কেমন ছিলো বঙ্গবন্ধুর একাত্তরের জন্মদিন

আজ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৫ তম জন্মদিন এবং জাতীয় শিশু দিবস। পঞ্চান্ন বছরের জীবনে প্রায় ১৩ বছরই এই মানুষটি ছিলেন জেলে। এই ১৩ বছরে অন্তত ৮ বার তার জন্মদিন কাটে বন্দীশালায়।

কেমন ছিলো একাত্তরের ১৭ই মার্চে বঙ্গবন্ধুর বায়ান্নতম জন্মদিনটি?

অসহযোগ আন্দোলনের ১৬তম দিন ছিলো সেদিন। বঙ্গবন্ধু সকাল ১০টায় প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সাথে দ্বিতীয় দফা বৈঠকে করে ফেরেন ৩২ নম্বরের বাসায়। বিদেশি সাংবাদিকরা তার কাছে জানতে চান ৫২ তম জন্মদিনে বঙ্গবন্ধুর সবচেয়ে বড় কামনা কী?

জাতির পিতার জবাব ছিলো, ‘জনগণের সার্বিক মুক্তি।’

১৯২০ সালে ১৭ মার্চ ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার পাটগাতি ইউনিয়নের টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্ম নেন শেখ মুজিবুর রহমান। শেখ লুৎফর রহমান এবং সায়েরা খাতুনের কোল আলো করে তৃতীয় সন্তানের আবির্ভাব ঘটে। জন্মের পর নানা শেখ আবদুল মজিদ তার নাম রাখেন শেখ মুজিব।

বাবা-মায়ের খোকা, ভাইবোনদের মিয়াভাই রাজনৈতিক জীবনে বন্ধু, নেতা, কর্মীদের কাছে পরিচিতি পান মুজিব ভাই হিসেবে। একসময় হয়ে ওঠেন বাঙালি জাতির জনক, বঙ্গবন্ধু।

বায়ান্নতম জন্মদিনের দিন একাত্তরে এই দিনটি ছিলো বঙ্গবন্ধু ঘোষিত বাংলার অহিংস অসহযোগ আন্দোলনের ১৬তম দিন। সকাল ১০টায় তিনি প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সাথে দ্বিতীয় দফা বৈঠকে যোগ দেন। ঘন্টাব্যাপী আলোচনা শেষে সেদিন বাসভবনে পৌঁছানোর পর দেশি-বিদেশি সাংবাদিকদের অনুরোধে বঙ্গবন্ধু তাদের সঙ্গে ঘরোয়া আলোচনায় মিলিত হন। ৫২তম জন্মদিনে তাঁর কামনা কি, এক বিদেশী সাংবাদিকের এই প্রশ্নের জবাবে বঙ্গবন্ধু বলেন জনগণের সার্বিক মুক্তি। বলেছিলেন তিনি জন্মদিন পালন করেন না বা কেকও কাটেন না।

সেদিন ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সমাজের সর্বস্তরের মানুষ মিছিল করে বঙ্গবন্ধুর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে গিয়ে তাদের প্রাণপ্রিয় নেতাকে শুভেচ্ছা জানায়। তাদেরও বলেছিলেন এদিন তিনি শুধু শিশুদের সাথে সময় কাটাতেই ভালোবাসেন।

এদিন ১০ দিন ধরে কয়েকশ ছবি ও পোস্টার এঁকে চিত্রশিল্পীরা ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে শহীদ মিনার থেকে বিপ্লবী চিত্রের বিশাল এক অভিনব মিছিল বের করে স্বাধীনতার দাবি জানান। বায়তুল মোকারম মসজিদে আছর নামাজের পর বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘায়ু কামনা করে মোনাজাত হয়।