খালেদা জিয়া করোনায় আক্রান্ত : স্বাস্থ্য অধিদফতর ।। জানে না পরিবার ও দল

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার করোনা শনাক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।

১১ এপ্রিল প্রকাশিত রিপোর্টে খালেদা জিয়ার করোনা পরীক্ষার রেজাল্ট ‘পজিটিভ’ আসে বলে জানানো হয়।

করোনা পরীক্ষার ওই প্রতিবেদনে দেখা যায়, আইসিডিডিআর,বি ল্যাবরেটরিতে ১০ তারিখ তার করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা জমা হয়। এরপর আরটি পিসিআর পদ্ধতিতে করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হয়।

যদিও শনিবার বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, দলটির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দিয়েছেন এমন খবর সঠিক নয়।

রিপোর্টে থাকা একটি নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি নিজেকে সবুজ বলে পরিচয় দেন। তিনি খালেদা জিয়ার চিকিৎসক ডা. মামুন ও ডা. অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেনের সঙ্গে যোাগযোগ করার পরামর্শ দেন। খালেদা জিয়ার করোনা টেস্ট পজিটিভ এসেছে, এমন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটা তো আমি জানি না, জাহিদ স্যার ভালো জানবেন।’

পরে ডা. জাহিদকে ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।

খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. মামুন রোববার দুপুরেও নমুনা দেয়ার খবর নাকচ করে দিয়েছেন।

ডা. মামুন রহমান জানান, তাদের কাছে এ ধরনের কোনো তথ্য নেই।

তিনি বলেন, ‘আমি গতকালও তার নিয়মিত চেকআপের জন্য গিয়েছিলাম। সেখানে শুধুমাত্র তার ডায়বেটিসের নমুনা নেয়া হয়েছে। করোনার জন্য কিছু নেয়া হয়নি। তবে সকাল থেকে আমার কাছে এ বিষয়ে জানতে সবাই ফোন দিচ্ছে।’

বিএনপির প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির বলেন, ‘আসলে এটা তো দলের বিষয় না। উনি যদি করোনায় আক্রান্ত হন, তাহলে সেটি তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক বলতে পারবেন। আমরা দলের মহাসচিবকে বিষয়টি জানিয়েছি।’

খালেদা জিয়ার চিকিৎসক ডা. মামুনের বরাত দিয়ে তার প্রেস উইং সদস্য শায়রুল কবির খান আরো বলেন, আমি ডা. মামুনের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি বলেছেন, তারা নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বাসভবন ফিরোজাতে গিয়েছিলেন। করোনা পরীক্ষার জন্য তারা ম্যাডামের নমুনা নেননি।

তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, তিন দিন আগেই খালেদা জিয়ার পরিচর্যায় নিযুক্ত গৃহপরিচারিকা ফাতেমার করোনা শনাক্ত হয়। এরপর শনিবার (১০ এপ্রিল) দুই দফায় খালেদা জিয়ার নমুনা সংগ্রহ করা হয়।

অন্যদিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মাইদুল ইসলাম প্রধান জানিয়েছেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া করোনায় আক্রান্ত, বিষয়টি শতভাগ সঠিক।’

এদিকে, খালেদা জিয়ার করোনা পরীক্ষার রিপোর্টটি এরইমধ্যে হাতে এসে পৌঁছেছে।

এর আগে (১০ এপ্রিল) শনিবার দেশের বেশ কিছু গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়, কয়েক দিন ধরে খালেদা জিয়া জ্বরে ভুগছেন। করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করায় পূর্ব সতর্কতা হিসেবে শনিবার (১০ এপ্রিল) দুপুরে গুলশানের বাসভবন থেকে তার নমুনা নেওয়া হয়। খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের পরামর্শে বেসরকারি ল্যাবএইড হাসপাতালের টেকনোলজিস্ট মো. সবুজ খালেদা জিয়ার করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করেন। এ সময় খালেদা জিয়ার ভাগ্নে ডা. মামুনও উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, খালেদা জিয়া সরকারের নির্বাহী আদেশে জামিনে রয়েছেন। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতির মামলায় তাকে কারাগারে যেতে হয়েছিল। দুই বছরের বেশি সময় কারাগারে থাকার পর গত বছর করোনা মহামারির কারণে পরিবারের আবেদনে তাকে ছয় মাসের জামিনে মুক্তি দেয় সরকার, যা তিন দফায় বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে তিনি বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তার সঙ্গে পরিবারের সদস্য ও ব্যক্তিগত চিকিৎসক বাদে অন্য কেউ দেখা করতে পারেন না।