কোটা সংস্কার আন্দোলনে এসে চোখ হারাচ্ছেন ঢাবি ছাত্র

চাকরিতের কোটা সংস্কারের দাবিতে শাহবাগে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় ঘটেছে। সংঘর্ষে চোখ ‘হারাতে বসেছেন’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক শিক্ষার্থী। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, সংঘর্ষ চলাকালে রাত ৯টার দিকে পুলিশের ছোঁড়া রাবার বুলেট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের শিক্ষার্থী আবু বকর সিদ্দিকের চোখে লাগে। সিদ্দিক বাংলা বিভাগের তৃতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত।

তবে রাবার বুলেট নাকি টিয়ারশেলের আঘাতে সিদ্দিক আহত হয়েছেন সে বিষয়ে তাৎক্ষণিক পুলিশের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ঢাবি প্রতিনিধি জানান, তাৎক্ষণিকভাবে সিদ্দিককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢাকা) হাসপাতালে নিয়ে যান সহপাঠীরা।

ঢামেক প্রতিনিধি জানান, বাম চোখে আঘাতপ্রাপ্ত সিদ্দিককে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া ডান চোখের উপরে আঘাত নিয়ে রফিক আর শরীরে আঘাতপ্রাপ্ত আকরাম নামে আরো দুই ঢাবি শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।

ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই বাচ্চু মিয়া জানান, আহতদের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

এর আগে রোববার রাত পৌনে ৮টার দিকে পুলিশ আন্দোলনকারীদের ওপর চড়াও হয়। এসময় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে এক সাংবাদিক ও তিন পুলিশসহ বেশ কয়েকজন আহত হন।

রাত সাড়ে ৯টায় প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে থেমে থেমে সংঘর্ষ চলছিল। পুলিশ মুহুর্মুহু টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ এবং জলকামান ব্যবহার করে তাদের সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে। অন্যদিকে সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে পুলিশকে জবাব দিচ্ছেন আন্দোলনকারী।

চাকরিতে কোটা সংস্কার দাবিতে রোববার দুপুরের পর থেকে পূর্বঘোষিত গণপদযাত্রা কর্মসূচিতে উত্তাল ছিল রাজধানী ঢাকাসহ গোটা দেশ। রাত গড়ালেও রাজধানীর ব্যস্ততম মোড় শাহবাগ অবরোধ করে রাখেন আন্দোলনকারীরা।

দাবি পূরণে সুনির্দিষ্ট আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত অবরোধ অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন তারা। এরই একপর্যায়ে অ্যাকশনে যায় পুলিশ।

উল্লেখ্য, কোটা সংস্কারে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবিগুলো হলো- কোটা সংস্কার করে ৫৬ থেকে ১০ শতাংশে কমিয়ে আনা, কোটা প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্যপদগুলোতে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া, চাকরি নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার না করা, কোটায় কোনো ধরনের বিশেষ নিয়োগ পরীক্ষা না নেয়া এবং চাকরি ক্ষেত্রে সবার জন্য অভিন্ন কাট মার্ক ও বয়সসীমা নির্ধারণ করা।