কঙ্গোতে যাওয়ার একদিন পরই প্রাণ হারান রৌশন আরা

কঙ্গোতে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ পুলিশ ইউনিট সদস্যদের মেডেল প্যারেড পরিদর্শনে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত আইজিপি) রৌশন আরা বেগম।

তিনি গত ৩ মে মিশনের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন। কঙ্গোতে পৌঁছেন ৪ মে। আর ৫ মে অর্থাৎ সেখানে পৌঁছানোর একদিন পরই মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি প্রাণ হারান।

পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) সোহেল রানা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, দেশটির কিনশাসা নামক স্থানে স্থানীয় সময় রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় একটি লরির সঙ্গে ধাক্কা লেগে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে রৌশন আরা বেগমকে বহনকারী গাড়ির চালকসহ বাকি দুজন আহত হন। আহতদের মধ্যে পুলিশের এসপি (কমান্ডার) ফারজানাও রয়েছেন।

সোহেল রানা বলেন, বাংলাদেশ পুলিশে তার ক্ষতি অপূরণীয়। তার মৃত্যুতে আমরা শোকাহত।

রাজধানী ঢাকার মগবাজারের সাবেক টিঅ্যান্ডটি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন রৌশন আরা। এর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসএস (অনার্স), এমএসএস ডিগ্রি অর্জন করেন।
বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ১৯৮৮ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি পুলিশ ক্যাডারে যোগদান করেন রৌশন আরা বেগম।

প্রশিক্ষণ শেষে তিনি ঢাকায় শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এর পর রাজশাহীর সারদা পুলিশ একাডেমি, নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে (ডিএমপি) সহকারী পুলিশ কমিশনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

১৯৯৪ সালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে কক্সবাজারে দায়িত্ব পালন করেন। এর পর একই পদে টাঙ্গাইল, কুমিল্লা ও চট্টগ্রামে কর্মরত ছিলেন।

রৌশন আরা ১৯৯৮ সালের ৩ ডিসেম্বর প্রথম নারী পুলিশ সুপার হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে মুন্সীগঞ্জে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৮ সালের ৬ নভেম্বর তিনি অতিরিক্ত আইজিপি হিসেবে পদোন্নতি পান।

পুলিশ বাহিনীতে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ দুবার আইজিপি ব্যাচপ্রাপ্ত হন এবং বাংলাদেশ সরকারের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পুলিশ পদক ‘পিপিএম’ লাভ করেন।

১৯৯৮ সালে তিনি মুন্সীগঞ্জের পুলিশ সুপার থাকাকালীন ‘অনন্যা শীর্ষ দশ-১৯৯৮’ পুরস্কার ও ২০১২ সালে ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব উইমেন পুলিশের স্কলারশিপ অ্যাওয়ার্ড-২০১২ লাভ করেন।