা টিকিয়ে রেখেছেন। চান্দিনার বারেরা, নূরীতলা ও কলাগাঁওয়ে কিছু পরিবার তুলা থেকে সুতা বানানোর কাজ করে।

তারা জানান, প্রতি কেজি সুতা বিক্রি করা হয় ৩৪০ থেকে ৩৬০ টাকায়। খাদি শিল্পীরা তাদের কাছ থেকে সুতা কিনে খাদি তৈরি করেন। তবে বর্তমানে শুধু তুলার সুতা দিয়ে খাদি উৎপাদিত হয় না। খাদি সুতার সঙ্গে নারায়ণগঞ্জ থেকে সুতা এনে সেই সুতার মিশ্রণে কারিগররা খাদি তৈরি করছে। ফলে খাদির আদি রূপ বদলে গেছে এবং খাদি কাপড় পরে আগের মতো আরাম পাওয়া যায় না।

ঢাকাই মসলিনের মতো বিখ্যাত ছিল কুমিলস্নার খাদি। মূল্য কম, তাই চাহিদা বেশি কুমিলস্না নগরীর অভিজাত অর্ধশতাধিক খাদি দোকানে বর্তমানে খাদির বিভিন্ন সামগ্রী বিক্রি হচ্ছে। ঈদ, নববর্ষ ও পূজা উপলক্ষে খাদির পাঞ্জাবি ও ফতোয়ার চাহিদাও রয়েছে বেশ। খাদি পাঞ্জাবি পাওয়া যায় ৪০০ থেকে ১২০০ টাকায়, থ্রি-পিস ৪০০ থেকে ১০০০ টাকা, শাড়ি ৭০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা, থান কাপড় প্রতি গজ ৮০ থেকে ২০০ টাকায়, বেড সিট ৬৫০ টাকা থেকে ৩৫০০ টাকা, কাপড় ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, শার্ট ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, লুঙ্গি ২৫০ টাকা।

কুমিল্লা নগরীর মনোহরপুর ঘরের মালিক প্রদীপ কুমার রাহা কান্তি জানান, সুতার মূল্য বৃদ্ধির কারণে বর্তমানে খাদি কাপড়ের দাম কিছুটা বেড়েছে, তবে ক্রেতাদের সুবিধার্থে এখনো খাদি সামগ্রী কুমিলস্না মহানগরীর বিভিন্ন দোকান থেকে যে ম‚ল্যে পাওয়া যাচ্ছে তা দেশের অন্য যে কোনো স্থানে এর দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে।

তিনি বলেন, দাম ও গুণগত মানে কুমিলস্নার খাদির চেয়ে এত কম মূল্যে কোনো ব্র্যান্ডের কাপড় পাওয়া যায় না।

আখতার হামিদ খানের চেষ্টায় খাদির অগ্রযাত্রা কুমিল্লা সদর, চান্দিনা, দেবিদ্বার ও মুরাদনগরের সহস্রাধিক তাঁতি পরিবার এ শিল্পের প্রসারে কাজ করছে। খাদি শিল্পীরা তাদের কাছ থেকে সুতা কিনে খাদি তৈরি করেন। তবে বর্তমানে শুধু তুলার সুতা দিয়ে খাদি উৎপাদিত হয় না।

১৯৫২ সালে সমবায় আন্দোলনের প্রাণপুরুষ ড. আখতার হামিদ খানের চেষ্টায় এবং তৎকালীন গভর্নর ফিরোজ খান ন‚নের সহযোগিতায় কুমিল্লার অভয়াশ্রমে ‘দি খাদি অ্যান্ড কটেজ ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন’ প্রতিষ্ঠিত হয়। মহানগরের স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানের ‘অভয়াশ্রম’ কর্মীদের প্রচেষ্টায় কুমিলস্নার আশপাশের গ্রামগুলোতে হাতে সুতাকাটা ও হস্তচালিত তাঁতের ব্যবহার ব্যাপকভাবে শুরু হয়।
বিশেষ করে চান্দিনা উপজেলার মাধাইয়া, দেবিদ্বার উপজেলার বরকামতা, সাইতলা, বাখরাবাদ, বেলাশ্বর, ভানী, হারং, গুনঞ্জর, দাউদকান্দির গৌরীপুর, মুরাদনগরের রামচন্দ্রপুর, রামকৃষ্ণপুর, ঘোড়াশাল, ময়নামতি, জালালপুর, মইনপুর এলাকায় হস্তচালিত তাঁতশিল্পের প্রসার ঘটে।

