কারাগারে লেখক মুসতাকের মৃত্যুর দায় কার ? : মোস্তফা

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি লেখক মুসতাক আহমেদের মৃত্যুর দায় কি সরকার এড়াতে পারে প্রশ্ন করে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব বলেছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার লেখক মোশতাক আহমেদ ২৩ ফেব্রুয়ারিও জামিন পাননি। বৃহস্পতিবার বন্দী অবস্থায় মারা গেলেন। এটা কি এক ধরনের হত্যাকা- নয় ?

শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) তোপখানায় ভাষা আন্দোলনের চিত্র প্রদর্শনি শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি লেখক মুসতাকের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দু:খ প্রকাশ এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করে বলেন, মোসতাকের মৃত্যুর দায় সরকার তথা রাষ্ট্রকেই গ্রহণ করতে হবে। নিরপেক্ষ তদন্ত করে এই মর্মান্তিক ঘটনার বিচার জরুরি। সরকারের সমালোচনা করে নিজের ফেসবুকের টাইমলাইনে কার্টুন শেয়ার করায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতারের পর তিনি দূর্বল, বেশ অসুস্থ বলে অনেকবার তার জামিন চাওয়া হয়েছিল। সরকার তার এই সমালোচককে জামিনের অযোগ্য মনে করেছে। দু:খজনক, জামিনা না হলেও কারাগারেই মারা গেছেন মুশতাক আহমেদ। যে দেশে খুনের দায়ে সাজা প্রাপ্ত আসামীর জামিন হয়, সে দেশে সরকারের সমালোচনার কারনে একজন লেখেকের জামিন হয় না, যা দু:খজনক।

তিনি বলে, মহান ভাষা আন্দোলনের পথ ধরে যে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সেখানে আজ ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভুলন্ঠিত। এই ভাষার মাসেই একজন লেখকের জেলে মৃত্যু রাষ্ট্রের জন্য কতটা লজ্জাজনক তা কি শাসকগোষ্টি অনুভব করছেন। লেখক মোসতাক আহমেদের কারাগারে মৃত্যুই কি ভাষার মাসের শ্রেষ্ট উপহার। তার বৃদ্ধ বাবা-মা এবং মানসিক ভারসাম্যহীন স্ত্রীকে সান্তনা দেবে কে?

এসময় আরো বক্তব্য রাখেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য এনামুজ্জামান চৌধুরী, গণ রাজনৈতিক জোট-গর্জোর সভা প্রধান সৈয়দ মঈনুজ্জামান লিটু, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এনডিপি মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা, বাংলাদেশ ন্যাপ ভাইস চেয়ারম্যান স্বপন কুমার সাহা প্রমুখ।

জাসদ উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য এনামুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ফেব্রুয়ারি আসলেই বাংলা ভাষার মর্যাদা সম্পর্কে অনেক কথাই বলা হয়। কিন্তু ভাষার উৎকর্ষ ও বিকাশ সাধনে কোন কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় না। অনেক ত্যাগের বিনিময়ে বাংলা ভাষা রাষ্ট্রীয় মর্যাদা লাভ করলেও রাষ্ট্রের সকল পর্যায়ে এখনও বাংলা ভাষার প্রচলন করা সম্ভব হয়নি।

গর্জো সভা প্রধান সৈয়দ মঈনুজ্জামান লিটু বলেন, মূলত ভাষা আন্দোলনের চেতনা স্বাধীনতা, মানবাধিকার ও সাম্যের চেতনা। কিন্তু স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তি কালও আমরা সে লক্ষে এখনও পৌঁছতে পারিনি। বিজাতীয় আগ্রাসনে আমাদের ভাষা ও সংস্কৃতি আজ অরতি। তাই মায়ের ভাষা ও নিজস্ব সংস্কৃতি রায় আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

এনডিপি মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা বলেন, একুশের চেতনা ধারণ করেই দেশে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, আইনের শাসন, সাম্য ও মৈত্রী প্রতিষ্ঠায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। মহান ভাষা আন্দোলনের মাসে এই হোক আমাদের অঙ্গীকার। ৫২’র ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়েই এই অঞ্চলের জাতি স্বাধীনতা সংগ্রামকে সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বিশ্বের মানচিত্রে জন্ম নেয় আজকের বাংলাদেশ।