ওমিক্রনের উদ্বেগের মাঝেই ‘বিশেষ’ সতর্কবার্তা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নতুন তথ্য জানা যাচ্ছে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে। দ্রুত সংক্রমণ, মৃদু উপসর্গের মতো তথ্য এখনও জানা গেলেও, সংক্রমণ রুখতে অতিরিক্ত করোনা টিকার প্রয়োজন রয়েছে কিনা, তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

গতকাল বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়, ওমিক্রন সংক্রমণ রুখতে করোনা টিকার অতিরিক্ত ডোজ প্রয়োজন কিনা তা এখনও জানা যায়নি। সুতরাং সকল দেশকে অনুরোধ করা হচ্ছে, আগে থেকেই টিকা নিয়ে তাড়াহুড়া শুরু না করার জন্য।

জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থার টিকা পরামর্শদাতা কেট ও’ব্রায়েন বিশ্বের সমস্ত দেশকে সতর্ক করে বলেন, উপযুক্ত প্রমাণ ছাড়া ভ্য়াকসিন নিয়ে কাড়াকাড়ি, অতিরিক্ত টিকা মজুত করার কোনও অর্থ নেই। এমনিতেই বিশ্বে করোনা টিকা নিয়ে অসাম্য রয়েছে, এই ধরনের কার্যকলাপে সেই অসাম্যই আরও বৃদ্ধি পাবে।

তিনি আরও বলেন, ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের কারণে আগামিদিনের পরিস্থিতি কী হতে চলেছে, তা আমরা জানি না। তবে বিশ্বে টিকা সরবরাহ ব্যবস্থা যে প্রভাবিত হতে পারে, তার একটা ঝুঁকি রয়েছে।

উচ্চ আয় সম্পন্ন দেশগুলি ফের একবার নিজেদের জনগণকে রক্ষার জন্য অতিরিক্ত পরিমাণ টিকা মজুত করা শুরু করতে পারে।

এদিকে, বৃহস্পতিবারই ফাইজ়ার-বায়োএনটেক সংস্থার তরফে দাবি করা হয়, তাদের টিকার দুইটি ডোজ করোনার প্রাথমিক স্ট্রেনের বিরুদ্ধে যে সুরক্ষা দেয়, ওমিক্রনের ক্ষেত্রে সেই সুরক্ষা পেতে তিনটি ডোজের প্রয়োজন।

এই প্রসঙ্গে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে টিকা পরামর্শদাতা কেট ও’ব্রায়েন বলেন, করোনা টিকার অতিরিক্ত ডোজ ওমিক্রন ভ্য়ারিয়েন্টের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেয় কিনা, সেই তথ্য খতিয়ে দেখছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। গবেষণায় হয়তো অতিরিক্ত জোজের কার্যকারিতা সম্পর্কে জানা যেতে পারে, তবে এখনই অতিরিক্ত ডোজ নিয়ে কিছু বলা সম্ভব নয়।

তিনি আরও জানান, গোটা বিশ্ব সবে মাত্র টিকা বৈষম্য সম্পর্কে বুঝতে শুরু করেছে। পিছিয়ে পড়া বা আর্থিকভাবে দুর্বল দেশগুলিতে করোনা টিকা সরবরাহ শুরু হয়েছে গত দুই মাস ধরে। আগামীদিনেও এই সরবরাহ বজায় রাখতে হবে বলেই তিনি জানান। তিনি বলেন, যদি ক্ষমতাবান দেশগুলি অতিরিক্ত টিকা মজুত করে রাখে, তবে এই মহামারি থেকে মুক্তিও পিছিয়ে যাবে।

বিশ্বে যতদিন করোনা সংক্রমণ ছড়াতে থাকবে, ততদিনই নিত্যনতুন ভ্যারিয়েন্টও দেখা দেবে।

সংক্রমণ রুখে এই মহামারি শেষ করতে সমস্ত দেশে প্রয়োজন অনুযায়ী টিকা সরবরাহ হওয়া উচিত বলেই তিনি জানান।

এদিকে, গত বুধবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রেয়াসিস বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা যাচ্ছে যে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে পুনরায় সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই বেশি। তবে বেশ কিছু এমন প্রমাণও মিলেছে, যাতে দেখা গিয়েছে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় ওমিক্রনে আক্রান্তরা কম অসুস্থ হয়েছেন।