তাঁতশিল্পকে কেন্দ্র করে বারেরা, রামচন্দ্রপুর, জাফরাবাদ, সায়কট, রারিরচড়, কুটুম্বপুর, কলাগাঁও, সোনাপুর, সাইতলা, ভানী, ফুলতলী, দোবারিয়া, গণিপুর- এসব গ্রামের মানুষ হাতে সুতা কাটার পেশায় জড়িয়ে পড়ে। খাদির নামে অখাদির বাজার দখলের চেষ্টা বিশুদ্ধ খাদি বিলুপ্ত হতে চলেছে। খাদির নামে আছে অখাদি। শুধু চান্দিনা ও দেবিদ্বারের কিছু এলাকায় খাদি শিল্প টিকে থাকলেও বুড়িচং, কোতোয়ালির অধিকাংশই পেশা পরিবর্তন করে অন্যান্য পেশায় ঝুঁকে পড়েছেন।

চান্দিনার কিছু তাঁতি ও কাটুনি বিভিন্ন বস্ত্র মিল থেকে ব্যবহারের অযোগ্য সুতা সংগ্রহ করে সেগুলো থেকে বেছে বেছে চরকায় সুতা কাটছেন। এই সুতা ও মিলের সুতার মিশ্রণে তৈরি হচ্ছে বর্তমান খাদি বস্ত্র। ফলে এখন আর চাইলেই আসল খাদি কাপড় পাওয়া যায় না।

শহরের মনোহরপুরের প্রসিদ্ধ খাদি ভান্ডারের বিক্রেতারা জানান, বর্তমান প্রজন্মের তরুণরা কম পারিশ্রমিকের কারণে এ পেশাটির প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। প্রতিদিন গড়ে একটি তাঁত থেকে তৈরি হয় সর্বোচ্চ ১২ গজ কাপড়। তাঁতিরা বিভিন্ন মহাজনের কাছ থেকে ওজন ধরে সুতা আনেন এবং যত কেজি সুতা এনে সে পরিমাণ ওজনের তৈরি কাপড় তাদের সরবরাহ করেন। এজন্য মহাজন তাদের ১২ গজে মাত্র ১৮০ থেকে ২০০ টাকা দেন। তা থেকে শ্রমিককে দিতে হয় একটি উলেস্নখযোগ্য অংশ। ফলে তাদের লাভের খাতা থাকে শূন্য। এ অবস্থায় পৃষ্ঠপোষকতাহীন খদ্দর শিল্প হারিয়ে যাচ্ছে দ্রত গতিতে। সুলভ মূল্যে সুতা ও রং না পাওয়ার কারণে প্রকৃত তাঁতিরা তাদের ম‚ল পেশা বদল করতে বাধ্য হন বলে জানান চান্দিনার বৃদ্ধ তাঁতি দেবেন্দ্র দেবনাথ।

যারা খাদির ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন তবে খাদি শিল্পের প্রসারে ইতোমধ্যে উলেস্নখযোগ্য ভূমিকা রেখেছেন কুমিল্লা মহানগরের মনোহরপুর এলাকার খাদি ঘরের মোহন রাহা, খাদি কুটির শিল্পের শঙ্কর সাহা, খাদি ভবনের দীনেশ দাশ, বিশুদ্ধ খদ্দরের মনমোহন দত্ত ও রাম নারায়ণ স্টোরের কৃষ্ণ সাহা।

কুমিল্লার খাদি পোশাকের মধ্যে পাঞ্জাবি, ফতুয়া, সালোয়ার-কামিজ, ওড়না, বিছানার চাদর, গায়ের চাদরসহ ব্যবহার্য পণ্য সামগ্রীতে নজরকাড়া ডিজাইন আনা হয়েছে। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে খাদির সব ধরনের পোশাকে আধুনিকতা এলেও খদ্দরের সেই মোটা কাপড়ের পাঞ্জাবি এখনো আগের জৌলুস ধরে রেখেছে; কিন্তু কাঁচামালের দাম বৃদ্ধির কারণে স্বল্পপুঁজির উৎপাদনকারীরা ব্যবসা ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন।

