খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় ইউপিডিএফ সদস্য শহীদ জীবন ত্রিপুরার শ্রাদ্ধানুষ্ঠান ও স্মরণসভা অনুষ্ঠিত
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার দীঘিনালা উপজেলায় ইউপিডিএফ সদস্য শহীদ জীবন ত্রিপুরা-এর শ্রাদ্ধানুষ্ঠান ও স্মরণসভা যথাযোগ্য মর্যাদায় অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার(১৮ই জুলাই ২০২২) সকাল ৯টায় থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত বাবুছড়া জারুলছড়ি এলাকায় খ্রিস্টীয় ধর্মীয় রীতি নীতি অনুযায়ী শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ সময় খ্রিস্টীয় পাস্টারের প্রতিনিধি নিখিল দেওয়ান, লিটন চাকমা, সুমেন চাকমা উপস্থিত ছিলেন।
ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে সকাল সাড়ে ১০টায় ‘শহীদের রক্ত বৃথা যায় না’ শ্লোগানে এবং ‘ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত বন্ধ করুন, আত্মহননের পথ থেকে বেরিয়ে আসুন’ এই আহব্বানে ইউপিডিএফ দীঘিনালা ইউনিটের উদ্যোগে শহীদ জীবন ত্রিপুরা-এর স্মরণে এক স্মরণসভার আয়োজন করা হয়।
স্মরণসভা শুরুতে শহীদ জীবন ত্রিপুরা’র প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
ইউপিডিএফ’র সংগঠক সজীব চাকমার সঞ্চালনায় স্মরণসভায় বক্তব্য রাখেন, ইউপিডিএফের দীঘিনালা ইউনিটের সমন্বয়ক প্রাণেশ চাকমা, পিসিপি’র দীঘিনালা উপজেলা সভাপতি অনন্ত চাকমা, বাবুছড়া ইউনিয়নের সাবেক ইউপির সদস্য টন্টু মনি চাকমা, এলাকার সমাজসেবক বিজয় কান্তি চাকমা। এছাড়া মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন ইউপিডিএফ সংগঠক অতুল চাকমা।
প্রানেশ চাকমা বলেন, শহীদ জীবন ত্রিপুরা পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নিজের জীবন বিসর্জন দিয়েছেন, তিনিই অমর। যুগ যুগ ধরে পার্বত্য চট্টগ্রামের ইতিহাস তাকে স্মরণ করবে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান শাসকগোষ্ঠী পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়িদের ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনকে দমন করার জন্য একদিকে সন্তু লারমার পিসিজেএসএস-কে দিয়ে সংঘাত জারি রেখেছে। অন্যদিকে অন্যায়ভাবে ইউপিডিএফ নেতাকর্মী-সমর্থকদের গ্রেফতার, হয়রানি, খুন, গুম সহ অবর্ণনীয় দমন-পীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি বেদখল, নারী নির্যাতন এখন নিত্যদিনের ঘটনায় পরিণত হয়েছে।
তিনি সংঘাত বন্ধ করে জাতীয় অস্তিত্ব রক্ষার্থে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলতে এগিয়ে আসার জন্য পিসিজেএসএস-এর প্রতি আহ্বান জানান।
অনন্ত চাকমা বলেন, ইউপিডিএফ প্রতিষ্ঠার পর পরই পূর্ণস্বায়ত্তশাসন লড়াইয়ে ৩৩৪জনের অধিক নেতাকর্মী নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন। সে সকল শহীদদের রক্ত বৃথা যাবে না। শহীদ জীবন ত্রিপুরার রক্ত কখনো বৃথা যাবে না।
তিনি আরো বলেন, ক্ষমতাসীন সরকার পাহাড়ে দমন-পীড়ন জারি রেখেছে। সেনা মদদপুষ্ট সন্ত্রাসী লেলিয়ে দিয়ে ইউপিডিএফ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের হত্যা করা হচ্ছে। তিনি অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সকল ছাত্র-যুব-নারী সমাজকে পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের পতাকাতলে সমবেত হওয়ার আহবান জানান।
টন্টুমনি চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে ভ্রাতৃঘাতী সংঘাত অচিরেই বন্ধ করা জরুরি। সংঘাত দিয়ে জাতির ভাগ্য পরিবর্তন করা যাবে না। তিনি পিসিজেএসএস, ইউপিডিএফসহ বিবাদমান সকল দলকে সংঘাত পরিহারের আহবান জানান।
বিজয় কান্তি চাকমা বলেন, আমরা পার্বত্য চট্টগ্রামে ভাইয়ে ভাইয়ে হানাহানি দেখতে চাই না। জাতীয় অস্তিত্ব রক্ষার্থে আমাদের সকল আঞ্চলিক সংগঠন ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
স্মরণসভা থেকে অবিলম্বে জীবন ত্রিপুরা হত্যাকারীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন