কিশোরগঞ্জে উস্কানিমুলক বক্তব্য দেয়া ও ভোট চাওয়াকে কেন্দ্র করে মারামারি

কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী) প্রতিনিধি : নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার গাড়াগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের উপ-নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ৪ চেয়ারম্যান প্রার্থীর ভোটার ও সমর্থকদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে,রবিবার (১০ ডিসেম্বর) বিকালে গাড়াগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গাড়াগ্রাম ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাংবাদিক মোক্তারুল ইসলাম পথ সভা করে। পথ সভায় মোক্তারুল ইসলামের নির্বাচনী প্রস্তাবকারী ও ২ বারের পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী মশিয়ার রহমান মোক্তারুল ইসলামের চশমা প্রতীকের পক্ষে ভোট চান এবং আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী মোজাহার হোসেনের নৌকা প্রতীকে ভোট না দেয়ার জন্য উস্কানিমুলক বক্তব্য প্রদান করে। কিছুক্ষণ পরে মশিয়ার রহমান গাড়াগ্রাম বাজারে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আসলে আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী মোজাহার হোসেনের ছেলে আরিফুল আলম মামুন ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোজাহার হোসেন মশিয়ার রহমানকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এতে মশিয়ার রহমান প্রতিবাদ করলে দু’গ্রæপের মধ্যে বাকবিতন্ডার সৃষ্টি হয়। পরে দু’গ্রæপের লোকজন জড়ো হলে খবর পেয়ে চশমা প্রতীকের প্রার্থী মোক্তারুল ইসলাম ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোজাহার হোসেন ঘটনাস্থল থেকে কর্মীদেরকে সরে নেয়।

তবে উস্কানিমুলক বক্তব্যের কথা অস্বীকার করে চশমা প্রতীকের প্রস্তাবকারী মশিয়ার রহমান বলেন এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট কথা। আমি দু’বার অল্প ভোটের ব্যবধানে গাড়াগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে হেরে গিয়েছি। এবার মোক্তারুল ইসলামের পক্ষে নির্বাচনী কাজে অংশ নিয়েছি। আমি উস্কানিমুলক বক্তব্য রেখেছি এমনটা কেউ প্রমাণ করতে পারবে না।

এ ব্যাপারে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোজাহার হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন,আমার সাথে মশিয়ার রহমানের কিছু কথা কাটাকাটি হয়েছে। তবে আমার ছেলে সেখানে উপস্থিত ছিল না।

চশমা প্রতীকের প্রার্থী মোক্তারুল ইসলাম বলেন,আমার প্রস্তাবকারী মশিয়ার রহমান দু’বার অল্প ভোটের ব্যবধানে পরাজয় বরণ করেন। তিনি আমার প্রস্তাবকারী হওয়ায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও তার ছেলে মামুন মশিয়ার রহমানকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিয়ে আসছে। আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে সবাইকে বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করি।

অপরদিকে গাড়াগ্রাম পুরাতন টেপারহাটে সাবেক চেয়ারম্যান ও বর্তমান স্বতন্ত্র প্রার্থী বিপ্লব কুমার সরকারের (দুটি পাতা) কর্মী আহম্মেদ হোসেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী জোনাব আলীর (লাঙ্গল) প্রতীকের ভোটার সাবেক মেম্বার বাবুল হোসেন বাবুর কাছে দুটি পাতার পক্ষে ভোট চাইতে গেলে দু’জনের মধ্যে বাক বিতন্ডার সৃষ্টি হয়। বাক বিতন্ডার সাথে সাথে দু’গ্রæপের লোকদের মধ্যে মারামারি শুরু হয়। থেমে থেমে শুরু হয় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। মুহুর্তের মধ্যে দু’পক্ষের লোকজন জড়ো হয় টেপার হাটে। তবে নির্বাচন অফিসারের মাঠ পর্যবেক্ষনের অভাবের কারণে এসবকে দায়ী করছেন সাধারণ ভোটাররা। ঘটনাস্থল থেকে উপজেলা নির্বাচন অফিসারকে কয়েকবার চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি। তবে কিছুক্ষণ পরে তিনি সংবাদ কর্মীকে ফোন করে নামাজের ছিলেন বলে জানান।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাবেক এক ওয়ার্ড সদস্য বলেন,বিপ্লব কুমার সরকারের (দুটি পাতা) পক্ষের সমর্থকদের ঘায়েল করতে সাবেক ওয়ার্ড সদস্য বাবুল হোসেন বাবু তার নিজ দোকানে পেট্রোল দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দেয়ার জন্য চেষ্টা করে। পরে সাধারণ লোকদের চেষ্টার ফলে বাবুল হোসেন বাবু মেম্বারের কৌশল ব্যর্থ হয়। কিছুক্ষণ পরে গাড়াগ্রাম ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সভাপতি লাল মিয়া ঘটনাস্থলে এসে জোনাব আলীর (লাঙ্গল) প্রতীকের পক্ষের লোকদের নির্বাচনী অফিসে নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।

এ ব্যাপারে বিপ্লব কুমার সরকার দিপু বাবুর সাথে তার মোবাইল ফোনে কয়েকবার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

জাতীয় পার্টির সমর্থিত প্রার্থী জোনাব আলীর সাথে তার মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন দুটি পাতার কর্মী আমার অফিসে গিয়ে লোকদের কাছে ভোট চাওয়ার কারণে এ সব ঘটনা ঘটেছে।

এ ব্যাপারে নির্বাচন অফিসার মনোয়ার হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন,বিষয়টি জানার পর আমি প্রার্থীদের সাথে কথা বলেছি। ঢাকা থেকে ফিরে গিয়ে অভিযুক্তদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে আচরণ বিধি লংঘনকারীদের ব্যাপারে কমিশন থেকে ম্যাজিষ্ট্রেট নিয়োগ না দেয়ায় তাৎক্ষনিক ভাবে ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হচ্ছে না।