কুমিল্লা খাদি ঘরের মালিক প্রদীপ কুমার রাহা কান্তি জানান, নকলের ভিড়ে এখনো আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি খাদির ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে। বর্তমানে খাদি শিল্পে অনেক নতুন নতুন ডিজাইন এসেছে, কারণ ১৯২১ সালের প্রেক্ষাপট ও চাহিদা এক নয়। তবে খাদির বিকাশে সরকারের একটি নীতিমালা প্রয়োজন। পৃথিবীর যেখানে বাঙালি কমিউনিটি আছে সেখানে খাদি কাপড়ের প্রসার ঘটেছে। বাংলাদেশের বিদেশি দূতাবাসে খাদিসহ দেশীয় পণ্যের প্রদর্শনী করলে তা পণ্যের ব্যাপক প্রসার ঘটাবে। আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ১৯৯৪ সালে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার এক চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছিল সদস্য দেশগুলো। যার মধ্য দিয়ে প্রতিটি দেশ তার ভ‚খন্ডে উৎপাদিত পণ্য, বস্তু ও জ্ঞানের ওপর মালিকানা প্রতিষ্ঠার জন্য ভৌগোলিক নির্দেশক (জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন) আইনের মাধ্যমে নিবন্ধনের অধিকারপ্রাপ্ত হয়।

তবে দীর্ঘদিন নজর না দেওয়ার পর ২০১৩ সালে বাংলাদেশ সরকার ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য (নিবন্ধন ও সুরক্ষা) আইন প্রণয়ন করে। ওই আইনের অধীনে ২০১৫ সালে হয় বিধিমালা। এরপর ঐতিহ্যবাহী জামদানির মেধা সম্পদের মালিকানা সুরক্ষায় উদ্যোগ নেওয়ার পর এখন তা আরও সম্প্রসারণ চলছে, যার মধ্যে কুমিলস্নার খাদি ও রসমালাই রয়েছে। খাদির প্রসারে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন কতজন পেশাজীবী তাঁতি এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত এর সঠিক হিসাব সরকারি খাতায়ও নেই। ১৯৮২-৮৩ সালে ন্যায্যমূল্যে সুতা সরবরাহ করার জন্য তাঁতিদের সংখ্যা নিরূপণে একটি জরিপ চালানো হলে প্রকৃত তাঁতির সংখ্যা কত সেই জরিপ থেকে তা বের করা সম্ভব হয়নি। তাঁতিরা অশিক্ষিত হওয়ায় সরকারি যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করে এক শ্রেণির দালাল ও ফড়িয়া। ১৯৮৯ সালের ১ জানুয়ারি বিসিক কুমিলস্না বস্ত্র মন্ত্রণালয়ে একটি প্রকল্প প্রস্তাব পেশ করে। এর লক্ষ্য ছিল ঐহিত্যবাহী খাদি বস্ত্রের ঐহিত্য সংরক্ষণ, প্রকৃত সুতা কাটুনিদের নিয়মিত তুলা সরবরাহ, অম্বর চরকা প্রবর্তন ও সম্প্রসারণের মাধ্যমে উন্নতমানের খাদি সুতা উৎপাদন, ৪ হাজার সুতা কাটুনি ও ছয়শ তাঁতির আয় ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি।

কোতোয়ালি থানা সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ এবং ‘দি খাদি অ্যান্ড কটেজ ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন কো-অপারেটিভ লিমিটেডের’ যৌথ উদ্যোগে গৃহীত এ প্রকল্প প্রস্তাবটি বাস্তবায়ন হলে এই শিল্পে জড়িত সমস্যা জর্জরিত সুতা কাটুনি ও তাঁতিরা প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা ও পৃষ্ঠপোষকতা পেত। তিন লাখ মিটার খাদি উৎপন্ন হতো। এতে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা ও আয় করা সম্ভব হতো; কিন্তু লাল ফিতার দৌরাত্ম্যে এখন পর্যন্ত এ প্রস্তাবটির কোনো সুরাহা হয়নি।