খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় কৃষকের কাটা ধান নিয়ে গেল প্রতিপক্ষ পরিবার
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার দীঘিনালা উপজেলায় মেরুং ইউনিয়নের গংঙ্গারটেক এলাকায় আলমগীর নামে এক কৃষকের জমিতে কেটে রাখা ধান নিয়ে গেছে প্রতিপক্ষ পরিবার।
গত বুধবার (২৬ এপ্রিল) সকাল ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার(২৭শে এপ্রিল) এ ঘটনায় দীঘিনালা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে যান ভুক্তভোগী ওই কৃষকের স্ত্রী রাশেদা বেগম(৪৩)।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, “কৃষক আলমগীর হোসেন দীর্ঘদিন ধরে নিজের ভোগদখলে থাকা ১৭৩নং হোল্ডিংভূক্ত জমিতে ফসল আবাদ করে আসছেন। কিন্তু একই এলাকার প্রতিপক্ষ রেনু বেগম(৫৫) স্বামী মো: শহিদুল ইসলাম এলাকার কিছু প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় আলমগীর হোসেনের হোল্ডিং এর জায়গার কিছু অংশ খাস খতিয়ানের দাবী করে নিজ দখলে নিতে দ্বন্ধ সংঘাতে লিপ্ত হয়ে এলাকায় বিশৃক্সখলা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে।
গত কয়েক মাস আগে রেণুগং আলমগীরের টিলা ভূমি থেকে প্রায় ৫লক্ষ টাকার ফলজ ও বনজ গাছ জোরপূর্বক কেটে নিলে তাদের নামে গাছ কাটার মামলা দেয় আলমগীরের স্ত্রী রাশেদা বেগম। পরে আসামীরা নিজেদের দোষ ধামাচাপা দিতে উল্টো বাগানের মালিক আলমগীরসহ তার প্রায় শতবর্ষী শশুর ও দূর-দূরান্তে অবস্থানরত আত্মীয়- স্বজনদের হয়রানি করতে তাদের ১০/১২জনের নামেও চাঁদাবাজির মিথ্যা মামলা দায়ের করেন রেনু বেগম।
পরে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের মধ্যস্থতায় শালিসি বৈঠকে এলাাকায় শান্তি-শৃক্সখলা বজায় রাখার উদ্দেশ্যে সাময়িকভাবে সীমানা নির্ধারণ করে দেয়া হয়। কিন্তু গত বুধবার কৃষক আলমগীর নিজের জমিতে ধান কেটে রেখে তার লোকজন নাস্তা করতে গেলে এই সুযোগে রেনুগং ১০/১২জন লোকবল ও লাঠিসোটা নিয়ে জোর পূর্বক কর্তনকৃত ধান নিয়ে চলে যায় ও বিভিন্ন হুমকি-ধুমকি দিতে থাকে।
অভিযুক্তরা হলেন, একই এলাকার মো: শহিদুল(৬০), মো: রবিউল(৩৫), মো: রাজিব(২২), রেনু বেগম(৫৫), মো: রাজু(২০), জাহেদা বেগম(৩০), রাবেয়া(১৫)।
এব্যাপারে ভুক্তভোগী ক্ষতিগ্রস্থ রাশেদা বেগম বলেন, অনেক কষ্ট করে ধানের চারা জমিতে রোপণ করেছি। এখন ধান কেটে ঘরে আনতে গিয়ে দেখি রেনুগং সব ধান নিয়ে চলে যাচ্ছে। রেনুগং আমাদের ক্রয়কৃত হোল্ডিং এর জায়গা খাস খতিয়ানের দাবী করে দখলের অপচেষ্টা চালালেও তাদের দাবীর স্বপক্ষে কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। এলাকার কিছু প্রভাবশালীচক্র তাকে নানাভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছে’’।
মূলতঃ আমাদের জায়গার আশেপাশে কোনো সরকারি খাস খতিয়ানের জায়গা না থাকলেও জোরপূর্বক আমাদের জায়গা খাস বলে দখলের পাঁয়তারা চালাতো রেনু বেগম, এখন তারা আবারও জোরপূর্বক লোকজন নিয়ে আমার জমির ধান কাটার পরিকল্পনা করেছে। আমার জমির কিছু অংশ আপাতত ছেড়ে দিয়ে হেলাল মেম্বারসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবগের শালিসী সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছিলাম।
তারা ফিতা দিয়ে উভয় পক্ষর জায়গা পরিচিহ্নিত করে দেন। আমি আমার অংশে ধান রোপন করেছি এবং ধান কেটে রেখে নাস্তা করতে আসলে রেণুগং সব ধান নিয়ে চলে যায়।
তিনি আরো জানান, ‘‘আমাদের লোকবল ও লাঠির জোর না থাকায় তাদের সাথে দ্বন্ধে লিপ্ত না হয়ে আইনের আশ্রয় নিতে গেলে এ ব্যাপারে গত বৃহস্পতিবার(২৭শে এপ্রিল) দীঘিনালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেই। কিন্তু থানা পুলিশ অজ্ঞাত কারণে অভিযোগটি গ্রহণ করেননি’’।
এলাকাবাসী ও স্থানীয় ইউপি সদস্য হেলাল উদ্দিন বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ তাদের মধ্যে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। আমরা অনেকবার চেষ্টা করেছি সমাধানের জন্য কিন্তু কেউ কাউকে ছাড় দিতে চায় না।
রেণু বেগমের ছেলে রবিউল বলেন, বিরোধীয় জায়গা খাস খতিয়ানের অন্তভূর্ক্ত। আমাদের ধান রাশেদা বেগম কেটে নিয়ে যাচ্ছিল তাই আমরা আমাদের ধান নিয়ে এসেছি’’।
রেণু বেগম বলেন, উক্ত বিরোধীয় ১একর ধান্য জমি খাস খতিয়ানের জমি। আমি দখল স্বত্তে সরোয়ারের বাবা মকবুলের কাছ থেকে ক্রয় করি ১৯৯৪সালে। এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা যে সীমানা নির্ধারন করে দিয়েছিল তা আমি মানি না। কারন আমি রায় পেয়েছি। তাই সব জায়গাই আমার। এলাকার লোকজন কেন আমার জমি ভাগ করবে ?
এ ব্যাপারে দিঘীনালা থানার ওসি মোহাম্মদ আলী বলেন, আমি ছুটিতে আছি। তবে অভিযোগকারী থানায় আসলে অভিযোগ নেওয়া হবে এবং বিহিত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন