কুড়িগ্রামে অবৈধ অনলাইন জুয়ার ডেভলপারসহ আটক-৩
বাংলাদেশ পুলিশের এন্টি টেররিজম সাইবার উইং,কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশ ও ভূরুঙ্গামারী থানা পুলিশের যৌথ অভিযানের মাধ্যমে উত্তরবঙ্গের অনলাইন জুয়ার মূলহোতা ও অনলাইন জুয়ার অবৈধ সফটওয়্যার ডেভলপারসহ ৩ জনকে আটক করা হয়েছে।
বুধবার (৮ মার্চ)রাতে জেলার ভুরুঙ্গামারী, রংপুর ও দিনাজপুর থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে কুড়িগ্রাম পুলিশ লাইন্স হলরুমে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার আল আসাদ মোঃ মাহফুজুল ইসলাম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারেন যে, বেশ কিছুদিন যাবৎ একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র পরস্পর যোগসাজসে কয়েকটি জুয়ার এ্যাপস (Maxplayer, sports zone) ব্যবহার করে অনলাইন ক্যাসিনো ও জুয়া খেলার মাধ্যমে উত্তরবঙ্গের সাধারন মানুষকে বিভিন্ন ধরনের প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণার উদ্দেশ্যে অনলাইনে জুয়া খেলায় উদ্বুদ্ধ করে মোবাইল ব্যাংকিং (নগদ / বিকাশ/ রকেট) ব্যবহার করে অবৈধ ই- ট্রানজেকশন এর মাধ্যমে শত শত উঠতি বয়সি তরুণদের কাছে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
তারই ধারাবাহিকতায় অনলাইন মনিটরিং এবং গোপন সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারেন উক্ত প্রতারক চক্রের একটি দল রংপুর সদরের মুলাটলে অবস্থান করছে। পরবর্তিতে রংপুর শহরের মুলাটোল প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন অয়ন ছাত্রাবাস থেকে আসামী অনলাইন জুয়ার এজেন্ট আবুল কালাম (২২) কে আটক করে এন্টি টেররিজমের সাইবার উইং এর একটি টিম।
এসময় আটক ব্যক্তির নিকট থেকে অনলাইন জুয়ায় ব্যবহৃত ৩ টি সচল মোবাইল ফোন, ১টি ৩২জিবি মেমোরী কার্ড, ৬ টি সিমকার্ড এবং নগদ ৫ হাজার টাকা উদ্ধার করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে তার সাথে সুজন মিয়া ও ভবানী রায় নামের আরো দুজন জড়িত বলে জানায় আবুল কালাম। জিজ্ঞাসাবাদে সে আরো জানায়, তাকে এই অনলাইন জুয়ার এ্যাপসটি অর্থের বিনিময়ে অনলাইন জুয়ার অবৈধ সফটওয়্যার ডেভলপার সুজন মিয়া (২৪), এ্যাপসটি ডেভেলপ করে দেয় এবং রক্ষণাবেক্ষন করে।
পরবর্তিতে ভূরুঙ্গামারী থানা পুলিশের সহায়তায় অনলাইন জুয়ার অবৈধ সফটওয়্যার ডেভলপার সুজন মিয়া কে ভূরুঙ্গামারী থানা এলাকা হতে গ্রেফতার করে।
এসময় তার দখলে থাকা অনলাইন জুয়া খেলার কাজে ব্যবহৃত ১ টি ল্যাপটপ, ২ টি মোবাইল ফোন, ৩টি সিমকার্ড এবং নগদ ১০ হাজার টাকা উদ্ধার করে।
অপরদিকে বিভিন্ন সময়ে সিম ও মোবাইল ব্যাংকিং লেনদেনে সহায়তা করার অপরাধে ভূরুঙ্গামারী থানা পুলিশের একটি দল অনলাইন জুয়ার এজেন্ট ভবানী রায় কে দিনাজপুরের খানসামা থেকে গ্রেফতার ও তার নিকট হতে ২ টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করে।
ভূরুঙ্গামারী থানার ওসি নজরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন -২০১৮ এর ২৪(২)/২৬(২)/৩০(২)/৩৫(২) ধারায় মামলা রুজু পূর্বক বৃহস্পতিবার কুড়িগ্রাম কোর্টে পাঠানো হয়েছে। মামলা নং ০৫ তাং ০৮/৩/২৩।
পুলিশ সুপার কুড়িগ্রাম আল আসাদ মোঃ মাহফুজুল ইসলাম জানান, চক্রটি উত্তর বঙ্গসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় অনলাইনে জুয়ার সফটওয়্যার বিক্রি ও মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল।
এ সময় কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা,ইলেকট্রনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্তিত ছিলেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন