গণপরিবহন খাতের নতুন সেবা ‘র‍্যাপিড পাস’ কী?

গণপরিহন খাতের নতুন সেবা ‘র‌্যাপিড পাস’ উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাইকার সহযোগিতায় প্রায় ৩৯ কোটি টাকা খরচে সব ধরনের গণপরিবহনে নতুন এই সেবা দেয়া হবে। জীবন স্বাচ্ছন্দ করতে দেশজুড়ে এই ডিজিটাল সেবা সম্প্রসারিত হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

র‌্যাপিড পাস-এর ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্যে জানা যায়: গণপরিবহন ব্যবস্থায় সমন্বিত ই-টিকেটিং পদ্ধতিকে র‌্যাপিড পাস বলা হয়। একে আইসি কার্ডও বলা হয়। আইসি কার্ড একটি সমন্বিত সার্কিট ভিত্তিক স্মার্ট কার্ড যা পরিবহন সেক্টরসহ আরও অন্যান্য কিছু ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা যাবে।

এই আইসি কার্ড মূলত প্রি-পেইড সিম কার্ড বা ডেবিট কার্ডের মতো। এই কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে যাত্রীরা টিকেটের জন্য লম্বা সারিতে দাঁড়িয়ে থাকার ঝামেলা থেকে মুক্তি পাবেন। এতে সময় বাঁচার পাশাপাশি ভাড়ার জন্য নগদ টাকা রাখারও দরকার হবে না।

গণপরিবহন ব্যবস্থায় সমন্বিত ই-টিকেটিং পদ্ধতি চালুর লক্ষ্যে ২০১৪ সালে সরকার একটি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়। এই প্রকল্পের আওতায় র‍্যাপিড পাস সেবা চালু করা হয়। এতে আর্থিক সহায়তা দেয় জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)।

র‌্যাপিড পাস ব্যবহারের জন্য যাত্রীদের একটি কার্ড সরবরাহ করা হয়, যাকে আইসি কার্ড বলা হচ্ছে। ইতোমধ্যে রাজধানীর মতিঝিল-আবদুল্লাহপুর রুটের দু’টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত পরিবহনে ‘র‌্যাপিড পাস’ কার্ড চালু হয়েছে। ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) কার্ডটি তৈরি করেছে।

বৃহস্পতিবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণপরিহন খাতের নতুন সেবা ‘র‌্যাপিড পাস’ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ‘র‍্যাপিড পাস’ নামটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে এসেছে।

ব্যবহারের নিয়ম
এই কার্ডের ব্যবহারও সহজ বলে জানায় র‌্যাপিড পাস কর্তৃপক্ষ। ব্যবহারকারী এই কার্ডটি ডিটিসিএ অনুমোদিত পাবলিক ট্রান্সপোর্ট অপারেটরের সেবা যেমন বাস, ট্রেন, ফেরি ইত্যাদিতে ব্যবহার করতে পারবেন।

কার্ডটি ব্যবহারের জন্য বাসে চালকের পাশে একটি যন্ত্র বসানো হয়। কার্ডধারী যাত্রী বাসে ওঠার সময় একবার এবং বাস থেকে নামার সময় একবার যন্ত্রের নির্দিষ্ট স্থানে কার্ডটি স্পর্শ করাবেন। বাস থেকে নামার সময় যন্ত্রে কার্ড স্পর্শ করানোর পর যন্ত্র থেকে রসিদ বের হবে। এতে ভাড়া ও কার্ডের ব্যালেন্স উল্লেখ করা থাকবে।

রিচার্জ করবেন যেভাবে
ব্যালান্স শেষ হলে সহজেই যাত্রী নির্বাচিত ডাচ বাংলা ব্যাংক শাখা বা টিকিট শপ থেকে র‍্যাপিড পাস কার্ড ইস্যু বা রিচার্জ করতে পারবেন। আবার ব্যবহারের সময় কার্ডে পর্যাপ্ত টাকা না থাকলেও একবার কার্ডটি ব্যবহার করা যাবে। এক্ষেত্রে পরবর্তী রিচার্জ থেকে টাকা স্বয়ংক্রিয়ভাবে সমন্বয় করা হবে।

কার্ডের প্রাথমিক মূল্য ৪০০ টাকা। এর মধ্যে ২০০ টাকা রিচার্জ হিসেবে কার্ডে জমা থাকবে। ব্যবহারকারীরা একবার সর্বোচ্চ ১ হাজার টাকা ও সর্বনিম্ন ১০০ টাকা রিচার্জ করতে পারবেন।

র‌্যাপিড পাস নিবন্ধন
র‌্যাপিড পাস কার্ডের জন্য নিবন্ধন করতে হবে। এজন্য সর্বনিম্ন তথ্য (নাম এবং মোবাইল নাম্বার) দরকার হবে। কার্ড হারিয়ে গেলে বা ক্ষতিগ্রস্ত হলে নিবন্ধন ছাড়া ব্যবহারকারী কোন কিছু দাবি করতে পারবে না।

এই নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে কমপক্ষে দুই কার্যদিবস সময় লাগবে। নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার আগে কিছু দাবি করা যাবে না। র‌্যাপিড পাস সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য http://rapidpass.com.bd ওয়েবসাইটে জানা যাবে।