খালেদা জিয়াকে নিয়ে শেখানো কথা বলেছিল নাঈম?

৫ বছরের ছোট্ট শিশু নাঈম রাতারাতি সেলিব্রেটি বনে গেছে। বনানীর এফআর টাওয়ারে আগুন নেভানোর কাজে ব্যবহৃত ফায়ার সার্ভিসের একটি পাইপের ছিদ্র অংশ পলিথিন পেঁচিয়ে দুই হাতে চেপে ধরে আলোচনায় আসে নাঈম। তার ওই মুহূর্তের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে প্রশংসায় ভাসতে থাকে সে। মুহূর্তের মধ্যেই বিশ্বব্যাপী ছবিটি ভাইরাল হয়ে যায়।

শিশুটির বুদ্ধিমত্তা ও মানবিক বোধে মুগ্ধ হয়ে তার সাহায্যে এগিয়ে আসে অনেকে। অগ্নিকাণ্ডে তার অসাধারণ ভূমিকার কারণে যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশি ওমর ফারুক সামি তাকে পাঁচ হাজার ডলার পুরস্কার দেয়ার ঘোষণা দেন। পাশাপাশি তার পড়াশোনার দায়িত্বও নিতে চান।

বিষয়টি আলোচনায় আসার পর টিভি উপস্থাপক ও অভিনেতা শাহরিয়ার নাজিম জয় নাঈমের একান্ত সাক্ষাৎকার নেন। এ সময় নাঈমের সঙ্গে তার বাবা-মা সঙ্গে ছিলেন। উপস্থাপক জয় নাঈমের কাছে জানতে চান-সে পুরস্কারের সেই টাকাগুলো নেবে কি-না? আর নিলেও সেই টাকা কিসে খরচ করবে?

জবাবে নাঈম জানায়, সেই টাকাগুলো সে এতিমখানার অনাথ শিশুদের জন্য দান করে দিতে চায়। ছেলের এ জবাবে সায় দেন তার মা-বাবাও।

জয় পাল্টা প্রশ্ন করেন সে এতিমখানায় কেন টাকা দিতে চায়। জবাবে নাঈম জানায়, কয়েক বছর আগে খালেদা জিয়া এতিমের টাকা লুট করে খেয়েছে। তাই এই টাকা সে এতিমদের দিতে চায়।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাক্ষাৎকারটি ছড়িয়ে পড়লে তুমুল সমালোচনা শুরু হয়। শিশু নাঈমকে জয়ের এ ধরনের প্রশ্ন করাটাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মন্তব্য করতে থাকে নেটিজেনরা। এ বিষয়ে নেটিজেনদের ভাষ্য, ‘শিশু নাঈম নিজ থেকে এসব কথা বলেনি। উপস্থাপক জয় তাকে কথাগুলো শিখিয়ে দিয়েছেন। সাক্ষাৎকারে শিশুটির কথা বলার ধরনেই তা প্রকাশ পেয়েছে।

এরই মধ্যে ফেসবুকে ভাসতে থাকে নাঈমকে সাহায্য দানের প্রতিশ্রুতি দেয়া সেই যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসীও তার কথা ফিরিয়ে নিয়েছেন। তিনি পাঁচ হাজার ডলার নাঈমকে দেবেন না। নাঈম রাজনীতির শিকার জানিয়ে ওমর ফারুক সামি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

সর্বশেষ শিশু নাঈমের আরেকটি সাক্ষাৎকারের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, প্রশ্নকর্তা নাঈমের কাছে জানতে চাচ্ছেন-‘তোমার মা কষ্ট করে সংসার চালাচ্ছেন, তোমার পড়াশোনার খরচ বহন করছেন, তোমার নিজেরই টাকা দরকার, তাহলে তুমি কেন সে টাকা নিজে না রেখে এতিমদের দিয়ে দিতে চাও? এটা কী তোমার মনের কথা?’

জবাবে নাঈম অকপটে বলছে, ‘না, এটা বলতে তারা শিখিয়ে দিয়েছিল।’

এরপর প্রশ্নকর্তা বলেন, ‘যিনি তোমাকে টাকা দিতে চেয়েছিলেন তিনি এখন বলেছেন আর টাকা দেবেন না। তুমি কী টাকাটা চাও?’

নাঈমের জবাব, ‘আমি ওই কথা না বুঝে বলেছি, আমি টাকা চাই, আমার পড়াশোনার জন্য টাকা চাই।’

একই প্রশ্ন করা হয় নাঈমের মাকে। তিনি বলেন, ‘নাঈম ছোট মানুষ, তাই না বুঝে এসব বলেছে। আমি গরিব মানুষ, টাকাটা আমারই দরকার। সে টাকা অন্যদের দিয়ে দিলে আমার নাঈমকে আমি কীভাবে মানুষ করব!’