‘খেলমু খেলমু মাদারেরও সাথে গো’ বলে নেচে-গেয়ে যাচ্ছেন পোশাকশ্রমিক!

আইসেন আইসেন কাদে নিয়া ভাইওরে, আইসেন আইসেন লাল চান বাদশা ভাইওরে, বইসেন সোনা চাক ও-না চালুনে, বইসেন সোনা বাবারও চোমরে, খেলমু খেলমু মাদারেরও সাথে গো” এমনই করে নিজ ঘরে ছয় দিন ধরে নেচে-গেয়ে চলেছেন রিপন মিয়া নামের এক যুবক। গত বুধবার (১৮ মে) থেকে একাধারে নেচে গেয়ে যাচ্ছেন তিনি।

রিপন মিয়া সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার সোনামুখী ইউনিয়নের পাঁচগাছি দক্ষিণ পাড়া গ্রামের ভ্যানচালক হবিবর রহমানের পুত্র। তিনি ঢাকার একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। গত ঈদের ছুটিতে বাড়িতে আসেন তিনি।

জানা গেছে, জ্যৈষ্ঠ মাসে স্থানীয় ভাবে মাদারপীরকে স্মরণ করতে উঠানো হয় মাদার বাশঁ। এই বাঁশে চোমর ও লালসালু পেঁচিয়ে এলাকার বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঢোলের তালে তালে লাঠি খেলা হয়ে থাকে। আর এই কাজটাই করছেন রিপন মিয়া নিজ ঘরে অবস্থান করে। সেখানে তিনি বিভিন্ন ধরনের মাদারি শ্লোক গেয়ে চলেছেন নাচের তালেতালে। তার নাচ গানের এই দৃশ্য দেখতে এলাকার বিভিন্ন মানুষজন এসে ভীর জমাচ্ছেন তার বাড়িতে। রিপনের ফুফু জরি পাগলিও এমন করে নাচগান করতেন।

এমন পরিস্থিতিতে রিপনের স্ত্রী তার দুই শিশু সন্তানকে সাথে নিয়ে চলে গেছেন বাবার বাড়িতে।

এনামুল হক নামের স্থানীয় একজন জানান, “জ্যৈষ্ঠ মাসে মাদার নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঢোলের তালে তালে সপ্তাহ খানেক লাঠি বাড়ি খেলা হয়। এই সময়টিতে কেউ কেউ নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে দিয়ে চুপচাপ বসে থাকে, কেউ বা নাচানাচি করে, কেউ দৌড়ে মাদার যেদিক থেকে আসে সেদিকে চলেও যায়।”

রিপনের প্রতিবেশী সার্ভেয়ার মামুনুর রশিদ জানান, “রিপন এবারই প্রথম নিজ ঘরের মধ্যে নাচানাচি করছেন। তিনি ঢাকায় পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। ছুটিতে এবার বাড়িতে এসেছেন। এই সময়টায় দিনে এক বেলা সামান্য কিছু খাবার খেলেও মাছ, মাংস কিংবা আমিষ জাতীয় কিছু খাচ্ছেন না।”

তিনি আরো জানান, “কেউ যদি মাছ-মাংস খেয়ে ঘরের কাছে যায়, তাহলে রিপন সেটা বুঝতে পেরে তাকে মারতে আসেন।”

রিপনের পিতা হবিবর রহমান জানান, “কয়েকদিন পর এমনিতেই ভালো হয়ে যাবে। আগে আমার বোনের মাদার ধরতো, সে রিপনের মতই নাচানাচি করতো।”